ত্রিপুরা – ত্রিপুরার দক্ষিণ জেলার সীমান্ত শহর সাবরুমে এক ৬৫ বছর বয়সি মহিলাকে রবিবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি পাকিস্তানের নাগরিক এবং নেপালের জেল ভেঙে পালানো এক আন্তর্জাতিক মাদক পাচারচক্রের সদস্য। ঘটনাটি সামনে আসতেই সীমান্ত এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে।
সাবরুম থানার আধিকারিক নিত্যানন্দ সরকার জানান, ধৃত মহিলার নাম লুইস নিঘাত আখতার ভানো। রেল পুলিশের একটি দল প্রথমে তাঁকে সাবরুম স্টেশনে আটক করে এবং পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্থানীয় থানার হাতে তুলে দেয়। আধিকারিকের কথায়, “মহিলা সম্ভবত সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন। আপাতত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে, তাঁর গতিবিধি ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি।”
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই মহিলা নেপালের এক জেল থেকে পালিয়ে এসেছেন এবং তাঁর পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ থাকার আশঙ্কা রয়েছে। এখনও পর্যন্ত তাঁর নাগরিকত্ব নিশ্চিত করা যায়নি। তদন্তে উঠে এসেছে, ভানো পাকিস্তানের শেখুপুরার বাসিন্দা মহম্মদ গোলাফ ফারাজের স্ত্রী। প্রায় ১২ বছর আগে তিনি পাকিস্তানি পাসপোর্ট ব্যবহার করে নেপালে প্রবেশ করেন এবং সেখানে মাদক পাচারের সঙ্গে যুক্ত হন। ২০১৪ সালে নেপাল পুলিশ তাঁকে ১ কিলোগ্রাম ব্রাউন সুগার-সহ গ্রেফতার করে এবং আদালত তাঁকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়। তখন থেকে তিনি কাঠমান্ডু সংশোধনাগারে বন্দি ছিলেন।
গত মাসে নেপালে ব্যাপক রাজনৈতিক অশান্তি ও জেল ভাঙার ঘটনায় হাজার হাজার বন্দি পালিয়ে যায়। সেই সুযোগে তিনিও পালিয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করেন বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। সেপ্টেম্বর মাসে নেপালজুড়ে সহিংস বিক্ষোভে প্রায় ১৩,০০০ বন্দি পালিয়ে যায়, যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে ইতিমধ্যেই ভারত-নেপাল সীমান্তে আটক করা হয়েছে। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলেন এই পাকিস্তানি সন্দেহভাজন মহিলা।
পুলিশ তাঁকে আদালতে পেশ করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতের আবেদন জানাবে। ঘটনাটির পর থেকেই ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের সীমান্তে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। রাজ্য প্রশাসন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
