নবম শ্রেণির ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যু, গ্রেফতার স্কুল সম্পাদক জগন্নাথ মাহাতো

নবম শ্রেণির ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যু, গ্রেফতার স্কুল সম্পাদক জগন্নাথ মাহাতো

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram



পুরুলিয়া – পুরুলিয়ার কেন্দায় নবম শ্রেণির এক ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যুকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল এলাকায়। মঙ্গলবার সকালে সেই ঘটনার প্রেক্ষিতেই গ্রেফতার করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি স্কুলের সম্পাদক জগন্নাথ মাহাতোকে। নিহত ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধেই। কেন্দা থানার পুলিশ সকালে তাঁকে গ্রেফতার করে।

ঘটনা ঘটেছিল রবিবার সন্ধ্যায়। পুরুলিয়ার কেন্দার ওই বেসরকারি স্কুলের হোস্টেলের ঘর থেকেই উদ্ধার হয় নবম শ্রেণির ছাত্রের ঝুলন্ত দেহ। মৃত ছাত্রের বাড়ি স্কুল থেকে মাত্র ২০০ মিটার দূরে হলেও পড়াশোনার কারণে সে হোস্টেলেই থাকত। রবিবার সন্ধ্যায় কোচিং ক্লাস শেষে নিজের ঘরে ফিরে যায় সে। কিছুক্ষণ পরেই হোস্টেলের ভেতর থেকে চাঞ্চল্যকর খবর—ছাত্রের মৃতদেহ ঝুলছে ঘরে।

নিহতের পরিবারের অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষ সময়মতো তাঁদের কিছু জানায়নি। অন্য ছাত্রদের কাছ থেকে খবর পান তাঁরা। মৃত ছাত্রের মা বলেন, “ওর বন্ধুদের মুখে শুনলাম, শনিবার স্কুলের এক শিক্ষক ওকে খুব মেরেছিল। সেই কারণেই রবিবার বন্ধুরা ওর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল, তারপরেই এই ঘটনা।”

অন্যদিকে, কিছু ছাত্র সরাসরি অভিযোগ তুলেছে স্কুলের সম্পাদক জগন্নাথ মাহাতোর বিরুদ্ধেও। তাঁদের দাবি, শনিবার তিনিই ওই ছাত্রকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছিলেন। সোমবার সকালে ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। মানবাজার রাজ্য সড়কে স্থানীয়রা ৯ ঘণ্টা ধরে অবস্থান-বিক্ষোভে বসে অভিযুক্তের গ্রেফতারের দাবি তোলেন। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে জগন্নাথ মাহাতো ও তাঁর ভাইকে আটক করা হয়। তবে ভাইয়ের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ না থাকায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়, কিন্তু জগন্নাথ মাহাতোকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

জানা গিয়েছে, জগন্নাথ মাহাতো এলাকার প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা এবং পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সাংগঠনিক কমিটির সদস্য। তিনি ২০০৮ সালে এই স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। শুধু জগন্নাথ নন, অভিযোগের তালিকায় রয়েছেন স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নারায়ণ মাহাতো, সহ-প্রধান শিক্ষক গুণধর মাহাতো এবং শিক্ষক বিদ্যুৎ মাহাতোও।

বিজেপি জেলা সাধারণ সম্পাদিকা ময়না মুর্মু বলেন, “এই রাজ্যে ছাত্রছাত্রীরা আর সুরক্ষিত নয়। পুলিশ ঘটনাকে আত্মহত্যা হিসেবে দেখিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে। আমরা পূর্ণ তদন্ত চাই, নাবালকের মা যেন বিচার পান।” অন্যদিকে স্থানীয় বামনেতাদের অভিযোগ, ওই স্কুলে নিয়মিত মদের আসর বসত। তাঁদের দাবি, “এটা কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, বরং অপরাধের আখড়া। অবিলম্বে এটি বন্ধ করা উচিত।”

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top