নিজস্ব সংবাদদাতা, দুর্গাপুর,৫ ই আগস্ট : ড্রাগ কারবারিদের টাকা মেটাতে না পেরে আত্মঘাতী ১৭ বছরের কিশোর । তাকে দাহ করার সময় শ্মশানে তিন ড্রাগ কারবারি উপস্থিত হয় ৷ তাঁদের ধরে গণপিটুনি দেয় মৃতের পরিবারের লোকেরা ৷ পরে তাঁদের কোকওভেন থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় । ওই তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ । দুর্গাপুর থানার বেনাচিতি বিদ্যাসাগর পল্লির বাসিন্দা সুরেশ প্রসাদ সিংয়ের দুই ছেলে । ছোটো ছেলে রাহুল কুমার সিং দুর্গাপুরের পলাশডিহার একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ের ক্লাস টেনে পড়ত । গতরাতে রাহুল নিজের ঘরে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে ।
রাহুলের বাবা সুরেশ প্রসাদ সিং বলেন, “বেশ কিছুদিন ধরেই আমার ছোটো ছেলে মানসিক ভাবে চাপে ছিল । রাহুল ওর মায়ের কাছে বার বার সাড়ে তিন হাজার টাকা চাইছিল । কিন্তু কী কারণে এই টাকা দরকার তা বলেনি । আজ মৃত্যুর পরে তার মোবাইলে হোয়াটসআ্যপ এবং SMS দেখে জানলাম সোনু কানিয়া রাহুলকে টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিল । রাহুলের মোবাইল কভারে ব্রাউন সুগার পাই ৷ তখনই সব পরিষ্কার হয়ে যায় ৷
এরা আর্থিক সংগতি আছে এমন পরিবারের ছোটো ছোটো ছেলেদের সাথে বন্ধুত্ব করে তাদের প্রথমে ড্রাগের নেশা ধরিয়ে দেয় ৷ ওরা জানে একবার নেশাগ্রস্ত করে দিতে পারলে এরা সব বিক্রি করেও ড্রাগ কিনবে । আমার ছেলের দুই বন্ধুও এভাবে ড্রাগের নেশা করে মারা গেছে। আজকে সোনু কানিয়া আর দু’জন বীরভানপুর শ্মশানে এসেছিল ৷ আমরা ওদের ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি । “দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ উঠছে দুর্গাপুরের রহিমপথের একটি ক্লাব এবং সেকেন্ডারি রোডে কিছু যুবক ড্রাগ চোরাচালান করছে ৷ প্রশাসনের কাছে সাধারণ মানুষ বারবার জানালেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ ৷
রাহুলের দাদা অভিষেক কুমার সিং আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “তিনজন ড্রাগ কারবারি ধরা পড়েছে, এবার ড্রাগ মাফিয়ারা আমাদের হুমকি দেবে ৷ কিন্তু আমরা সুবিচার চাই । রাহুলের মতো অনেক ছেলেরা এই ড্রাগ কারবারিদের সফট টার্গেট । একবার ড্রাগের নেশা ধরাতে পারলেই কেল্লাফতে । শুধু কেনা নয়, ড্রাগ চক্রে নতুনদের আনতে পারলে মোটা অঙ্কের টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেওয়া হয় ৷ যেকারণে অনেক কিশোর এই মারণ নেশার ফাঁদে জড়িয়ে পড়ছে ৷ প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া ৷