দলমার দামালদের শায়েস্তা করতে জঙ্গল মহলের উদ্দেশে শম্ভু ও মীনাক্ষী। দলমার দামালদের শায়েস্তা করতে জঙ্গল মহলের উদ্দেশে পারি দিল জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের বনদপ্তরের দুই দক্ষ কুনকি হাতি শম্ভু ও মীনাক্ষী। কয়েক মাস ধরেই ঝাড়গ্রাম এবং পশ্চিম মেদিনীপুর এলাকায় দিনে রাতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দলমার একপাল দামাল হাতি। যদিও কুনকি হাতির অভাবে ওই দামাল হাতিদের বাগে আনা তো দূরের কথা, তাদের মোকাবিলা করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে সেখানকার বনকর্মীদের। বনদপ্তরের পর্যবেক্ষণ সহজলভ্য খাবারের খোঁজ পেয়ে ওই হাতির দল জঙ্গল মহলের দুই জেলার স্থায়ী আবাসিক হয়ে উঠেছে।
ফলে তারা স্বাভাবিক রীতি মেনে আর কিছুতেই ঝারখন্ডের দিকে ফিরতে চাইছে না। যার ফলে প্রায় দৈনিক বিঘের পর বিঘে ফসল সাবাড় করে নিজেদের পেট ভরাচ্ছে ওই বুনো হাতির দল। সঙ্গে বাড়িঘর ভাঙা ও মানুষের জীবনহানির ঘটনাও ঘটছে। ফলে দুই জেলায় হাতি-মানুষের সংঘাত শুরু হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।লোকবল দিয়ে ওই হাতিদের মোকাবিলা করতে না পেরে, শেষ পর্যন্ত ওই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে উদ্যোগী হয়েছে বনদপ্তর।
উত্তরবঙ্গের দুই দক্ষ কুনকি হাতিকে সেখানে নিয়ে গিয়ে রেসিডেন্সিয়াল হয়ে ওঠা ওই হাতিদের তাড়িয়ে দেওয়ার ছক কষা হয়েছে বনদপ্তরের তরফে, কারন ইতিপূর্বেও বেশ কয়েকবার শম্ভু ও মীনাক্ষী সাফল্যের সঙ্গে দক্ষিনবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলাসহ বাঁকুড়ায় সাফল্যের সঙ্গে দলমার দামালদের মোকাবিলা করে এসেছে। স্বাভাবিক কারনেই জঙ্গলমহলের ওই গজাতঙ্ক থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিষ্কৃতি দিতে মুশকিলআসান হিসেবে ফের মীনাক্ষী আর শম্ভুর উপরেই ভরসা করেছে বনদপ্তর। সোমবার কাকভোরে পেল্লায় দুই লরিতে চেপে দুই মাহুত ও পাতাওয়ালাদের নিয়ে ঝাড়গ্রামের উদ্দেশে পারি দিয়েছে শম্ভু ও মীনাক্ষী।
আরও পড়ুন – দেওয়াল কেটে ব্যাঙ্কে চুরি, এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য, উঠছে একাধিক প্রশ্ন
সমগ্র ঝাড়গ্রাম এবং পশ্চিম মেদীনিপুরের গরবেতা, গুরগুরিপাল, শালবনি ও গোয়ালতোর এলাকার মানুষ দলমার হাতিদের হানাদারিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। এছাড়াও ঝাড়গ্রাম শহর জুড়ে দিনেরাতে ঘুরে বেড়াচ্ছে রামলাল নামের এক দলছুট হাতি। সে সাধারণত মানুষকে আক্রমণের পথে না গেলেও, হালে এক ব্যক্তি তাকে ইচ্ছাকৃত ভাবে উত্যক্ত করায়, মেজাজ হারিয়ে আপাত শান্ত স্বভাবের রামলাল ওই অতি উৎসুককে পিষে মেরেছে।
তেমন আরও দুর্ঘটনা যে ঘটবে না, তার দায়িত্ব কেউই নিতে পারছেন না। এই পরিস্থিতিতে রামলালসহ অন্যান্য আবাসিক হাতিদের শবক শেখাতেই শম্ভু ও মীনাক্ষীকে জঙ্গল মহলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে বনদপ্তর। উত্তরবঙ্গের বন্যপ্রাণ শাখার মুখ্য বনপাল রাজেন্দ্র জাখর বলেন, ‘জঙ্গলমহলে হাতিদের সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা শম্ভু ও মীনাক্ষীকে পাঠিয়েছি।কাজ শেষ হয়ে গেলেই তারা ফের জলদাপাড়ায় ফিরে আসবে।’