পূর্ব মেদিনীপুর – দিঘা বা মন্দারমণিতে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন? অনলাইনেই হোটেল বুকিং করে নিচ্ছেন? সাবধান! কারণ, সেই বুকিংয়ের ফাঁদেই পড়ছেন অসংখ্য পর্যটক। তাড়াহুড়ো করে বুকিং করার চেষ্টাই এখন হয়ে উঠছে প্রতারণার নতুন দিকচিহ্ন। পুলিশ সূত্রে খবর, দিঘা-শঙ্করপুর, মন্দারমণি, এমনকি তাজপুর পর্যন্ত এক চক্র সক্রিয়ভাবে হোটেল বুকিংয়ের নামে পর্যটকদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। টাকা নেওয়ার পর মিলছে না কোনও রুম, আর প্রতারকদের হদিসও মিলছে না।
হাওড়ার বাসিন্দা সহেলি চট্টোপাধ্যায়ের ঘটনাটিই যেন তার স্পষ্ট উদাহরণ। তিনি ওল্ড দিঘার এক হোটেলে ১৭ থেকে ২০ মে পর্যন্ত থাকার জন্য বুকিং করেছিলেন এবং ১ মে অগ্রিম হিসেবে ১,৫০০ টাকা পাঠান। কিন্তু পরদিন হোটেলে যোগাযোগ করলে তাঁকে জানানো হয়, এমন কোনও বুকিংয়ের রেকর্ডই নেই। বাধ্য হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সহেলি। এমন অভিজ্ঞতা এখন বহু পর্যটকেরই, যারা নকল ওয়েবসাইটে বিশ্বাস করে প্রতারিত হচ্ছেন।
দিঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী জানান, “এটা এখন সার্বিক ভাবে বড়সড় চক্রে পরিণত হয়েছে। শুধু দিঘা নয়, দার্জিলিং ও পুরীতেও একই ধরনের প্রতারণা চলছে। এই চক্র নামী হোটেলের একেবারে নকল ওয়েবসাইট বানিয়ে ফেলছে। পর্যটকরা বুঝতেই পারছেন না আসল-নকলের ফারাক।”
তিনি আরও জানান, “আমরা ইতিমধ্যেই পর্যটকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করার কাজ শুরু করেছি। সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করছি, যাতে কেউ অপরিচিত সাইট বা অচেনা নম্বরে টাকা না পাঠান। অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা রেজিস্টার্ড ট্র্যাভেল পোর্টালের মাধ্যমেই বুকিং করার পরামর্শ দিচ্ছি।”
এদিন কাঁথি মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দিবাকর দাস বলেন, “এমন বেশ কয়েকটি অভিযোগ আমরা পেয়েছি। ইতিমধ্যেই হোটেল মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। সাধারণ পর্যটকদের সতর্ক করার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। যারা অভিযোগ জানিয়েছেন, তাঁদের মামলার তদন্ত চলছে।”
দিঘা-শঙ্করপুরের জনপ্রিয়তা যত বাড়ছে, প্রতারণার জালও তত ছড়াচ্ছে। সাইবার অপরাধীদের এই চক্র পর্যটন মরসুমে আরও সক্রিয় হয়। ফলে পুলিশের পরামর্শ—বুকিং করার আগে ওয়েবসাইটের ডোমেইন, যোগাযোগ নম্বর ও পেমেন্ট পোর্টাল ভালোভাবে যাচাই করুন। নচেৎ, ছুটির আনন্দ মিশে যেতে পারে প্রতারণার তিক্ত অভিজ্ঞতায়।




















