দুর্গাপুজোয় পদ্ম ফুলের টান পড়ার সম্ভাবনা। মাঝে আর হাতে গোনা কয়েকটা দিন। তারপরেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে আপামর বাঙালি উতসবে মেতে উঠবেন। এই মুহুর্তে পুজোর শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি চলছে। পুজো উদ্যোক্তা, প্রতিমা ও মন্ডপ শিল্পীদের ব্যস্ততার শেষ নেই। ফুরসত নেই ফুল ব্যবসায়ীদের। দেবীর প্রিয় ‘পদ্মফুল’।
রামায়ণের যুগ হোক বা বর্তমান সময়, দেবীর পুজোয় পদ্মফুল চাই-ই চাই। তাই পুজোয় পদ্মফুলের জোগানে ঘাটতি না হয়, তার জন্য বারোয়ারি থেকে বনেদি বাড়ি সকলেই আগে থেকেই ফুল ব্যবসায়ীদের পুজোর দিনগুলি পদ্মফুল সরবরাহের বরাত দেন। এবছর মুর্শিদাবাদ জেলায় বৃষ্টির ঘাটতি থাকায় ৩০-৪০ শতাংশ পুকুরে পদ্ম হয় নি।
স্বাভাবিকভাবেই পুজোয় পদ্মের জোগান দিতে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে ফুল ব্যবসায়ীদের কপালে। পদ্মের জোগান কম থাকলে দামও চড়বে বলে আশঙ্কা করছেন পুজো উদ্যোক্তারা। কয়েক দশক আগে মুর্শিদাবাদ জেলায় সেভাবে পদ্মচাষ হত না। ভিন জেলা এবং হাওড়ার ফুলের মার্কেট ছিল ভরসা। ধীরে ধীরে
এই জেলায় ব্যবসায়িক ভিত্তিতে ব্যাপক হারে পদ্মচাষ শুরু হয়।
আরও পড়ুন – পুজোর আগে সেভাবে জমলো না বাম কর্মচারীদের নবান্ন অভিযান
বেশ কয়েক বছর ধরে নবগ্রাম, সাগরদিঘি, জঙ্গিপুর ও কান্দি মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় পদ্মচাষ হচ্ছে। জেলার পদ্মচাষিরাই জেলার কয়েক হাজার পুজোয় দেবীর প্রিয় ফুলের জোগান দিয়ে থাকেন। কিন্তু এবছর জেলায় ৩৫-৪০ শতাংশ বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে। ফলে পর্যাপ্ত জল না থাকায় পদ্মের ফলনে ঘাটতি রয়েছে। সাগরদিঘির চন্দনবাটি গ্রামের সর্বেশ্বর ফুলমালি প্রায় আড়াই দশক ধরে পুকুর লিজ নিয়ে পদ্মচাষ করছেন। সর্বেশ্বরবাবু এবছর পনেরোটি পুকুর লিজ নিয়েছেন।
পুজোর আগে মুখে হাসি নেই তার। তিনি বলেন, বর্ষা নেই। তাই যে সময়ে পদ্মগাছ বেড়ে ওঠে তখন পুকুরে জল ছিল না। পরে জল হলেও তা কাজে লাগে নি। তাই অধিকাংশ পুকুরেই পদ্মের ফলন অন্য বছরের তুলনায় অনেকটাই কম। কাজেই পুজোয় জোগানে টান পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।