‘নির্বাচনের সময় বলেন ২৯৪ আসনে আমিই প্রার্থী, বেকায়দায় পড়লে বলে ‘ও’ করেছে আমি না’।
মুখ্যমন্ত্রীকে পালটা জবাব শুভেন্দুর। সোমবার, মেদিনীপুর শহরে ‘শিক্ষক দিবস’ উদযাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল বিজেপির পক্ষ থেকে। যেখানে মুখ্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। এদিনের অনুষ্ঠান শিক্ষক দিবসের হলেও বিজেপির শিক্ষক সংগঠনের সামনে কার্যত রাজ্য সরকারের দুর্নীতি ও মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিভিন্ন সমালোচনা করলেন শুভেন্দু অধিকারী।
মুখ্যমন্ত্রীর শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে করা মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিলেন তিনি বিভিন্ন কটাক্ষপূর্ণ। মুখ্যমন্ত্রীর নৈতিক চরিত্র গঠনের পরামর্শ প্রসঙ্গে শুভেন্দুর বক্তব্য, ‘উনি আগে ওনার যারা পার্শ্বদ আছে, সেই মন্ত্রীদের চরিত্র তৈরি করুন। সুলতানদের মতো যাদের বান্ধবী’৷ একই সাথে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পালটা বলেন, ‘প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী ওনার মন্ত্রিসভার দ্বিতীয় লোক, দলের মহাসচিব ছিলেন। ভোটের সময় বলেন ২৯৪ আসনেই আমি প্রার্থী, বেকায়দায় পড়লে বলে ‘ও’ করেছে আমি না’।
এদিন বিরোধী দলনেতা মেদিনীপুর শহরে প্রবেশ করে বিদ্যাসাগর হলের সামনে সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণনের মুর্তিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরে বিজেপি শিক্ষক সংগঠনের শিক্ষকদের সামনে মঞ্চের বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘সিলেবাসে আকাশকে লেখা আছে আসমান, জলকে লেখা আছে পানি, মা কে লেখা আছে আম্মা, বাবাকে লেখা আছে আব্বা, এই জিনিস থাকবে না বেশিদিন। রাষ্ট্রবাদী চেতনা জাগ্রত হবেই। গুজরাটে ক্লাস ওয়ান থেকে টুয়েলভ গীতা পড়ানো হয় বিদ্যালয়ে। শুধু, পুঁথিগত বিদ্যা দিয়ে অন্তর্নিহিত জ্ঞানের পূর্ণতা প্রাপ্তি হতে পারে না। গীতাকেও সঙ্গে রাখতে হবে। পশ্চিমবাংলায় অষ্টম শ্রেণীর জন্য অনুরোধ করবো, পাঠ্যবইতে একটা পাতায় দুর্নীতিগ্রস্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম রয়েছে। শিক্ষকরা এই পাতাটা বাদ দিয়ে দেবেন। দয়া করে পড়াবেন না।
আরও পড়ুন – ট্রেনে কাটা পরে দুই ছাত্রীর মৃত্যুতে শোকের ছায়া ধুম ডাঙ্গী এলাকায়
শিক্ষকদের অনুরোধ করব আপনারা নিজেদের মেরুদন্ড সোজা রেখে চলুন। নিজের পছন্দের রাজনৈতিক মতামত দেওয়ার অধিকার ডক্টর ভিমরাও আম্বেদকর সংবিধানে দিয়ে গিয়েছেন। যদি জোর করে বদলি করতে যায়, মনে রাখবেন ডায়মন্ড হারবারের কৃষ্ণা বৈদ্য প্রমাণ করে দিয়েছেন উচ্চ আদালতে মামলা করে, সবাই মাথা বিক্রি করে না’।
মুখ্যমন্ত্রীর নৈতিক চরিত্র গঠনের পরামর্শ বিষয়ে শুভেন্দু অধিকারী কটাক্ষ করে বলেন, ‘কার মতো চরিত্র হবে পার্থর মত? সুলতানদের মত বান্ধবী? উনি, আগে ওনার যারা পার্শ্বদ আছে সেই মন্ত্রীদের চরিত্র তৈরি করুন। ওনার এক মন্ত্রী কিছুদিন আগে মন্ত্রীসভা ছেড়ে দিয়েছেন তবুও বান্ধবীকে ছাড়তে পারেননি’। শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি শিক্ষকের ডিএ প্রসঙ্গ উস্কে বলেন, ‘মেধা যুক্তরা রাস্তায় বসে রয়েছে। বাকি শিক্ষকরা কেউ ডিএ পায়নি। খড়্গপুরে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় রয়েছে।
তার শিক্ষক-শিক্ষিকা কর্মীরা কি হারে ডিএ পাচ্ছে দেখুন। শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের বলবো বদলির ভয় আর করবেন না। বিচারব্যবস্থা আপনাদের রক্ষা করার জন্য এগিয়ে এসেছে। এবার আপনারা রাস্তায় নামুন’। হলদিয়াতে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে পোস্টার প্রসঙ্গে এদিন তিনি বলেন, ‘যন্ত্রণার কারণে ভাইপো করিয়েছে এটা। পেটে ব্যথা হলে বাবাগো-মাগো করে। ওই জন্য অমিত শাহ ও আমাকে টার্গেট করেছে। কোন অসুবিধা নেই, মেদিনীপুরের ছেলে। তাড়িয়ে ছাড়বো’।