রাজ্য – দুর্গাপুজোর আনন্দে কি ভাটা ফেলবে বৃষ্টি? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে পুজো উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মনে। সকাল হলেই আকাশের মুখ ভার, জমাট বাঁধা কালো মেঘে ঢেকে যাচ্ছে শহর। কখনও দিনের শুরুই হচ্ছে প্রবল বৃষ্টির সঙ্গে। ফলে বৃষ্টির এই অনিশ্চয়তা যেন বঙ্গবাসীর দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে। অথচ হাতে রয়েছে আর মাত্র কয়েকটা দিন। বাঙালি অপেক্ষা করছে ঝলমলে রোদ আর তুলোর মতো সাদা শরতের মেঘ দেখার জন্য। তবে বারবার নিম্নচাপের কারণে আশঙ্কা বাড়ছে—দুর্গাপুজোর দিনগুলো কি ভেসে যাবে ভারী বৃষ্টিতে?
হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস বলছে, সেপ্টেম্বরে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। জানা গেছে, সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে দক্ষিণবঙ্গ, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, বিহার, উত্তরবঙ্গ ও সিকিমে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে। এর ফলে পুজোর সময় বৃষ্টির আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, সাধারণত অক্টোবরের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত রাজ্যে সক্রিয় থাকে মৌসুমি বায়ু, এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। ফলে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি চলতে পারে দুর্গাপুজোর সময় পর্যন্তও। তবে ষষ্ঠী থেকে দশমীর মধ্যে বৃষ্টি হবে কি না, সে বিষয়ে এখনই নিশ্চিত কিছু বলা সম্ভব নয়।
এদিকে, বুধবার সারা দিন ধরে কলকাতা ও আশপাশের জেলাগুলিতে বৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবারও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় প্রতিটি জেলায়। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি সহ বিভিন্ন জেলায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে বলে সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস। শুক্রবারও আবহাওয়ার বিশেষ উন্নতির সম্ভাবনা নেই। তবে শনিবার ও রবিবার দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি কিছুটা কমতে পারে। তবুও স্বস্তি খুব একটা মিলবে না, কারণ সোমবার থেকে ফের বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই।
উত্তরবঙ্গে বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টি কিছুটা কমলেও শুক্রবার ও শনিবার তুলনামূলকভাবে আবহাওয়া ভালো থাকবে। কিন্তু রবিবার থেকে ফের বাড়বে বৃষ্টির সম্ভাবনা। বিশেষ করে কালিম্পং, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলায় রবিবার ও সোমবার বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে, বঙ্গোপসাগরে ফের তৈরি হয়েছে নতুন নিম্নচাপ। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত দেড় মাসে এটি ১৩তম নিম্নচাপ। উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে মায়ানমার উপকূল সংলগ্ন এলাকায় গঠিত ঘূর্ণাবর্তটি মঙ্গলবারই নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবেই গত কয়েকদিন ধরে চলছে বৃষ্টি। নিম্নচাপটি ওড়িশার উপর দিয়ে দেশের মূল ভূখণ্ডে প্রবেশ করবে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। পাশাপাশি, একটি মৌসুমী অক্ষরেখা রাজস্থানের বিকানির, চুরু, গুনা হয়ে মধ্যপ্রদেশের জবলপুর থেকে ওড়িশার কেওনঝাড় হয়ে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। এর জেরেই মৎস্যজীবীদের ২ থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গভীর সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
