সুকান্ত এবং শুভেন্দুর মধ্যে যাতে দূরত্ব তৈরি না হয়, কড়া নির্দেশ দিলো দিল্লি

সুকান্ত এবং শুভেন্দুর মধ্যে যাতে দূরত্ব তৈরি না হয়, কড়া নির্দেশ দিলো দিল্লি

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram
দূরত্ব

সুকান্ত এবং শুভেন্দুর মধ্যে যাতে দূরত্ব তৈরি না হয়, কড়া নির্দেশ দিলো দিল্লি । একুশের লড়াই শেষ হয়ে গিয়েছে । বাংলার ক্ষমতায় পদ্মবাহিনী আসতে না পারলেও তাঁরাই এখন বঙ্গ রাজনীতিতে চূড়ান্ত প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছেন রাজ্যের বিরোধী দল হয়ে ওঠার কারনে। ২০১৬ সালের নির্বাচনে যে দলটি মাত্র ৩টি আসন পেয়েছিল, তাঁরাই এবার ৭৭টি আসন দখল করে সবাইকে চমকে দিয়েছে । এবার লড়াই ২০২৪ এর। মোদি বাহিনী তাই এখন থেকেই নজর দিতে চাইছে বাংলার বুকে।

 

 

২০১৯ সালে এই বাংলা থেকেই ১৮টি আসন জিতে দেশের সবাইকে চমকে দিয়েছিল পদ্মশিবির। মোদুই বাহিনী এখন চাইছে এই আসনগুলি ২০২৪ সালেও ধরে রাখতে। আর তাঁর জন্য তাঁরা এখন থেকেই কড়া নজর দিতে চাইছে বঙ্গ বিজেপির নেতাদের ওপরে। কেননা তাঁরা চান না নতুন করে দিলীপ-শুভেন্দু পর্বের মতো বঙ্গ বিজেপি কার্যত দুই শিবিরে ভাগ হয়ে যাক। সেই জন্যই তাঁরা নির্দেশ দিয়েছেন দ্রুত যাতে বঙ্গ বিজেপির নতুন সভাপতি শুভেন্দুর সঙ্গে বৈঠকে বসে তাঁদের নিজেদের মধ্যেকার দূরত্ব কমিয়ে নেন।

 

দিলীপ ঘোষ যখন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি পদের দায়িত্ব নেন তখন রাজ্য রাজনীতিতে গেরুয়া শিবিরের সেই অর্থে কোনও দাপটই ছিল না। তাই প্রথম দিকে দিলীপ নিজের মতো করেই বঙ্গ বিজেপিকে চালিয়েছেন। তাঁর আমলেই ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বাংলা থেকে সর্বাধিক ১৮টি আসন পেয়ে রেকর্ড গড়েছে।

 

একই সঙ্গে দিলীপের নেতৃত্বেই একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি বাংলায় লড়াই করে ক্ষমতা দখল করতে না পারলেও ৭৭টি আসন পেয়ে বাংলার বিরোধী দলের আসন দখল করেছে যা এর আগে বঙ্গ বিজেপির কেউই করে দেখাতে পারেননি। সেই হিসাবে বলা যায় দিলীপ ঘোষই বঙ্গ বিজেপির সব থেকে সফলতম সভাপতি ও নেতা।

 

কিন্তু এহেন দিলীপকেই ২০২০ সালের শেষদিক থেকে ক্রমাগত কোনঠাসা হয়ে যেতে হয়েছে দলে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অতিরিক্ত ছড়ি ঘোরানোর পাশাপাশি অনান্য দল থেকে আসা নেতাদের দাপটে দলে কোণঠাসা  হয়ে পড়েন দিলীপ ঘোষ। । সেই অনান্য নেতাদের অন্যতম শুভেন্দু অধিকারী। সেই শুভেন্দুর সঙ্গে যাতে দলের বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কোনও দূরত্ব বা বিরোধ তৈরি না হয় তা দেখতে এখন থেকেই সচেষ্ট বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

 

আর ও পড়ুন   আইকোর মামলায় আজ সিবিআই দফতরে শোভন-বৈশাখী

 

কার্যত একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই বিশেষ করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা হিসাবে শুভেন্দু অধিকারীর উত্থানের পর থেকেই দিলীপ ও শুভেন্দুর মধ্যে দূরত্ব বাড়তে শুরু করেছিল। দলের বেশির ভাগ অনুষ্ঠানেই এই দুই মূর্তিকে একসঙ্গে দেখা যাচ্ছিল না। দিলীপের কর্মসূচিতে যেমন শুভেন্দু থাকতেন না তেমনি শুভেন্দুর কর্মসূচিতে দিলীপ থাকতেন না।

 

সব থেকে বড় বিষয় ছিল দুই শিবিরই নিজেদের মতো করে কর্মসূচি নিত যা দলের বিভাজন বড্ড বেশি প্রকট করে তুলেছিল। দিলীপ সরিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখন চাইছে সুকান্ত মজুমদার যেন তাঁর দেখানো পথে না হাঁটেন। তাই শুভেন্দুকে দলের মূল স্রোতে টেনে আনতে দিল্লি থেকে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সুকান্ত মজুমদারকে নির্দেশ দিয়েছে সুভেন্দুর সঙ্গে বৈঠকে বসতে।

 

যাতে উভয়ের মধ্যে দূরত্ব ও মতবিরোধ কমে। রাজ্য বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে শুক্রবারই তাই শুভেন্দু ও সুকান্ত বৈঠকে বসতে চলেছেন। কিন্তু রাজ্য বিজেপির একটা বড় অংশই মনে করছেন এই বৈঠক কোনও সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। কেননা সমস্যা শুভেন্দুর তরফেই রয়েছে।

 

তিনি নিজেকে দলের উর্ধ্বে বলে মনে করেন ও একক ভাবে সব কিছু করছেন এমনটাই দেখাতে চান, বুঝিয়ে দিতে চান বাংলায় তিনিই বিজেপি, রাজ্যের একমাত্র বিরোধী মুখ। তাঁর এই আচরণ ও মনোভাব সঙ্ঘ নেতৃত্বের না পসন্দ। তাঁরা এখন চাইছেন সুকান্ত মারফর শুভেন্দুকে নিয়ন্ত্রণ করতে। যদিও তা বাস্তবায়িত হওয়া কার্যত অসম্ভব।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top