পশ্চিম বর্ধমান – দুর্গাপুরের এক বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে পড়ুয়া ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজ্যজুড়ে। সমাজমাধ্যম থেকে রাজনৈতিক মহল—সব জায়গাতেই ক্ষোভের সুর। এদিকে ঘটনার তদন্তে বড় সাফল্য পেয়েছে পুলিশ। মোবাইল টাওয়ার লোকেশন ট্রেস করে তিনজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট। ধৃতদের নাম-পরিচয় আপাতত প্রকাশ করা হয়নি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় মোট পাঁচজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের ছবি পুলিশের হাতে এসেছে। গ্রেফতার তিনজনকে জেরা করে বাকিদের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। বাকি দুই অভিযুক্ত এখনও পলাতক, তাঁদের খোঁজে চলছে তল্লাশি অভিযান।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে গত সপ্তাহে, যখন নির্যাতিতা এক সহপাঠীর সঙ্গে বাইরে বেরিয়েছিলেন। তদন্তে জানা যায়, তিনজন অভিযুক্ত এসে তাদের ফোন কেড়ে নেয় ও দুর্ব্যবহার করে। কিছুক্ষণ পরে আরও দুইজন এসে কী ঘটেছে তা জানতে চায়। তখন নির্যাতিতা জানান যে তাঁর ফোন কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এরপর সেই দুইজনের মধ্যে একজনের মোবাইল থেকে নির্যাতিতা নিজের নম্বরে ফোন করেন।
এই ফোন কলটিই তদন্তের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। সেই নম্বরের সূত্র ধরে পুলিশ প্রথম সন্দেহভাজনকে আটক করে এবং তাঁর জেরায় বাকিদের পরিচয় পায়। এরপরই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের অনুমান, বাকি দুই অভিযুক্তও খুব শীঘ্রই ধরা পড়বে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলটি গভীর জঙ্গলের মধ্যে—সেখানে পাকা রাস্তা বা সিসিটিভি কিছুই নেই। একটি নির্দিষ্ট জায়গা পর্যন্ত গাড়ি যায়, তার পরে শুধুমাত্র বাইক বা সাইকেলে করে ঢোকা যায়। তাই পুলিশ সাদা পোশাকে জঙ্গলের ভিতরে অভিযান চালাচ্ছে। একইসঙ্গে ড্রোনের সাহায্যে নজরদারি করা হচ্ছে।
এছাড়াও নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট। পুলিশ কমিশনার ব্যক্তিগতভাবে নির্যাতিতার বাবা ও সহপাঠীর সঙ্গে কথা বলেছেন এবং দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার আশ্বাস দিয়েছেন।
