দীর্ঘ পাঁচ বছরের অপেক্ষার পর আবারও রাজ্যে সম্পন্ন হলো টেট পরীক্ষা। রবিবার হাওড়ায় নির্বিঘ্নেই সম্পন্ন হয়েছে প্রাথমিকের টেট পরীক্ষা। দীর্ঘ পাঁচ বছরের অপেক্ষার পর আবারও রাজ্যে সম্পন্ন হলো টেট পরীক্ষা। এদিন পরীক্ষা দিয়ে আশাবাদী সব পরীক্ষার্থীই। এবার পরীক্ষা ভালো হয়েছে বলেই পরীক্ষার্থীদের দাবি। তাদের বক্তব্য, পরীক্ষাকেন্দ্রে যথেষ্ট নজরদারি ছিল। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ছিল। এখন তাদের আশা পঞ্চায়েত ভোটের আগে ফলপ্রকাশ এবং এরপর নিয়োগ প্রক্রিয়া হোক। হাওড়ায় টেট পরীক্ষার্থী রুনা কর্মকার জানান, বাংলা পরীক্ষা ভাল দিয়েছি। তবে এখনই ফল কেমন হবে বলতে পারব না। টাইম আরও বেশি হলে ভাল হত। সময় কম ছিল।
আরেক পরীক্ষার্থী জানান, পরীক্ষা ভালই হয়েছে। তবে পূর্ববর্তী টেট পরীক্ষার্থীদের চাকরি হবে কিনা তা বলতে পারব না। আরেক টেট পরীক্ষার্থী শেখ ফরহাজউদ্দিন জানান, সিলেবাস অনুযায়ী পরীক্ষা ভাল এসেছে। বাংলা ভাল এসেছিল। তবে ইংরাজীর প্রশ্ন আমার কঠিন লেগেছে। মনে হচ্ছে পাশ হয়ে যাবে। আন্দোলনরত টেট পরীক্ষার্থীদের যত দ্রুত সম্ভব নিয়োগ করবে এই আশাই করছি। আমাদের পরীক্ষার ফল যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফল বেরিয়ে নিয়োগ করা হবে ততই আমাদের উপকার হবে। কি হবে তা এখনও জানা নেই। শেখ সামিরুল রহমান জানান, পরীক্ষা ভালই হয়েছে। তবে কি হবে এখনই তা বলা সম্ভব নয়।
পরীক্ষার ফলের প্রতীক্ষায় রয়েছি। ৫ বছর পর পরীক্ষা হলো। কবে ফল বেরবে তা বলতে পারছি না। আশা করছি পঞ্চায়েত ভোটের আগে ফল ঘোষণা হবে। প্রসঙ্গত, এদিন সকাল থেকেই ট্রেনপথে, বাসে বা অন্যান্য যানবাহনে পরীক্ষাকেন্দ্রে এসে হাজির হন টেট পরীক্ষার্থীরা। পরীক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, ট্রেনে আসতেও কোনও সমস্যা হয়নি। রাস্তায় যানজটের ভোগান্তি হয়নি। প্রশাসনের তরফ থেকে সব ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। পরীক্ষার্থীদের সুবিধার্থে অতিরিক্ত সরকারি বাস চালানোর কথা আগেই জানানো হয়েছিল। হাওড়ায় পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল ৩৮টি। মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ১৯,৫৬২ জন। এরমধ্যে পুরুষ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৬,৫২০ জন।
মহিলা পরীক্ষার্থী ১৩,০৪২ জন। পরীক্ষা যাতে সুষ্ঠভাবে হয় তারজন্য পর্ষদ সহ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে দু’জন অফিসার পদমর্যাদার পুলিশ ও আরও ছয়জন পুলিশ কর্মী ছিলেন। এছাড়া দুটি কিংবা তিনটি পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বে ছিলেন একজন করে ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার পুলিশ। এছাড়াও নিজের জোনের পরীক্ষা কেন্দ্র মনিটরিং করেন ডিএসপি কিংবা এসিপিরা। কন্ট্রোল রুমে অতিরিক্ত অফিসার উপস্থিত ছিলেন। প্রশ্নপত্র পৌঁছে দেওয়া ও নিয়ে আসার জন্য প্রতিটি কেন্দ্রের জন্য ছিলেন সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী।
প্রতিটি ভেন্যু সেন্টারে বসানো হয়েছিল সিসিটিভি। সুষ্ঠুভাবে এই পরীক্ষা যাতে সম্পন্ন হয় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ তার সর্বতোভাবে প্রচেষ্টা চালায়। নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রেই। পরীক্ষায় ভুয়ো পরীক্ষার্থী বা জালিয়াতি রুখতে বিশেষ নজরদারি চালানো হয়। প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে নিজের পরিচয়পত্র, অ্যাডমিট কার্ড ও কালো বলপেন ছাড়া অন্য কোনও কিছু নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে তাদের পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা করার পর পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করেন পরীক্ষার্থীরা।