দিল্লীর বার্তায় চাপে বঙ্গ বিজেপি! সম্প্রতি দিল্লী থেকে বঙ্গ বিজেপির দিকে ধেয়ে এসেছে অমোঘ নির্দেশ। বিজেপির অন্দরে চলা দলীয় কোন্দল ও বিদ্রোহ বন্ধ করতে কেন্দ্রের তরফে নির্দেশ জারি হয়েছে,” দলের কর্মসমিতির বৈঠকে পুরনো নেতাদের ডাকতে হবে। প্রয়োজনে কর্মসমিতির সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে দলের আদিদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।”আর এহেন বার্তার পরেই মুখ ভার সুকান্ত—অমিতাভদের বলে সূত্রের খবরে জানা গিয়েছে।এই বার্তার পর এক প্রকার চাপেই পড়ে গিয়েছে বঙ্গ বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবির।
কিন্তু দিল্লির শীর্ষনেতৃত্বের নির্দেশ মানতেও বাধ্য তারা।তাই জুন মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া রাজ্য কর্মসমিতির বৈঠকে দলের পুরনো নেতাদের অনেককেই আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে সূত্রের খবরে জানা গিয়েছে।এছাড়াও,দলের প্রাক্তন রাজ্য সহ—সভাপতি সাময়িকভাবে বরখাস্ত হওয়া রীতেশ তিওয়ারিকেও দলে ফেরানো হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। সেক্ষেত্রে সাসপেনশন তুলে নেওয়া হবে রীতেশের বলেও জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত,
রাজ্য পদাধিকারী থেকে বাদ পড়ার পর বর্তমান রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন রীতেশ ও জয়প্রকাশ মজুমদার। জয়প্রকাশ বর্তমানে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তবে দু’জন নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও দলের বিরুদ্ধে যাননি রীতেশ। কাজেই দলের একনিষ্ঠ তথা পুরনো এই নেতাকে রাজ্য কর্মসমিতিতে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে বলেই খবর। আর এ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ কার্যত রীতেশের পাশে দাঁড়িয়ে দিলীপবাবু বলেছেন, ‘এই ধরনের পুরনো কর্মীদের দলে ফেরানো উচিত।’
আর ও পড়ুন কালো মেঘে ঢাকা উত্তরবঙ্গের আকাশ
এ ক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে,সুকান্ত মজুমদার রাজ্য সভাপতি হওয়ার পরই তাঁকে সামনে দাঁড় করিয়েই দলের রাজ্য থেকে জেলা পদাধিকারীতে সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী ব্যাপক পরিবর্তন আনেন।বেশীরভাগ পুরনো নেতাদের বাদ দেওয়া হয়।এ কারণেই দলে শুরু হয় ক্ষোভ—বিক্ষোভ।পর পর আসে ইস্তফা। রাজ্য নেতৃত্ব অনভিজ্ঞ বলে প্রকাশ্যেই সরব হন দলের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর, কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা, সাংসদ সৌমিত্র খাঁ।
এছাড়াও, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও বর্তমান সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এর মধ্যেই ৫ ও ৬ই মে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাংলায় আসেন। ৬ তারিখ দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে সাংগঠনিক বৈঠক করেন শাহ এবং তার সাথে ছিলেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষ। রাতে সেই কোর গ্রুপের বৈঠকে বিদ্রোহ ঠেকাতে সকলকে নিয়ে চলার বার্তা দেওয়া হয় সুকান্ত—শুভেন্দু—অমিতাভদের।
এরপরই দলীয় সূত্রের খবর অনুযায়ী, দিল্লি থেকে রাজ্য শাখার কাছে বার্তা আসে যে , “আগামী কর্মসমিতির বৈঠকে পুরনো নেতাদের আমন্ত্রণ জানাতে হবে। ২০২৩ সালে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে দলকে সংগঠিত করাই লক্ষ্য। “কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আরো জানিয়েছেন,” প্রয়োজনে একাধিক জনকে কর্মসমিতিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।” আর সেই মতো দলের একাধিক বিক্ষুব্ধ নেতার সঙ্গে যোগাযোগের দায়িত্ব পদাধিকারীদের কয়েকজনকে দেওয়া হয়েছে। সকলকেই দল কাজে লাগাতে চায়, বলা হচ্ছে। তবে কর্মসমিতির বৈঠকে ডাক পাওয়ার পর বিক্ষুব্ধ শিবির তাতে আদৌ কতটা সাড়া দেবে
সে প্রশ্নের জবাব একমাত্র সময় দিতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।