নগরনিগমের টোল প্লাজায় কর্মীবিক্ষোভ , তৃণমূলের ঘাড়েই দায় চাপালো মালিকপক্ষ

নগরনিগমের টোল প্লাজায় কর্মীবিক্ষোভ , তৃণমূলের ঘাড়েই দায় চাপালো মালিকপক্ষ

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

নিজস্ব সংবাদদাতা,পশ্চিম বর্ধমান ,৯ই সেপ্টেম্বর : দুর্গাপুরের অঙ্গদপুরে হানিম্যান সরনীতে নগরনিগমের দুটি টোল রয়েছে । ২০১৭ সালে টেন্ডার হয়ে এই টোলদুটির দায়িত্ব পায় মা কনস্ট্রাকসন নামের একটি সংস্থা । এই টোল সামলানোর দায়িত্বে রয়েছে মোট ১৬জন কর্মী । তিন শিফটেই চলে কাজ । কর্মীদের অভিযোগ শুরুর থেকে যে মজুরিতে কাজ চলছিল , প্রায় ৩ বছর হতে চলেছে , মজুরি বাড়েনি । শুরুতে ন্যুনতম মজুরি ছিল ২০৬ টাকা , যা বর্তমানে হয়েছে ৩০৭ টাকা । কিন্তু মালিকপক্ষ এখনও পুরনো মজুরিই দিচ্ছে কর্মীদের । এই নিয়ে স্থানীয় তৃণমূল শ্রমিক নেতা অশোক দত্ত সহ জেলার শ্রমিক নেতা প্রভাত চ্যাটার্জীরও দ্বারস্থ হয়েছিল কর্মীরা । মালিক পক্ষকে ডেকে বৈঠকও করেছিলেন এই শ্রমিক নেতারা । কিন্তু কোন সুরাহা না মেলায় আজ টোল গেটে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন কর্মীরা । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছায় কোকোওভেন থানার পুলিশ ।

এক টোলকর্মী প্রসেনজিত পাল জানান যে মজুরি তো বাড়ায়নি উল্টে তাদের কোন ই এস আই বা প্রভিডেন্ট ফান্ডের ব্যাবস্থা করেনি কর্তৃপক্ষ । এমনকি কোম্পানীর তরফে কোন পরিচয়পত্রও দেওয়া হয়নি কর্মীদের ।

কর্তৃপক্ষের তরফে পিন্টু বাগচী অবশ্য এই ঘটনার দায় চাপিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল শ্রমিক নেতৃত্বের ঘাড়েই । তিনি অভিযোগ করেন যে স্থানীয় নেতৃত্ব জোর করে টোলের কর্মীসংখ্যা বাড়িয়েছে । একটি টোল সামলাতে দিনে ৩ শিফটে মোট ৬ জন কর্মী যেখানে যথেষ্ট , সেখানে প্রায় ১৬জন কর্মী জোর করে চাপিয়ে দেওয়ায় মজুরি বাড়াতে অপারগ বলে জানিয়েছেন পিন্টু বাগচী । এর পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ স্থানীয় তৃণমূল শ্রমিক নেতৃত্বের চাপে দিনে গড়ে প্রায় ১৫০টি গাড়ী ছেড়ে দিতে হয় । ফলে বিপুল লোকসানের মুখে পড়েছেন তারা । শুধুমাত্র নগরনিগমের তালিকায় ব্ল্যাক লিস্ট হওয়ার ভয়েই লোকসান করেও তাঁরা টোল চালাচ্ছেন বলে জানালেন পিন্টু বাবু ।

যদিও জোর করে লোক ঢোকানোর কথা পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন স্থানীয় শ্রমিক নেতা অশোক দত্ত । তিনি প্রশ্ন তোলেন যে প্রায় আড়াইবছর টোল চালানোর পর কেন লোকসানের কথা বলছে কর্তৃপক্ষ ? টোলের শুরুতেই তৎকালীন আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি প্রভাত চ্যাটার্জীর সাথে বৈঠক করে এলাকার যুবকদের নিয়োগ করা হয়েছিল বলে জানান অশোকবাবু । গাড়ি ছাড়ের অভিযোগটিও ভিত্তিহীন বলে জানান এই শ্রমিক নেতা । পাশাপাশি তিনি প্রশ্ন তোলেন যে হানিম্যান সরনীর এই ৫ কিমি রাস্তায় ২টি টোলে গাড়ীপিছু প্রায় ৪০০/(চারশো )টাকা দিতে হলে কিভাবে তা সম্ভব ? স্থানীয় অঙ্গদপুর বা হেডকোয়ার্টার কিংবা রাতুড়িয়া গ্রামের গাড়ীকেও এই পরিমান টাকা দিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ অশোকবাবুর ।

আগামীদিনে যদি টোল কর্তৃপক্ষ মজুরি না বাড়ায় তাহলে টোল বন্ধ করে অনশনের হুমকি কর্মীদের । অন্যদিকে মাত্র ৫কিমি রাস্তার মধ্যে দু দুটি টোলের যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে । অন্যদিকে ৩কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা বছর পিছু টেন্ডার ভরেও শুধুমাত্র অতিরিক্ত কর্মী বহনের জন্য অতিরিক্ত ব্যায়ভার বহন করে লোকসানের মুখে পড়া সংস্থাও চাইছে সমস্যার স্থায়ী সমাধান । সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ যদি অবিলম্বে এই সমস্যার সমাধান না করে , তাহলে আগামী দিনে যেমন সরকারী রাজস্বেরও ক্ষতি হবে , তেমনই ১৬ জন কর্মী ও তাদের পরিবারও এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সম্মুখীন হবে ।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top