তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিতর্কিত মন্তব্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা

তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিতর্কিত মন্তব্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram



কলকাতা – তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র ফের একবার বিতর্কের কেন্দ্রে এসে পড়েছেন। সম্প্রতি সীমান্তে অনুপ্রবেশ ইস্যুতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে আক্রমণ করে তাঁর বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। গত শুক্রবার নদিয়ার কৃষ্ণনগরে এক সভায় মহুয়া বলেন, ভারতের সীমান্ত সুরক্ষার দায়িত্ব কেন্দ্রের, বিশেষ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। অথচ প্রতিদিন বাংলাদেশ থেকে হাজারে হাজারে অনুপ্রবেশকারী ঢুকে পড়ছে। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “প্রথমেই অমিত শাহর মাথা কেটে টেবিলে রাখা উচিত।” এই মন্তব্যকে ঘিরেই নতুন বিতর্কের সূত্রপাত হয়।

রবিবার ছত্তীসগড়ের রাজধানী রায়পুরে মহুয়ার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। অভিযোগকারীর নাম গোপাল সামন্তো। অভিযোগে বলা হয়েছে, সাংসদের মন্তব্য গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে হেয় করেছে, ঘৃণা ছড়িয়েছে এবং জাতীয় ঐক্যের জন্য হুমকি তৈরি করেছে। এই এফআইআরের পর থেকে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।

বিতর্ক বাড়তে থাকায় মহুয়া মৈত্র ব্যাখ্যা দেন। তিনি দাবি করেন, আসলে তিনি একটি বাগধারা ব্যবহার করেছিলেন, আক্ষরিক অর্থ বোঝাতে চাননি। তাঁর কথায়, “ইংরেজিতে heads will roll মানে মাথা কেটে ফেলা নয়, বরং দায়িত্ব নেওয়া। বাংলায় যেমন বলা হয় লজ্জায় মাথা কাটা যাওয়া, আমি সেই অর্থেই বলেছি। কিন্তু বোকারা বাগধারা বোঝে না।”

মহুয়ার অভিযোগ, তাঁর বক্তব্যকে ইচ্ছাকৃতভাবে বিকৃত করে প্রচার করা হয়েছে। তিনি বলেন, “গুগল ট্রান্সলেট দিয়ে বাংলার ‘মাথা কাটা’কে ইংরেজি ও হিন্দিতে ভুলভাবে অনুবাদ করে এফআইআরে বিকৃত অর্থ লেখা হয়েছে।” তিনি এ বিষয়ে ক্ষোভও প্রকাশ করেন।

ছত্তীসগড় পুলিশের ভূমিকাও মহুয়ার সমালোচনার কেন্দ্রে রয়েছে। তিনি দাবি করেন, কুন্ডাগাঁও জেলার পুলিশ প্রশাসন অভিবাসী বাঙালি শ্রমিকদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছিল এবং আদালতে না তুলে বেআইনিভাবে আটক রেখেছিল। মহুয়ার ভাষায়, “ছত্তীসগড় হাইকোর্ট নোটিশ জারি করার পর এসপি এফআইআর প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছেন। মুখে চপেটাঘাত খেয়েছে পুলিশ।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মহুয়ার এই মন্তব্যের তাৎপর্য গভীর। কেন্দ্র সরকার বারবার অভিযোগ করে এসেছে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল সরকার বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে। এবার সেই অভিযোগকে পাল্টা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে মহুয়া সরাসরি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।

প্রশ্ন উঠছে, এটি কি নিছক ভাষাগত বিভ্রান্তি, নাকি ইচ্ছাকৃত রাজনৈতিক কৌশল? মহুয়ার বক্তব্য, এফআইআর, পুলিশের ভূমিকা এবং তৃণমূলের পাল্টা প্রতিরোধ — সব মিলিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে নতুন অগ্নিস্ফুলিঙ্গ ছড়িয়েছে।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top