কখনও মেলে প্রশংসা,আবার কখনও ব্যঙ্গাত্বক হাসি। কয়েক মাস ধরে পথের মধ্যে এমন অভিজ্ঞতাকে সঙ্গী করেই বহরমপুরের শহরের রাস্তায় টোটো চালাচ্ছেন সোনালী জানা। একমাত্র ছেলেকে মানুষ করতে ও সংসারের হাল ধরতে পথে নামতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। পুরুষ টোটো চালকদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মহিলা হয়ে চালকের আসনে বসে সওয়ারিদের গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছেন অনায়াসে। সওয়ারিদের অনেকেই তাঁর এই লড়াইকে সাহস দিয়ে প্রশংসা করেছেন। সেই কথায় আত্মবিশ্বাস ফিরে পান সোনালী।
বহরমপুর শহরের খাগড়া এলাকার কাঁসারিপাড়ার বাসিন্দা সোনালী। বছর ছয়েক আগে ধুমধাম করে বিয়ে হয় তাঁর। বিয়ের পর কিছুদিন সবকিছু ঠিক থাকলেও পরে স্বামীর সঙ্গে ঝামেলা শুরু হয়। সোনালী জানান, স্বামীর চরিত্র ভালো নয়। প্রতিদিন নেশা করে ঝামেলা করতো। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কও রয়েছে তাঁর। সেখানেই বেশিভাগ দিন কাটায় সে।
স্বামী তেমন কিছু একটা কাজ না করার কারণে সংসার চালানো বেশ কষ্টের হয়ে উঠেছিল সোনালীর কাছে। কাজ করার কথা বললে স্বামী তাকে বাপের বাড়ি থেকে টোটো কেনার টাকা আনতে বলে। বাধ্য হয়ে ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়ে স্বামীকে টোটো কিনে দেন সোনালী। তিনি বলেন, টোটো চালিয়ে ভালোই রোজগার হচ্ছিলো। কিন্তু এক পয়সা সংসারে দেওয়া তো দূরের কথা এমন কি লোনের টাকা পরিশোধ করেনি বলে অভিযোগ সোনালীর । বেশ কিছুদিন চলার পর সহ্য হারিয়ে টোটোর চাবি জোর করে কেড়ে নেন সোনালী।তারপর নিজেই টোটো চালাতে শুরু করেন সোনালী । বর্তমানে ছেলে সুরজিৎকে মানুষ করে তোলা ও টোটোর লোন পরিশোধ করার লক্ষ্য নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন সোনালী।