পদযাত্রায় জনসমুদ্র, ব্যালটে শূন্য— বিহারে ধরাশায়ী কংগ্রেস, কোথায় ভুল করলেন রাহুল?

পদযাত্রায় জনসমুদ্র, ব্যালটে শূন্য— বিহারে ধরাশায়ী কংগ্রেস, কোথায় ভুল করলেন রাহুল?

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram


বিহার – পদযাত্রায় মিলেছিল মানুষের ঢল, কিন্তু ভোটের অঙ্কে কার্যত শূন্য— বিহার বিধানসভা নির্বাচনে এমনই চিত্র তৈরি হয়েছে কংগ্রেসের সামনে। ভোটের আগে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে হয়েছিল ‘ভোটাধিকার যাত্রা’। সঙ্গে হাঁটেছিলেন মহাগঠবন্ধনের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী তেজস্বী যাদবও। রাস্তায় বিপুল ভিড় দেখে অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, জনসমর্থনের এই স্রোত ভোটবাক্সেও প্রতিফলিত হবে। কিন্তু ফল একেবারেই উল্টো। দুপুর ৩টের আপডেটে কংগ্রেস এগিয়ে মাত্র ৩টি আসনে— যেখানে আগেরবার তারা পেয়েছিল ১৯টি। একই চিত্র আরজেডির ক্ষেত্রেও, তেজস্বী এগিয়ে মাত্র ২৬ আসনে। প্রশ্ন উঠছে— জনসমুদ্র কোথায় হারাল ব্যালটের অঙ্কে? কোথায় ভুল হলো কংগ্রেসে? কোথায় গতি হারাল রাহুলের প্রচার?

প্রচারে সমন্বয়ের অভাব ছিল স্পষ্ট। ইন্ডিয়া জোটে যেমন দেখা গিয়েছিল অসামঞ্জস্যতা, বিহারের মহাগঠবন্ধনেও সেই একই সমস্যার পুনরাবৃত্তি হয়েছে। ভোটাধিকার যাত্রার পর কংগ্রেস যেন পুরোপুরি অদৃশ্য হয়ে যায় রাজ্যের রাজনৈতিক ময়দান থেকে। তেজস্বী একাধিক সভা ও প্রচারে সক্রিয় হলেও রাহুলকে আর সেভাবে মাঠে দেখা যায়নি।

ভোটের আগের উত্তেজনা ধরে রাখতে পারেনি কংগ্রেস। জনসংযোগ হারিয়েছে ছন্দ। বিভিন্ন জেলার মাঠে দেখা যায়নি কংগ্রেস কর্মী ও নেতাদের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোডশো ও পদযাত্রার সাফল্যের পরও সংগঠন কাঠামো ধরে রাখতে পারেনি দল। যে উচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছিল রাস্তায়, তা বজায় থাকেনি বুথ স্তরে।

এর মধ্যেই রাহুল ব্যস্ত ছিলেন নির্বাচন কমিশন ও ভোটচুরি ইস্যু নিয়ে। বিজেপি-জেডিইউ যখন ‘জঙ্গলরাজ’ তুলতে ব্যস্ত, তখন রাহুলের প্রচারের প্রধান ফোকাস হয়ে ওঠে ভোটচুরির অভিযোগ। কিন্তু তাঁর সেই দাবি ভোটারদের মন ছুঁতে পারেনি। বরং মাঠে অনুপস্থিত থাকার ক্ষতি স্পষ্টতই দেখা দিয়েছে ফলাফলে।

সবচেয়ে বড় ধাক্কা এসেছে সংগঠনের ঘাটতি থেকে। রোহতাস, বক্সার, কৈমুর— একাধিক জেলার বুথে ছিল না কোনও কংগ্রেস কর্মী। বুথ স্তরের এই শূন্যতা সরাসরি প্রতিফলিত হয়েছে ভোটের অঙ্কে। উপস্থিতি না থাকায় প্রভাব পড়েছে জনমনে, ফলে পদযাত্রার জনসমুদ্রও কাজে এল না ব্যালটের বক্সে।

বিহারের রাজনৈতিক সমীকরণে তাই কংগ্রেসের এই বিপর্যয় স্পষ্ট করে দিল— শুধু রাস্তায় ভিড় তুললেই হয় না, ভোটের ময়দানে স্থায়ী সংগঠন থাকাটাও জরুরি।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top