কলকাতা – নিউ গড়িয়ার পঞ্চসায়র থানা এলাকায় এক বৃদ্ধাকে খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে পরিবারের পরিচিত আয়া আশালতা সর্দার এবং তার পুরুষ সঙ্গী মহম্মদ জালাল মীরকে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটে। পুলিশের দাবি, সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যেই পরিকল্পিতভাবে খুনের এই ঘটনা ঘটানো হয়। ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দু’জনকেই পাকড়াও করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে আশালতা সর্দার বৃদ্ধ দম্পতির বাড়িতে ঢোকেন, আর তার সঙ্গী মহম্মদ জালাল মীর বাইরে অপেক্ষা করছিলেন। তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, দু’জনে মিলে সম্পত্তি লুটের ছক কষেই খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে। ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে বিস্তারিতভাবে জেরা শুরু করেছে পুলিশ। তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আরও কেউ এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত কি না, সেই দিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে।
ঘটনাস্থল পঞ্চসায়রের এস-৩২ কুলু ভিলা। ওই দোতলা বাড়িতে থাকতেন ৮২ বছরের প্রশান্ত দাস এবং তার স্ত্রী ৭৯ বছরের বিজয়া দাস। শুক্রবার সকালে আতঙ্কে ভরে ওঠে গোটা বাড়ি। সিঁড়ির কাছে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার হয় বৃদ্ধার দেহ। পাশের ঘরে মেঝেতে আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থায় পড়ে ছিলেন বৃদ্ধ প্রশান্ত দাস। আপাতত তাঁকে এক আত্মীয়ের বাড়িতে রাখা হয়েছে।
জানা গেছে, পরিবারের ছেলে থাকেন মুম্বইয়ে এবং মেয়ে জার্মানিতে। বৃদ্ধ দম্পতির যত্নের জন্য সম্প্রতি নিকটবর্তী একটি আয়া সেন্টার থেকে আশালতা সর্দারকে নিয়োগ করেছিলেন তাঁরা। ঘটনার পর থেকেই আশালতার খোঁজ মিলছিল না, যা সন্দেহ আরও ঘনীভূত করে। অবশেষে শুক্রবার রাতেই আশালতা এবং তার সঙ্গী মহম্মদ জালাল মীরকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
তদন্তে উঠে এসেছে, বাড়ির সর্বক্ষণ নজরদারির জন্য সিসি ক্যামেরা বসানো থাকলেও খুনের আগে ক্যামেরার তার কেটে দেওয়া হয় এবং বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ, পুরো ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত। বৃদ্ধার গলায় থাকা সোনার হার, হাতের চুড়ি ও কানের দুল উধাও। পাশাপাশি খোলা অবস্থায় আলমারি থেকে কিছু গয়নাও নিখোঁজ। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, লুটপাটের উদ্দেশ্যেই খুনের এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
আশালতা ও তার সঙ্গীকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। তাঁদের জেরা থেকে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তদন্তকারীরা সম্ভাব্য অন্য কোনও সহযোগীর দিকেও নজর রাখছেন।
