রাজ্য – রাজ্যে তফসিলি জাতি (এসসি) শংসাপত্র প্রদানের নিয়ম শিথিল করার প্রস্তাব বিবেচনা করছে সরকার। সোমবার নবান্নে রাজ্য তফসিলি জাতি উন্নয়ন পর্ষদের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রস্তাবে সম্মতি জানান। তবে সতর্ক করে দেন, যাতে কোনও অযোগ্য ব্যক্তি তালিকায় ঢুকতে না পারে, সেদিকে কঠোর নজর রাখতে হবে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তফসিলি জাতিভুক্ত মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদ ও প্রশাসনিক আধিকারিকরা। আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব পায় ‘যোগ্যশ্রী’ প্রকল্প, যাতে যোগ্য সমস্ত ছাত্রছাত্রী সুবিধা পান। এছাড়া মতুয়া ও নমঃশূদ্র সম্প্রদায়ের উন্নয়ন কর্মসূচি দ্রুত সক্রিয় করার দাবি তোলেন সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, বাগদাতে নির্মিত ড. বি.আর. আম্বেদকরের নামে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলটি এখনও চালু হয়নি। একইসঙ্গে মালদহে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসকারী মতুয়া সম্প্রদায়ের উদ্বাস্তু পরিবারগুলিকে পাট্টা দেওয়ার দাবি তোলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বিষয়গুলি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, তফসিলি জাতির কল্যাণে ২০১০-১১ সালে অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের বাজেট যেখানে ছিল ১৬০ কোটি টাকা, ২০২৫-২৬ সালে তা বেড়ে হয়েছে ১,৭৬১ কোটি টাকা। গত ১৪ বছরে রাজ্যে দেওয়া হয়েছে ৯৯ লক্ষ ৯১ হাজারেরও বেশি এসসি শংসাপত্র। মোট জাতিগত শংসাপত্রের সংখ্যা ১ কোটি ৬৭ লক্ষের বেশি।
শংসাপত্র প্রদানের সময়সীমাও ৮ সপ্তাহ থেকে কমিয়ে আনা হয়েছে ৪ সপ্তাহে। শিক্ষা ও কল্যাণমূলক প্রকল্পে বিপুল অগ্রগতি হয়েছে। ‘শিক্ষাশ্রী’ প্রকল্পে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির এসসি/এসটি ছাত্রছাত্রীদের বছরে ৮০০ টাকা স্কলারশিপ দেওয়া হচ্ছে, যার সংখ্যা ইতিমধ্যেই ১ কোটি ৫ লক্ষ ছাড়িয়েছে (মূল্য ৮১৪ কোটি টাকা)। এছাড়া প্রি-ম্যাট্রিক ও পোস্ট-ম্যাট্রিক স্কলারশিপ বাবদ ৮৭ লক্ষ ৩৩ হাজার ছাত্রছাত্রীকে দেওয়া হয়েছে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা।
হস্টেল অবকাঠামোতেও নজর দিয়েছে সরকার। ইতিমধ্যেই ৩৪টি গার্লস হস্টেল, ১২টি বয়েজ হস্টেল, ২৮টি সেন্ট্রাল হস্টেল ও ৯৭টি আশ্রম হস্টেল চালু হয়েছে। মোট ৪ লক্ষ ৬৬ হাজার ছাত্রছাত্রীর জন্য হস্টেল খাতে খরচ হয়েছে প্রায় ৩,৭৮৪ কোটি টাকা।
