নিজস্ব সংবাদদাতা ১১অক্টোবর২০২০ উত্তর দিনাজপুর: সংসারের বোঝা টানতে মৃন্ময়ীর মূর্তি তৈরি করে চলেছেন রায়গঞ্জের কুমোরটুলি কাঞ্চনপল্লীর প্রখ্যাত মৃৎশিল্পী গনেশ পালের বিধবা স্ত্রী অর্পিতা।

তাঁর হাতের কাজে আর তুলির ছোঁয়ায় রায়গঞ্জ শহরের বিগ বাজেটের পুজো মন্ডপে বিরাজমান দূর্গা প্রতিমার আকর্ষন করে দর্শনার্থীদের। একাধারে সংসারের সব কাজ ও হেঁসেল সামলে ফুটিয়ে তুলেছেন মৃন্ময়ীর অপরূপ রূপ। ছেলেমেয়ের পড়াশোনা আর সংসার খরচ প্রতিপালন করে চলেছেন স্বামীর হাত ধরে শেখা প্রতিমা গড়েই। উত্তর দিনাজপুর জেলার অন্যতম সেরা মৃৎশিল্পীদের মধ্যে আজ একজন অর্পিতা পাল। সুভাষগঞ্জের বাপের বাড়িতে থেকে বাবার সাথে কাজে হাত বাড়াতেন রায়গঞ্জের অন্যতম সেরা মৃৎশিল্পী অর্পিতা পাল। তারপর ১৯৯৪ সালে বিয়ে হয় রায়গঞ্জের কুমোরটুলি কাঞ্চনপল্লীর প্রখ্যাত মৃৎশিল্পী গনেশ পালের সাথে। পিত্রালয়ের মতোই স্বামীর ঘরে এসে স্বামীর কাজের সাথে সহযোগিতা হাত বাড়িয়ে দিতেন অর্পিতা। কিন্তু কে জানত এই টুকটাক সাহায্য করার কাজই তাঁর একমাত্র জীবিকা হয়ে উঠবে। সংসারের বোঝা টানতে এটাই হবে তাঁর একমাত্র অবলম্বন! স্বামী প্রখ্যাত মৃৎশিল্পী গনেশ পাল আচমকাই ২০১৫ সালে কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন স্বামী। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল অর্পিতার। ছেলে মেয়ে নিয়ে কিভাবে সংসার প্রতিপালন করবেন তিনি। অথৈ জলে পড়ে গিয়েও মনের অদম্য সাহস আর স্বামীর দেওয়া শিক্ষাকে পাথেয় করে জীবনযুদ্ধে অবতীর্ণ হলেন বছর চল্লিশের অর্পিতা। কাদামাটি ছেনে আর রঙ তুলির ছোঁয়ায় তৈরি করা শুরু করলেন প্রতিমা নির্মানের কাজ। প্রথমে ছোট ছোট প্রতিমা তৈরি করে তা বিক্রি করে সংসার নির্বাহের কাজ করার পর এখন দশভূজার মূর্তির অন্যতম নির্মাতা অর্পিতা দেবী। স্বামীর মৃত্যুর পর সংসার প্রতিপালন করার পাশাপাশি মেয়ের বিয়ে দেওয়া এমনকি আজ তিনি ছেলেকে কলকাতায় উচ্চশিক্ষার জন্য পড়াতেও পাঠিয়েছেন। তাঁর হাতের তৈরি দূর্গা প্রতিমা আজ বিরাজ করছে রায়গঞ্জ শহর তথা উত্তরবঙ্গের বিগ বাজেটের পূজো মন্ডপে।