খেলা – চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে ৪ জুনের মর্মান্তিক পদদলিত ঘটনার তদন্তে গাফিলতির প্রমাণ মেলায় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (RCB), কর্ণাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (KSCA) এবং ইভেন্ট আয়োজক সংস্থা ডিএনএ এন্টারটেইনমেন্টের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের অনুমোদন দিল কর্ণাটক মন্ত্রিসভা। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি জন মাইকেল ডি’কুনহার নেতৃত্বে গঠিত এক সদস্যের তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উক্ত প্রতিবেদনে সরাসরি আরসিবি, কেএসসিএ এবং বেঙ্গালুরু পুলিশের বিরুদ্ধে গুরুতর অবহেলার অভিযোগ আনা হয়েছে। ঘটনায় মৃত্যু হয় ১১ জনের, আহত হন ৫০ জনেরও বেশি।
তদন্ত কমিশনের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো ভিড়ের বিপজ্জনক মাত্রার বিষয়ে জানলেও সুরক্ষা ও সমন্বয়ে চরম ব্যর্থ হয়। তদন্তে জানা গেছে, স্টেডিয়ামের বাইরে কোনো পুলিশ মোতায়েন ছিল না এবং ভেতরেও ছিল মাত্র ৭৯ জন। এমনকি জরুরি পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত রাখা হয়নি কোনও অ্যাম্বুলেন্সও। কমিশনের মতে, প্রবেশদ্বারগুলিতে দুর্বল ব্যবস্থাপনা ও দেরিতে খোলার ফলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়, যা পদদলনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
সরকারি রিপোর্টে আরসিবি-র এক জনসমক্ষে প্রচারিত ভিডিও বার্তার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে, যা বিশাল জনসমাগম ঘটাতে সহায়তা করেছিল—যদিও বেঙ্গালুরু পুলিশ এ সংক্রান্ত কোনো অনুমতি দেয়নি। আয়োজক সংস্থা ডিএনএ এন্টারটেইনমেন্ট ৩ জুন ইভেন্ট সম্পর্কে পুলিশকে জানালেও, বাধ্যতামূলক অনুমতির আবেদন করেনি। এসব ভুলের ফলেই নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এবং মারাত্মক দুর্ঘটনার জন্ম নেয়।
এ ঘটনায় একাধিক FIR দায়ের হয় অবহেলা ও অপরাধমূলক নরহত্যার ধারায়। কর্ণাটক সরকার প্রথমে ম্যাজিস্ট্রিয়াল তদন্ত শুরু করে, পরে বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেয় এবং তিনজন উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করে। কর্ণাটক হাইকোর্ট নিজে বিষয়টি পর্যবেক্ষণে নেয় এবং সরকারকে মৃত্যুর দায় কার উপর, তা নির্ধারণ করতে নির্দেশ দেয়। কমিশনের রিপোর্টে উল্লিখিত প্রত্যেকটি সংস্থা ও প্রশাসনিক বিভাগের দায় এখন আইনি বিচারে মুখোমুখি হতে চলেছে।
