কলকাতা – তৃণমূলের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘোষণা করা হয়েছে, দলের অধ্যাপক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষকদের সংগঠনের রাজ্য কমিটি এবং সব জেলা কমিটি আপাতত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। শারোদৎসব শেষ হওয়ার পরে নতুন করে সমস্ত কমিটি গঠন করা হবে। কয়েক সপ্তাহ আগেই অধ্যাপক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণকলি বসু প্রয়াত হন, ফলে নতুন সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা অনিবার্য ছিল। কিন্তু দলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সব স্তরের কমিটি একসাথে ভেঙে দেওয়া হোক।
এছাড়াও, দুই স্তরের শিক্ষক সংগঠনেও একই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহ ধরে তৃণমূল বিভিন্ন জেলার ব্লক স্তরে পার্টি ও গণসংগঠনে ধাপে ধাপে রদবদল করছে। যেসব এলাকায় দলে গোষ্ঠীকোন্দল রয়েছে, সেখানে কেবল একজনকে সভাপতি করার বদলে কোর কমিটি গঠন করা হচ্ছে। তবে অধ্যাপক ও শিক্ষক সংগঠনের ক্ষেত্রে পুরো কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূল এই সিদ্ধান্তের কারণ প্রকাশ করেনি, তবে দলের ভিতরে বিভিন্ন ব্যাখ্যা উঠেছে।
একাংশের বক্তব্য, এতদিন পর্যন্ত শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু দলের ‘শিক্ষা সেল’ দেখতেন। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সংগঠনগুলির ওপর সরাসরি নিয়ন্ত্রণ নিলেন। এর ফলে ছাত্র, যুব ও শ্রমিক সংগঠনের মতো শিক্ষা সেলকেও দলের সর্বোচ্চ স্তর থেকে দেখভাল করা হবে। কেউ কেউ এটিকে ব্রাত্যের সাংগঠনিক ক্ষমতা ‘খর্ব’ করার প্রচেষ্টা হিসেবেও দেখছেন।
অন্য অংশের ধারণা, ওয়েবকুপার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে কোন্দল চলছিল। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া ও আদালতের রায়ের পর শিক্ষক পদে নিয়োগের কারণে সংগঠনে নতুন প্রতিনিধি রাখা জরুরি হয়ে পড়েছে। এই প্রক্রিয়া শেষ হলে একসাথে অধ্যাপক ও শিক্ষক সংগঠনের নতুন কমিটি গঠন করা হবে।
একটি তৃতীয় ব্যাখ্যা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার অভিষেকের সঙ্গে কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকের কথাও বিবেচনা করা হচ্ছে। বৈশাখী অতীতে ওয়েবকুপার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল। ঘটনাচক্রে অভিষেকের সঙ্গে বৈঠকের পরেই তৃণমূল এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে, যা জল্পনাকে আরও উস্কে দিয়েছে।
