Deprecated: version_compare(): Passing null to parameter #2 ($version2) of type string is deprecated in /home/u517603494/domains/shinetv.in/public_html/wp-content/plugins/elementor/core/experiments/manager.php on line 170
নাম ধরে ডাকলেই হাজির হয় ২০-২৫টি শিয়াল - Shine TV 24×7

নাম ধরে ডাকলেই হাজির হয় ২০-২৫টি শিয়াল

নাম ধরে ডাকলেই হাজির হয় ২০-২৫টি শিয়াল

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

বন্য শিয়ালকে ভালোবাসা দিয়ে তাদের সঙ্গে গভীর সখ্যতা গড়ে তুলেছেন পশুপ্রেমী যুবক শাহাবুদ্দিন মিলন। শুধু হিংস্র শিয়ালই নয়, ভালোবাসা দিয়ে জয় করেছেন হরেক রকমের পশুপাখির মন।

শেরু, কাঞ্চি, আহ্লাদী, আদুরী এমন সব নাম ধরে মিলন ডাক ছাড়লেই এদিক সেদিক থেকে দলে দলে শিয়াল ছুটে আসে তার কাছে। পরম মমতায় মিলন ক্ষুধার্থ এসব শিয়ালদের মুখে খাবার তুলে দেন। বন্য শিয়াল আর মানুষের এই ভালোবাসার মিতালী দেখতে প্রতি রাতে ভিড় জমে কুষ্টিয়া শহরের পলান বক্স লেনে মিলনের বাড়িতে।বিগত ২০ বছর ধরে প্রতিরাতেই এভাবে তার ডাকে সাড়া দিয়ে অগণিত শেয়াল তার কুষ্টিয়া শহরের বাড়ির সামনে ভিড় করে থাকে।

সভ্যতার অগ্রগতিতে যখন বন্য প্রাণীদের অস্তিত্ব সংকট চলছে, তখন ধূর্ত শিয়ালের সঙ্গে মানুষের বন্ধুত্ব সত্যিই বিস্ময়কর ঘটনা। মানুষের সঙ্গে বন্য শিয়ালের বন্ধুত্ব দেখে অনেকেই শাহাবুদ্দিন মিলনকে পশুপ্রেমী হিসেবেও আখ্যয়িত করে থাকেন।রাত হলেই ঝোঁপঝাড় থেকে শিয়াল বেরিয়ে আসে লোকালয়ে। ব্যবসায়ী সাহাবুদ্দিন মিলনের থানা পাড়ার বাড়ির পাশে ১৫ থেকে ২৫টি শিয়াল জড়ো হয়। অপেক্ষা তাদের মনিবের। রাতে ব্যস্ত শহরের সবাই যখন ঘুমিয়ে পড়েন তখন দোকান থেকে খাবার কিনে বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ান মিলন। রাস্তায় দাঁড়িয়ে সেরু, ভলবো, রাহাজানি, রঙ্গিলা, কাঞ্চি, জেরিসাসহ নানান নামে ডাক দিতেই লাইন ধরে জঙ্গলের ঝোঁপ থেকে বেরিয়ে আসে শিয়ালের দল।সেরু আর রাহাজানির দলকে দুই ভাগে ভাগ করে রাত তিনটা পর্যন্ত মিলন তাদেরকে খাবার খাওয়ান। এত রাতেও শহরের সব বয়সী মানুষ বন্যপশু আর মানুষের এই ভালোবাসার মিতালী দেখতে মিলনের বাসার সামনে ভিড় জমান।

শাহাবুদ্দিন মিলন বলেন, ২০ বছর ধরে তার শিয়ালের সঙ্গে তার গভীর সখ্যতা। প্রতিদিন প্রায় অর্ধশত শিয়ালের সঙ্গে তার এমন মিতালী হয়। রাত যত গভীর হয় শিয়ালের দল ঠিকই চলে আসে তার বাড়ির সামনে। আবার যেদিন আশপাশে তাদের দেখা মেলে না সেদিন নাম ধরে ডাকলেই শিয়ালের দল ছুটে আসে বাড়ির সামনে।

শাহাবুদ্দিনের মতে, শিয়াল হিংস্র হলেও তার কাছে শিয়ালের সেই আচরণ কখনই চোখে পড়েনি। ভালোবাসায় সব হিংস্রতা জয় করা সম্ভব বলে মনে করেন এই পশুপ্রেমী।

মিলন জানান, কোনো প্রাণীই হিংস্র নয়। সাপ, বেজি, ইঁদুরসহ সব প্রাণীর সঙ্গেই সখ্যতা করেছি। তাদের কাছে যেতে পারলে, মন বুঝতে পারলে, সবাইকে আপন করে নেওয়া যায়।

যতদিন বেঁচে থাকবেন তাদের প্রতি এই ভালবাসা ততদিন অটুট থাকবে বলেও জানান মিলন।মিলনের স্ত্রী লাভলী ইয়াসমিন জানান, এক সময় আমার স্বামীর এমন শিয়ালপ্রীতি দেখে খুবই বিরক্ত হতাম। নোংরা প্রাণী বলে রাগ হত। অবশ্য এখন বেশ ভালো লাগে। শিয়ালদের জন্য মহব্বতও হয়ে গেছে।

কুষ্টিয়া পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর খন্দকার মাজেদুল হক ধীমান বলেন, বন্য প্রাণীর সঙ্গে মিলন যে গভীর সখ্যতা গড়ে তুলেছেন এক কথায় বলতে গেলে অনবদ্য। মিলন সত্যিই পশুপাখি প্রেমী। আমরা তাকে নিয়ে গর্ব করি।

তিনি আরও জানান, অনেকেই না বুঝে বন্যপ্রাণীদের অত্যাচার করে। তাদেরকে আমি সতর্ক করে দিয়েছি। এছাড়াও প্রাণীদের হত্যা বা নির্যাতন করলে বন্যপ্রাণী আইনের সাজা হতে পারে বলেও সবাইকে সর্তক করা হচ্ছে।

পাখি ও বন্যপ্রাণী পর্যবেক্ষক এসআই সোহেল বলেন, মিলন ভাই যে শিয়ালের সঙ্গে সখ্যতা গড়েছেন সেটা দেখে আমি সত্যিই অভিভূত। শিয়াল খুবই ধূর্ত। তবে মানুষ যদি তাদের সঙ্গে ভালো আচরণ করে তাহলে তারাও তার সঙ্গে বন্ধুর মতো আচরণ করে থাকে।শুধু বন্যপ্রাণী কিংবা পশু পাখির প্রতিই মিলনের ভালোবাসা সীমাবদ্ধ নয়; নানা সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও সম্পৃক্ত মিলন। দুস্থ-অসহায় মানুষকে সহযোগিতা করার জন্য মিলন তার নিজ বাড়িতে গড়ে তুলেছেন ‘মানুষ মানুষের জন্য’ ফাউন্ডেশন।

এলাকার কেউ মারা গেলে বিনামূল্যে মাইকিং করা, গরিব-দুস্থদের সহায়তা করা, অন্যের বিপদে ছুটে যাওয়া, তাদের পাশে দাঁড়ানো শাহাবুদ্দিন মিলনের রুটিন ওয়ার্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top