রাজ্য – চলতি বছরে অতিবৃষ্টির জেরে দেশের একাধিক রাজ্যে ভয়াবহ বন্যার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গও। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের বিধ্বংসী বন্যা বহু মানুষের প্রাণহানি এবং বিপুল সম্পত্তি ক্ষতির কারণ হয়েছে। কিন্তু এই ভয়াবহ দুর্যোগের পরও কেন্দ্রের তরফে বাংলার জন্য কোনও ত্রাণ বরাদ্দ না হওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়।
সাংসদ নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, “কেন্দ্র সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে দেশের সাংসদরা তাঁদের সাংসদ তহবিল থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত পঞ্জাবের বন্যা ত্রাণের জন্য অনুদান দিতে পারবেন। এটি নিঃসন্দেহে একটি ভালো পদক্ষেপ। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, যদি পঞ্জাবের ক্ষেত্রে এই ছাড় দেওয়া যায়, তবে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে তা হবে না কেন?”
তিনি আরও বলেন, “উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের বহু এলাকা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মানুষের ঘরবাড়ি ও ফসলের বিপুল ক্ষতি হয়েছে। তবুও বাংলার সাংসদদের একই রকম অনুমতি দেওয়া হয়নি।’’ সাধারণত সাংসদ বা বিধায়কদের তহবিল তাঁদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নের জন্যই ব্যয়ের অনুমতি থাকে। কিন্তু কেন্দ্র পঞ্জাবের ক্ষেত্রে সেই নিয়ম শিথিল করে দেশের অন্য রাজ্যের সাংসদদেরও তহবিল থেকে সাহায্যের সুযোগ দিয়েছে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে—বাংলার ক্ষেত্রে সেই একই নিয়ম শিথিল করা গেল না কেন?
এর আগেও বন্যা ত্রাণে কেন্দ্রের বৈষম্যমূলক মনোভাব নিয়ে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগ করেন, মহারাষ্ট্র ও কর্নাটকের জন্য যেখানে দ্রুত ১,৯৫০.৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, সেখানে বাংলার জন্য এক টাকাও বরাদ্দ করা হয়নি। যদিও রাজ্য সরকারের তৎপরতায় উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে, প্রশাসনের ত্রাণ পৌঁছে গেছে পাহাড় থেকে সমতল পর্যন্ত।
তবুও কেন্দ্রের নিরব ভূমিকা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ক্ষোভ বাড়ছে। তৃণমূলের দাবি, যদি পঞ্জাবের জন্য গোটা দেশের সাংসদদের তহবিল ব্যবহার করার ছাড় দেওয়া যায়, তবে বাংলার সাংসদদেরও উত্তরবঙ্গের স্বার্থে সেই একই সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল। তাঁদের অভিযোগ, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত আসলে বাংলার প্রতি রাজনৈতিক পক্ষপাত ও বৈষম্যমূলক মনোভাবেরই আরেকটি প্রমাণ।




















