পদত্যাগের হিড়িক বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে। মঙ্গলবার বিশ্বভারতীর কর্মসচিব আশিষ আগরওয়াল ইস্তফা দেওয়ার পরে বুধবার সকালে বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক পদ থেকে অতীগ ঘোষ, দুপুর গড়াতেই বিশ্বভারতীর কর্ম সমিতির সদস্য এবং সংগীত ভবন এর অধ্যক্ষ স্বপন কুমার ঘোষ ইস্তফা দেন, একের পর এক আধিকারিক বেকায়দায় বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।
বিশ্বভারতী দর্শন বিভাগের আন্দোলনরত ছাত্রী মীনাক্ষী ভট্টাচার্য্য জানিয়েছে ,আমাদের দাবি সমাধান করা হবে বলে যেসব অধ্যক্ষরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন , তারা নিজেদের প্রতিশ্রুতি পালনে ব্যর্থ হয়েছেন, তাই নিজের নিজের পথ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন। আমরা সংবাদমাধ্যমে শুনলাম , উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেছেন, আন্দোলনরত ছাত্র ছাত্রীরা বিশ্বভারতীর আধিকারিকদের খুন করার চক্রান্ত করছে, ন্যায্য অধিকারের দাবিতে তাদের জঙ্গি বলে আক্রমণ করা হচ্ছে।
একজন উপাচার্যের মুখে এই ধরনের শব্দ কখনো কাম্য নয়। এদিকে একটি ভিডিও বার্তায় উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী অভিযোগ করেছেন, বর্তমানে বিশ্বভারতী জুড়ে ছাত্রছাত্রীরা যে আন্দোলন করছে তার মধ্যে এসএফআই ও তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদের পড়ুয়ারা রয়েছে, এর থেকে বোঝা যায় এই আন্দোলনের পেছনে সিপিএম এবং তৃণমূল কংগ্রেসের ইন্ধন রয়েছে।
মঙ্গলবার অচল অবস্থার পরিস্থিতি নিয়ে আমি একটি বৈঠক করতে চেয়েছিলাম , কিন্তু আন্দোলনরত পড়ুয়ারা আমাদের সেই বৈঠক করতে দেয়নি , যে কজন অধ্যক্ষ বাংলাদেশ ভবনে আগে বৈঠক করতে পৌঁছেছিল তাদের কে বন্দি করে রাখা হয়েছিলো , ছাত্র-ছাত্রীরা অশ্রাব্য ভাষায় আক্রমণ করেছে অধ্যক্ষদের , এরপরে বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী , নিয়ম অনুযায়ী যে সব পড়ুয়ারা পরীক্ষা দেবেন না তাদের কে ফেল করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এমন বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।
আর ও পড়ুন নন্দীগ্রাম দিবসে টুইটে ২০০৭-র ঘটনা স্মরণ করলেন মমতা
কিন্তু সেই বিজ্ঞপ্তি পরে ফিরিয়ে নেয় কর্মসচিব , যদিও আমি অনুমতি দেয়নি বিজ্ঞপ্তি তুলে নেবার। তাই পরীক্ষায় না বসলে ছাত্র-ছাত্রীদের ফিল করানোর জারি হওয়া বিজ্ঞপ্তি এখনো বহাল রয়েছে। বিশ্বভারতীর প্রবীণ আশ্রমিক সুবোধ মিত্র, কুন্তল রুদ্র, সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়, একযোগে অভিযোগ অভিযোগ করেছেন , উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর কথা অনুযায়ী না চললে করতে হবে আবারও প্রমাণিত হলো।
বিশ্বভারতীর কর্মসচিব ও জনসংযোগ আধিকারিক উপাচার্যের নির্দেশ কে উপেক্ষা করে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হয়েছিলেন , তাই উপাচার্যের পছন্দ হয়নি , ভিডিওবার্তায় উপাচার্য যে অভিযোগ করছেন , ছাত্র-ছাত্রীদের ফেল করানোরযে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল সেটা ওনার অনুমতিক্রমে ফিরিয়ে নেওয়া হয়নি। দিনের আলোর মত পরিষ্কার এর পরেই উনি ক্ষুব্দ হয়ে জনসংযোগ আধিকারিক কে পদত্যাগের নির্দেশ দেন।