পারিবারিক অশান্তির জেরে তিন সন্তানকে নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দিলেন মা । পারিবারিক অশান্তির জেরে তিন সন্তানকে নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করলেন এক মহিলা। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি থানার কাবিলপুর এলাকায়।। নদীর পাড় থেকে ওই মহিলার শিশুকন্যার মৃতদেহ উদ্ধার হলেও এখনও নিখোঁজ মা সহ তাঁর দুই পুত্রসন্তান। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেদের সাথে অশান্তির পর কাবিলপুরের বাসিন্দা জনৈক রেবিনা খাতুন (২৬) আজ সকালে তাঁর তিন সন্তানকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান।
পরে দুপুরে ভাগীরথী নদীর পাড় থেকে রেবিনার একমাত্র মেয়ে খাদিজা খাতুনের (৪) মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ইতিমধ্যে সাগরদিঘি থানার পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে গেছে। নিখোঁজ দুই ছেলের বয়স ৬ বছর এবং ২৭ দিন। নিখোঁজ দুই সন্তান ও তাদের মায়ের সন্ধানে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে গোটা বিষয়টি নিয়ে এখনও পর্যন্ত থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি।
আজিজুর রহমান নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমরা শুনেছি ওই মহিলা আজ সকাল ১০টা নাগাদ নিজের তিন ছেলেমেয়েকে নিয়ে ব্যাঙ্কের কিছু জরুরি কাজের জন্য বাড়ি থেকে বার হয়েছিলেন। কিন্তু তার পর আর বাড়ি ফিরে যাননি। পরে স্থানীয় কিছু গ্রামবাসী নদীতে একটি বাচ্চার দেহ ভেসে যেতে দেখে সেটি পাড়ে তুলে আনে। এরপর গ্রামের কিছু ছেলে ফেসবুকে ওই বাচ্চাটির পরিচয় জানার জন্য লাইভ করা শুরু করে। সেই সময় আমরা জানতে পারি ওই বাচ্চাটির নাম খাদিজা খাতুন। বাচ্চাটি তার মা এবং দুই ভাইয়ের সঙ্গে বাড়ি থেকে বার হয়েছিলো।’
আর ওপড়ুন ফিরে দেখা ২০২১ঃ বছরজুড়ে আলোচনায় যত অপরাধ
আজমাইল শেখ নামে নিখোঁজ ওই মহিলার এক দাদু বলেন বলেন, ‘রেবিনার স্বামী অন্য রাজ্যে রাজমিস্ত্রির কাজ করে। মাত্র ১৭ দিন আগে সে বাড়ি ফিরেছে। বাড়িতে আসার পর থেকে সে এবং তার বাবা মা রেবিনার ওপর অত্যাচার শুরু করে। তবে রেবিনার শ্বশুর এবং শাশুড়ি নিয়মিত তার ওপর অত্যাচার করত। রেবিনা তা সহ্য করতে না পেরেই তিন সন্তানকে নিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে।’
তিনি জানান, ‘সকালে রেবিনা নদীতে তিন সন্তানকে নিয়ে ঝাঁপ দিলেও বিকেল পর্যন্ত রেবিনা এবং তার দুই ছেলের সন্ধান পাওয়া যায়নি।’ পুলিশ এবং ডুবুরি নিখোঁজদের সন্ধানে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে। কাবিলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য আব্দুল বারিক বলেন, ‘গতকাল রাতে রেবিনা বাবার বাড়ি থেকে তিন সন্তানকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি ফিরে এসেছিল।
কিন্তু তাকে রাতে ওই বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ফলে ওই মহিলা সারারাত শ্বশুরবাড়ির সামনে একটি গাছের তলায় তিন সন্তানকে নিয়ে রাত কাটায়। আমি শুনেছি আজ সকালে শ্বশুরবাড়ির লোকদের এবং স্বামীর সঙ্গে অশান্তির পর রেবিনা গ্রাম থেকে বার হয়ে এসে নদীতে তিন সন্তানকে নিয়ে ঝাঁপ দেয়।’