নদিয়া – গ্রামীণ বাংলার পরিবেশ ও প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে একের পর এক পুকুর ভরাটের ঘটনায়। শুক্রবার সকালে নবদ্বীপ পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীরামপুর রোডের কুটিরপাড়ায় নজরে পড়ে এমনই এক দৃশ্য, যেখানে বহু বছরের পুরনো একটি পুকুরে চলছে অবৈধভাবে মাটি ফেলার কাজ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুকুরটি এক সময় ছিল জলসংগ্রহের কেন্দ্র। বর্ষার অতিরিক্ত জল, মাছ চাষ, এবং স্নান—সবই চলত এই পুকুরে। বর্তমানে সেই পুকুরে মাটি ফেলে ভরাটের চেষ্টা চলছে। যদিও এলাকাবাসীরা মুখ খুলতে চাইছেন না, কারণ আশঙ্কা রয়েছে ক্ষমতাশালী মহলের প্রভাবের।
একাধিকবার ট্রাক্টর ঢোকাতে বাধা দেওয়া হয়, এরপর শ্রমিকরা মাথায় করে পাশের জমি থেকে মাটি এনে পুকুরে ফেলছেন। ইতিমধ্যে পুকুরের দু’দিকের বড় অংশ ভরাট হয়ে গেছে।
পুরসভার কাউন্সিলর নিতাইচন্দ্র দাস বলেন, “পুকুরের মালিক ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। আমি প্রশাসনের সাহায্য চেয়েছি। পুকুর রক্ষা করতেই হবে।” নবদ্বীপ ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। রাজস্ব পরিদর্শক সোমদীপ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, “আমি বারণ করে দিয়েছি। যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কৃষ্ণনগর সদর মহকুমা শাসক শারদ্বতী চৌধুরী জানিয়েছেন, বিএলআরও-র রিপোর্টের ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে বলছেন, “পুকুর কখনও ভরাট করা যায় না—এটাই আমাদের জানা। প্রশাসন যদি পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে পরিবেশ ধ্বংস হবেই।”
পড়ুয়ারা চাইছে পুকুরটি পরিষ্কার করে সংরক্ষিত হোক, যাতে তারা আবার সাঁতার ও মাছ ধরার সুযোগ পায়। এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠছে—পরিবেশ রক্ষায় প্রশাসনের ভূমিকা কতটা সক্রিয়?
