আচমকা হাইভোল্টেজ তড়িৎ প্রবাহের জেড়ে নেমে এলো কয়েকশো পরিবারের ওপর ঘোর বিপত্তি। শুক্রবারই ঘটনাস্থল সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে আসছে বিদ্যুৎ দপ্তরের উচ্চ আধিকারিকদের পর্যবেক্ষক দল। বোমা ফাঁটার মতো ভয়ংকর শব্দ!এরপরই বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে শয়ে শয়ে বাড়ির ফ্যান, টিভি, এসি মেশিন, ফ্রিজ থেকে বেড়িয়ে আসতে লাগে আগুনের ফুলকি। বৃহস্পতিবার দুপুর একটা নাগাদ শিলিগুড়ি শহরের অদূরে ফুলবাড়ি এক ও দুই বিধানসভা বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ছিটকে পড়তে লাগে বিদ্যুতের তার।
বীভৎস পরিস্থিতিতে ঘর ছেড়ে খোলা মাঠে আশ্রয় নেয় কয়েকশো পরিবার। ৫০০মিটার এলাকা জুড়ে আচমকা অধিক মাত্রায় হাই ভোল্টেজে তড়িৎপ্রবাহের জেরে ঘটে বিপত্তি।এই এলাকা দিয়ে একাধিক হাইটেনশন লাইন গিয়েছে।জামুড়িভিটা, দেওয়ানিবস্তি, পাঁচকেলগুড়িতে হাইটেনশন তারের সঙ্গে সংযোগে আচমকা অত্যধিক মাত্রায় হাই ভোল্টেজ তড়িৎপ্রবাহের সৃষ্টি হয়। আগুনের ফুলকি বেরোতে লাগে। শর্ট সার্কিটের জেরে বিস্তীর্ণ এলাকার জুড়ে ২০০-র বেশি বাড়ির বৈদ্যুতিক সংযোগের মিটার যন্ত্র থেকে টিভি, ফ্রিজ,মোবাইল ফোন, এসি যন্ত্র মূল্যবান সামগ্রী জ্বলে গিয়ে আগুনের ফুলকি বেরিয়ে আসে।বেশ কয়েকটি মোবাইল ফোনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সম মিলিয়ে এলাকা জুড়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান প্রায় কয়েক কোটি টাকা। স্থানীয় বাসিন্দা সুজাতা সাহা জানান খেতে বসেছিলাম বারান্দায় হঠাৎ দুটি আগুনের দলা এসে পড়ে। দেখতে পাই কলা গাছে আগুন জ্বলছে। ঘরে ঢুকতেই দেখি বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ও মিটার বক্সে আগুন জ্বলছে। অন্যদিকে সম্পা দাস জানান বাড়িতে পাঁচ বছরের ছেলেকে নিয়ে বসেছিলাম। দুপুর একটা নাগাদ হঠাৎ ফ্রিজ, টিভি, এসি মেশিন থেকে আগুনের ফুলকি বেরোতে লাগে। আগুনের ফুলকি দিয়ে খুলে পড়ে লাইট, ফ্যান। তড়িঘড়ি বাড়ির বাইরে ছুটে যাই। সিপাই পাড়ার রামকৃষ্ণ সাহা বিছানায় শুয়ে ছিলেন তার বিছানার ওপরই খুলে পড়ে ফ্যান।
আগুনের ফুলকি ছিটকে এসে হালকা চোট লেগেছে আট বছর বয়সী এক নাবালক ও এক মহিলার। ৫০০মিটার এলাকা জুড়ে বিধ্বংসী পরিস্থিতি জেরে সম্পূর্ণরূপে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। যদিও স্বস্তির বিষয় ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর নেই। ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পাওয়ারগ্রিডের কন্ট্রোল অফিসার শিবু মারান্ডি ও বিদ্যুৎ দপ্তরের এস এফ রোড ফায়ার স্টেশন ম্যানেজার সুরেশ লামা সহ অন্যান্য কর্মীরা। ঘটনাস্থলে পৌছায় নিউ জলপাইগুড়ি থানার পুলিশ।
আর ও পড়ুন রামগঙ্গা নদী বাঁধ তৈরিতে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ
বিদ্যুৎ দপ্তরের এস এফ রোড ফায়ার স্টেশন ম্যানেজার সুরেশ লামা বলেন বিস্তৃন এলাকা জুড়ে প্রায় ২০০-২৫০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ২২০কিলো ভোল্ট তারে আচমকা হাইভোল্টেজ উৎপন্ন হওয়ায় বিভ্রাট হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট করা হয়েছে।বিদ্যুৎ দপ্তরের তরফে কলকাতার থেকে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তকারী একটি দল বৃহস্পতিবার ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করবে। ঠিক কি কারনে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে এই ঘটনা ঘটলো তা সরেজমিনে খতিয়ে রিপোর্ট তৈরি করবেন তারা।
এদিকে এলাকার ট্রান্সফর্মার বদল করে যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক করা যায় সে বিষয়টিতে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এলাকাবাসীদের বাড়ি বাড়ি পর্যবেক্ষণ করে ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট তৈরী করছি। বিস্তারিত রিপোর্ট প্রস্তুতের পরই ক্ষতিপূরণের বিষয়ে বলা সম্ভব হবে। পাওয়ার গ্রিডের রিজিওনাল ম্যানেজার বিদীপ বর্মন বলেন ঘটনায় হাইটেনশনে সমস্যা হয়েছে কিছু। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।