আমাদের দলনেত্রীর কাছে উন্নয়নের ক্ষেত্রে না বলে কিছু হয় না, বললেন ফিরহাদ । লক্ষী ভান্ডার যার কাছে আছে সেই তো “মা লক্ষী”। যা বিগত দিনের সরকার করতে পারে নি, তা করে দেখিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । আমাদের দলনেত্রীর কাছে উন্নয়নের ক্ষেত্রে না বলে কিছু হয় না । সবটাই বাস্তবায়িত করে দেখিয়েছেন উনি ।
তাই মানুষ এই বাংলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে চাইছেন। বুধবার রাতে পুরাতন মালদা পুরসভার মঙ্গলবাড়ী এলাকায় জনসভা বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথা বলেন রাজ্যের পরিবহন দপ্তরের মন্ত্রী তথা মালদার তৃণমূলের পর্যবেক্ষক ফিরহাদ হাকিম ।
এদিন রাত আটটা নাগাদ পুরাতন মালদা পুরসভার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সংলগ্ন মঙ্গলবাড়ী এলাকায় পুরো নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের এই জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে কলকাতার মেয়র তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শ্রম দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী মন্ত্রী গোলাম রাব্বানী। ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক রহিম বক্সী , আরেক বিধায়ক নিহার ঘোষ সহ সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রার্থীরা।
মঙ্গলবাড়ী এলাকায় তৃণমূলের এই নির্বাচনী জনসভায় দলীয় কর্মী সমর্থকদের পাশাপাশি মহিলাদের উপস্থিতি ছিল সব থেকে বেশি । আর সেই মহিলাদের দেখে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম । জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, শিলিগুড়ি কর্পোরেশনের ভোট মানুষ দেখেছে। গত বিধানসভা নির্বাচনে যারা বিজেপিকে ভোট দিয়ে জয় করেছিলেন।
সেই সাধারণ মানুষ সবটাই বুঝতে পেরেছে। ওদের দ্বারা উন্নয়ন কিছু হবে না। উন্নয়নের কান্ডারী মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি। যেটা মানুষ বুঝতে পেরেছে। তাই এবার শিলিগুড়িতে সর্বত্রই কর্পোরেশনের নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে বিরোধীদের। ঠিক একইভাবে রাজ্যের অন্যান্য পুর এলাকায় এভাবেই বিরোধীদের অবসান হবে । রাজ্যের মা ও বোনেরা লক্ষী ভান্ডার প্রকল্পের সুযোগ পাচ্ছেন। কন্যাশ্রী প্রকল্প হয়েছে, যুবশ্রী প্রকল্প হয়েছে।
সবুজসাথী থেকে সমব্যথী প্রকল্প সবটাই করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ঘরে ঘরে সাধারণ মানুষের জন্য সরকারি প্রকল্পের নানান সুবিধার সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন দলনেত্রী । এটাতো সকলেই বুঝতে পেরেছেন । তাই এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ছাড়া বিকল্প কোন কথা ভাবে না এই বাংলার মানুষ। আসন্ন পুরো নির্বাচনে বিরোধীদের ক্ষমতাচ্যুত করবে বাংলার মানুষ।
এদিনের জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম আরো বলেন, গত বিধানসভা নির্বাচনে দুর্ভাগ্যের বিষয় একটাই যে কিছু মানুষ আশীর্বাদ করেছিলেন। আর কিছু মানুষ আশীর্বাদ করেন নি । যার ফলে পুরাতন মালদা বিধানসভা কেন্দ্র টি তৃণমূল পাই নি । তাতে কোনো আক্ষেপ নেই। কিন্তু তা বলে উন্নয়ন থেমে থাকবে না। গত বিধানসভা নির্বাচনে বাইরে সাদা দাড়িয়ালা একটা মানুষ এসে দলনেত্রী বিরুদ্ধে অনেক কথা বলেছিলেন।
কিন্তু বাংলার মানুষ বুঝতে পেরেছে, উন্নয়ন যদি করতে পারে সেটাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। গত বিধানসভা নির্বাচনে বহিরাগত কিছু বিজেপি নেতারা এসে বলেছিলেন দিল্লি বাংলাকে দখল নিবে। সেই সময় না বুঝে কিছু মানুষ এদেরকে ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয় নি । সেটা আর হয় নি। সেই স্বপ্ন কোনদিন পূরণ হবে না ।
এদিনের জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, গত লোকসভা নির্বাচনে সামান্য ভোটে কোচবিহারে জিতেছিল নিশিথ প্রামাণিক । আমাদের দলীয় প্রার্থীকে তিনি পরাজিত করেছিলেন ঠিকই। পরবর্তীতে বিধানসভা নির্বাচনে আবারও তিনি সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে প্রার্থী হন।
আর ও পড়ুন এবার মুখ্যমন্ত্রীকে রাজভবনে তলব করলেন রাজ্যপাল
কিন্তু রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে কোচবিহারে তৃণমূল প্রার্থী ইতিহাস তৈরি করছেন। সেই বিজেপি প্রার্থীকে প্রায় দেড় লক্ষ ভোটে পরাজিত করেছে। এতেই বোঝা যাচ্ছে বাংলার মানুষ মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে চাই । যারা বাংলাকে ভাগ করতে চাই, তাদের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে এরাজ্যের মানুষ।
মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, পুরাতন মালদায় এখনো উন্নয়নের ক্ষেত্রে কি কি বাকি রয়েছে, এটা যদি দিদি তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি জানতে পারেন তাহলে আমাকে বলবেন তুই এখনো কেন এসব কাজ সম্পন্ন করিস নি। তাই আবারও বলি যদি এরাজ্যের উন্নয়নের একমাত্র কান্ডারী কেউ থেকে থাকে সেটাই আমাদের দল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তাই আবারও বলি তৃণমূলের বিকল্প কোনো দল নেই।
আগামীতে দিল্লি দখলের ডাক দিয়ে বিজেপিকে বাংলা থেকে উৎখাত করার বার্তা দিয়েছেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। এদিন রাতে পুরো নির্বাচনেরকে কেন্দ্র করে নির্বাচনী জনসভা শেষ করে রাতের ট্রেন ধরে কলকাতায় ফিরে যান মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।