কলকাতা – দক্ষিণ কলকাতার কুদঘাট এলাকায় ‘এসআইআর আতঙ্কে’ মৃত্যু হল যমুনা মণ্ডল নামে এক বৃদ্ধার। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কয়েকদিন ধরেই তিনি প্রবল আতঙ্কে ভুগছিলেন। অভিযোগ, সেই আতঙ্কই এতটাই চরমে পৌঁছয় যে তিনি গায়ে আগুন দেন। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
মৃতা যমুনা মণ্ডল দক্ষিণ কলকাতার ১১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ঢালাই ব্রিজ, পূর্ব পুঁটিয়ারির নতুনপল্লি উদয়াচল এলাকার দীর্ঘদিনের বাসিন্দা। তাঁর ছেলে মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডলের দাবি, রাজ্যে এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই তাঁর মা অস্বাভাবিক রকম চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। অভিযোগ, বিএলও-রা বাড়ি বাড়ি ফর্ম বিলি করলেও যমুনা দেবী নাকি এখনও পর্যন্ত কোনও ফর্ম পাননি। দিন দিন তাঁর আতঙ্ক বাড়তেই থাকে। পরিবারের দাবি, সেই আতঙ্কই তাঁকে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে।
ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ এসে তদন্ত শুরু করেছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। এলাকাবাসীও বৃদ্ধার এমন মৃত্যুকে ‘অমানবিক পরিস্থিতির ফল’ বলে দাবি করছেন।
উল্লেখ্য, এসআইআর আতঙ্কে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় একের পর এক মৃত্যুর অভিযোগ উঠছে। উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটি, দত্তপুকুর, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, নদিয়া—বহু জেলায় একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার দক্ষিণ দমদমেও একই অভিযোগে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। পরিবার জানাচ্ছে, তাঁর ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম ছিল না, প্রয়োজনীয় নথিও হাতে ছিল না। সেই কারণেই দীর্ঘদিন ধরে আতঙ্কে ভুগছিলেন তিনি। অতঃপর রবিবার গভীর রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান এবং সোমবার সকালে গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁর দেহ উদ্ধার হয়।
এই ধারাবাহিক মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্যজুড়ে উদ্বেগ ও ক্ষোভ বাড়ছে, প্রশ্ন উঠছে এসআইআর প্রক্রিয়া নিয়ে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ও মানসিক সুরক্ষা কতটা নিশ্চিত হচ্ছে।




















