রাজ্য – পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে আজ বর্ষাকালের শেষ পর্যায়ের প্রভাব স্পষ্টভাবে লক্ষ করা যাচ্ছে। ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর (আইএমডি) জানিয়েছে, উত্তরবঙ্গে মেঘলা আকাশের সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে দক্ষিণবঙ্গে আংশিক মেঘলা আবহাওয়া বজায় থাকলেও গরমের ছোঁয়া এবং আর্দ্রতা মানুষের অস্বস্তি বাড়াতে পারে। সেপ্টেম্বর মাসে সাধারণত বাংলার তাপমাত্রা ২৬ থেকে ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে এবং এ বছরও সেই প্যাটার্ন অব্যাহত রয়েছে।
উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি—দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদা এবং পূর্ব বর্ধমানের কিছু অংশে সারাদিন আকাশ মেঘলা থাকবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। পাহাড়ি এলাকায়, বিশেষত দার্জিলিং ও জলপাইগুড়িতে, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ২৮-৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ২৪-২৬ ডিগ্রির মধ্যে থাকবে। পূর্ব থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে বাতাসের গতি ঘণ্টায় ১০-১৫ কিলোমিটার হতে পারে। সাম্প্রতিক বৃষ্টির জেরে তিস্তা ও মহানন্দা নদীতে জলস্ফীতির সম্ভাবনা থাকায় প্রশাসন সতর্কতা জারি করেছে। পাশাপাশি পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিধসের ঝুঁকি নিয়েও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলি—কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, নদীয়া, বীরভূম, বাঁকুড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব বর্ধমানের বাকি অংশে আংশিক মেঘলা আবহাওয়া বজায় থাকবে। কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২-৩৪ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন ২৬-২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে পারে। বৃষ্টির সম্ভাবনা খুব বেশি নেই, তবে বিকেলে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বাতাস দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ১২-১৮ কিলোমিটার বেগে বইতে পারে। গ্যাঙ্গেটিক ওয়েস্ট বেঙ্গলে ছিটেফোঁটা বৃষ্টি হলেও সামগ্রিকভাবে আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে।
কলকাতা ও আশপাশের অঞ্চলে আজ গরম এবং আর্দ্র আবহাওয়া জনজীবনে অস্বস্তি বাড়িয়ে তুলতে পারে। আর্দ্রতার হার ৮০ থেকে ৯০ শতাংশে পৌঁছনোর সম্ভাবনা থাকায় তাপমাত্রা আরও চড়া মনে হবে। বিশেষত যানজট এবং নির্মাণকাজের মধ্যে মানুষের শারীরিক সমস্যার ঝুঁকি রয়েছে, তাই জলশূন্যতা এড়াতে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তর।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন এলাকায় হালকা বাতাস আবহাওয়া কিছুটা স্বস্তিদায়ক করলেও জলাভূমির কারণে আর্দ্রতা বেশি থাকবে। কৃষিক্ষেত্রে ধান ও সবজি ফসল এই আবহাওয়ায় তুলনামূলকভাবে নিরাপদ থাকলেও বন্যার ঝুঁকি নিয়ে কৃষকদের সতর্ক থাকতে হবে।
সেপ্টেম্বর মাসে গড়ে ২৯০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয় পশ্চিমবঙ্গে, এবং এ বছরও সেই পরিমাণ বৃষ্টি নথিভুক্ত হয়েছে। তবে আইএমডি জানিয়েছে, ১১ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পশ্চিম ভারতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও বাংলায় তার প্রভাব তুলনামূলক কম হবে। উত্তরবঙ্গে বন্যা-প্রবণ এলাকায় সতর্ক থাকা এবং দক্ষিণবঙ্গে গরমে পর্যাপ্ত জলপান করে সুস্থ থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পর্যটকদের জন্যও সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে, বিশেষত উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি এলাকায় ভ্রমণের আগে আবহাওয়ার আপডেট দেখে নেওয়ার জন্য।
