নিয়ন্ত্রণ হাড়িয়ে হোটেলে ঢুকে পড়লো লড়ি, মৃত ২, জখম ৩। মঙ্গলবার মাদারিহাট ব্লক সদর শহরের স্কুল চৌপথিতে ইউরিয়া সার বোঝাই একটি লড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে থাকা একটি হোটেলের উপর উল্টে পড়ে যায়। তাতে ট্রাকের চাপায় দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। পুলিস জানিয়েছে, মৃতরা হলেন রাজকুমার বর্মন(৫৫) ও পূর্ণ আর্য(৪৮)। দুর্ঘটনায় জখম হয়েছেন লড়ি চালকও। এদিন সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে ৪৮ নম্বর এশিয়ান হাইওয়ে সড়কে।
মাদারিহাটের স্কুল চৌপথির পাশেই আছে মাদারিহাট বয়েজ ও মাদারিহাট গার্লস হাইস্কুল। মাদারিহাট শহরের স্কুল চৌপথিতে একটি বাঁক আছে। ফলে শহরের মধ্যে এলাকাটি খুবই দুর্ঘটনাপ্রবণ। তার জন্য এর আগে বহুবার দুর্ঘটনাও ঘটেছে মাদারিহাটের ওই স্কুল চৌপথিতে। এদিন সাত সকালে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেরই তখন ঘুম ভাঙেনি। এলাকার প্রত্যক্ষদর্শিদের মতে, সকালের দিকে রাস্তা ফাঁকা থাকার জন্য অসম থেকে শিলিগুড়িগামী ইউরিয়া সার বোঝাই বারো চাকার লড়িটি প্রচণ্ড গতিতে আসছিল। লড়িটি স্কুল চৌপথিতে টার্নিংয়ে এসে নিয়ন্ত্রণ হারায়। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িটি ৪৮ নম্বর এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের পাশে থাকা হোটেলটিতে সজোরে ধাক্কা দিয়ে হোটেলের উপর উল্টে যায়।
আচমকা বিকট শব্দে আশপাশের বাসিন্দারা ছুটে আসেন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে মাদারিহাট থানা থেকেও পুলিস কর্মীরা ছুটে আসে। দুর্ঘটনার সময় হোটেলে গরম গরম ভাত খাচ্ছিলেন ছ’জন। ওই ছ’জনের মধ্যে হোটেল কর্মী পূর্ণবাবু ছাড়াও ছিলেন হোটেল মালিক সজল কুমার রায়ের শ্বশুর রাজকুমারবাবু সহ তাঁদের চার আত্মীয়। লড়িটি উল্টে গেলে ইউরিয়া সার বোঝাই বস্তায় চাপা পড়ে যান ছ’জনই।
এরমধ্যে চার জন কোনমতে বেড়িয়ে আসতে পারলেও পূর্ণবাবু ও রাজকুমারবাবু বেড়িয়ে আসতে পারেননি।
আরও পড়ুন – বাঁকুড়ার পোড়া পাহাড়ে রহস্যময় গুহার সন্ধান, আদিম মানুষের বসবাসস্থল দাবী স্থানীয়দের একাংশের
স্থানীয়রা ও পুলিস বস্তা সরিয়ে পূর্ণবাবু ও রাজকুমারবাবুকে উদ্ধার করে মাদারিহাট গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসকরা দু’জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, হোটেল মালিক সজলবাবুর শ্বশুর রাজকুমারবাবুর বাড়ি কোচবিহারে। পুজো বেড়িয়ে যাওয়ায় রাজকুমারবাবু তাঁর আরও চার আত্মীয়কে নিয়ে গত সোমবার জামাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন।
মঙ্গলবার সকালেই খাওয়াদাওয়া করে তাঁদের কোচবিহারে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রাজকুমারবাবুর আর কোচবিহারে ফেরা হল না। সাত সকালে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মাদারিহাট থানার ওসি গৌরব হাঁসদা বলেন, দুর্ঘটনায় লড়ি চালক জখম হয়েছেন। জখম চালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহগুলি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।