হাওড়া – নবান্ন অভিযানের জেরে একের পর এক দিন হাওড়া শহরের জনজীবন স্তব্ধ হয়ে পড়ছে। রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক সংগঠনের এই আন্দোলনের ফলে শহর জুড়ে দেখা দিচ্ছে প্রবল যানজট, থমকে যাচ্ছে অফিসযাত্রী, স্কুলপড়ুয়া এমনকি অ্যাম্বুল্যান্সের যাত্রাও। এই পরিস্থিতিতে এবার মুখ খুললেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। তিনি হাওড়াবাসীর স্বার্থে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা (PIL) দায়ের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সুভাষবাবুর অভিযোগ, ২০১৩ সালে নবান্ন হাওড়ায় স্থানান্তরিত হওয়ার পর থেকেই এই ধরণের অভিযানের চল শুরু হয়েছে। প্রতিবছর বহুবার এই ধরনের আন্দোলন শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলিকে অচল করে দেয়। হাওড়া ব্রিজ, জিটি রোড, ফরশোর রোড, কোনা এক্সপ্রেসওয়ে-সহ শহরের প্রবেশদ্বারগুলিতে ট্রাফিক ব্যারিকেড পড়ে, পুলিশের মোতায়েন বেড়ে যায় এবং শহরের স্বাভাবিক গতিবিধি ব্যাহত হয়।
তাঁর কথায়, ‘হাওড়ায় প্রতিদিন প্রায় ২৫ লক্ষ মানুষ যাতায়াত করেন। শহরের বাসিন্দা প্রায় ১৫ লক্ষ। কিন্তু নবান্ন অভিযানের দিনগুলোতে তারা কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। নাগরিক অধিকার কোথায়?’
সুভাষবাবু ইতিমধ্যেই রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, ডিজি, হাওড়ার জেলা শাসক ও পুলিশ কমিশনারকে স্মারকলিপি দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, এই ধরনের অভিযানের জন্য প্রশাসনকে কোটি কোটি টাকা খরচ করতে হচ্ছে যা আদতে জনগণের করের টাকা। অথচ এই ভোগান্তির দায় বহন করছে না সেই রাজনৈতিক দলগুলো, যারা এই কর্মসূচি দিচ্ছে।
তিনি বলেন, “গণতান্ত্রিক অধিকার থাকলেও, তা অন্যের নাগরিক অধিকার হরণ করে হওয়া উচিত নয়। আমি হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করছি, কারণ এই পরিস্থিতি আর চলতে দেওয়া যায় না।”
সুভাষ দত্ত আরও জানান, হাওড়া শহর এমনিতেই অপরিকল্পিত নগরায়নের চাপে জেরবার। হাওড়া ময়দানে অবৈধ টোটো, হকার দখলদারি, যত্রতত্র পার্কিং, রাস্তার গর্ত ও জল জমার সমস্যা দীর্ঘদিনের। তার ওপর বারবার নবান্ন অভিযানের চাপে নাগরিক জীবনের ভার আরও বেড়েছে।
উল্লেখ্য, এই প্রথম নয়। এর আগেও মঙ্গলাহাট বন্ধের জেরে ব্যবসায়ীরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সেই মামলায় আদালত নবান্ন অভিযানে জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। এবার পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তও এই পথেই হাঁটছেন।
