বন্ধ হয়ে যেতে চলেছে নরকের দরজা । তুর্কিমেনিস্তানের কারাকুম মরুভূমি মধ্যে রয়েছে এক বিশাল গর্ত। তা থেকে গত চার দশক ধরে আগুন জ্বলছে। তাই একে নরকের দরজা বলা হয়। সেটিই এবার নেভানোর নির্দেশ দিয়েছেন দেশের প্রেসিডেন্ট গুরবাঙ্গুলি বেরদিমুখামেদভ। আসলে এই আগুন নেভানোর চেষ্টা আগেও করেছে সরকার, কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। ফের গর্তের আগুন নেভানোর নির্দেশ দিয়েছেন তুর্কমেনিস্তানের প্রেসিডেন্ট। তিনি মনে করছেন দেশ প্রাকৃতিক সম্পদকে ব্যাবহার করতে পারছে না। এ থেকে দেশের অনেক লাভ হতে পারে। সেখান থেকে গ্যাস রফতানির পরিকল্পনাও রয়েছে তাঁর।
পাশাপাশি দেশের পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত দিকটাও দেখছেন তিনি। তাই গর্তের আগুন বন্ধ করতে চান প্রেসিডেন্ট গুরবাঙ্গুলি বেরদিমুখামেদভ। কর্মকর্তাদের গর্তের আগুন কীভাবে নেভানোর যায় তার উপায় দ্রুত খুঁজে বার করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। কারাকুম মরুভূমির এই গর্ত নিয়ে নানা রহস্য রয়েছে। অনেকে মনে করেন, ১৯৭১ সালে সোভিয়েতের ভূতাত্বিকরা এটি খননের করেছিলেন।
আর ও পড়ুন বিজেপিতে বিদ্রোহ দেখিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়লেন শঙ্কুদেব পণ্ডা
ভূতত্ত্ববিদদের মতে, ১৯৬০-এর দশকে কারাকুম মরুভূমিতে বড় আকারের গর্ত তৈরি হয়। আর আশির দশকে আগুন জ্বলতে শুরু করে। জানা যায়, ১৯৭১ সালে তুর্কেমেনিস্তান সোভিয়েত যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত ছিল। কয়েকজন সোভিয়েত ভূতাত্ত্বিক তখন খনিজ তেলের সন্ধানে কারাকুম মরু অঞ্চলে অভিযান শুরু করেন। এই উদ্দেশ্যে ড্রিলিং শুরু করলে কিছুদিনের মধ্যে তারা টের পান ভূ-গর্ভস্থ গ্যাসের এক ভাণ্ডারের উপরেই বসে আছেন তারা।
এরপর এর কয়েক জায়গায় গর্ত খুঁড়ে এই গ্যাসক্ষেত্রকে মুক্ত করা হয়েছিল। তবুও সেখানকার ভূ-গর্ভে জমে থাকা প্রাকৃতিক গ্যাস পুরোটা বের করা সম্ভব হয়নি। ফলে ভূ-পৃষ্ঠের একটা বড় অংশ তারা উন্মুক্ত করে দিয়েছিল। তাদের আশঙ্কা ছিল গ্যাসক্ষেত্র থেকে বিষাক্ত গ্যাস আশেপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়বে। তাই তারা এই গ্যাসক্ষেত্রটিতে অগ্নিসংযোগ করেন। তারা ভেবেছিলেনকিছুদিন এই গ্যাস ক্ষেত্রে আগুন জ্বলবে। তারপর নিজে থেকেই নিভে যাবে, কিন্তু তা হয়নি। বিগত চার দশকেরও বেশি সময় ধরে এই গ্যাসক্ষেত্রটিতে ক্রমাগত আগুন জ্বলেই যাচ্ছে।
এই গর্তটি তুর্কমেনিস্তানে পর্যটকের অন্যতম জনপ্রিয় স্থান। তা বন্ধ হলে পৃথিবীর একটি আশ্চর্য জিনিস চিরতরে মুছে যাবে তা বলা যেতেই পারে।