পিকে নয়, সুনীলকেই ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের রণকৌশল তৈরির দায়িত্ব দিলেন সোনিয়া গান্ধী। প্রশান্ত কিশোরকে প্রস্তাব দেয়া হলেও তিনি শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসে যোগ দেননি। তার বদলে কিশোরের পুরনো সতীর্থ, ভোটকুশলী এসকে ওরফে সুনীল কানুগোলুকে কংগ্রেসে নিয়ে এসে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের রণকৌশল তৈরির দায়িত্ব দিলেন সোনিয়া গান্ধী। একই সঙ্গে তাকে রাজনৈতিক বিষয়ে পরামর্শ দিতে অভিজ্ঞ নেতাদের নিয়ে তৈরি রাজনৈতিক বিষয়ক গোষ্ঠী তৈরি করে তাতে দলের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর দুই প্রধান মস্তিষ্ক গুলাম নবি আজাদ, আনন্দ শর্মাকে নিয়ে এলেন।
২০২৪-এর লোকসভার প্রস্তুতি এখন থেকেই শুরু করে দিতে মঙ্গলবার সোনিয়া কংগ্রেসের টাস্ক ফোর্স-২০২৪ গঠন করেছেন। আটজনের এ কমিটিতে পি চিদম্বরম, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, জয়রাম রমেশ, রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার মতো প্রত্যাশিত নামের সঙ্গে শেষ নামটি সুনীল কানুগোলুর। মাত্র চল্লিশ বছরের সুনীল পিকে-র মতোই ২০১৪-র লোকসভায় নরেন্দ্র মোদির প্রচারে কাজ করেছিলেন। কিন্তু চরিত্রগতভাবে তিনি একেবারেই পিকে-র বিপরীত। পুরোপুরি প্রচারবিমুখ।
আর ও পড়ুন একাধিক ইস্যু নিয়ে এবার মুখ খুললেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী
২০১৪-র লোকসভা ভোটের পর পিকে বিজেপি ত্যাগ করার পরে অমিত শাহের আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন সুনীল। ২০১৭-তে বিজেপির উত্তরপ্রদেশ জয়ের নির্বাচনেও প্রচারের রণকৌশল সুনীলের তৈরি। তারপর বিজেপি, এডিএমকে, শিরোমণি অকালি দলের হয়ে কাজ করার পর সুনীল এখন কর্নাটক, তেলঙ্গানা, গুজরাটের নির্বাচনের জন্য কংগ্রেসের হয়ে কাজ করতে শুরু করছেন। তবে পেশাদার ভোটকুশলী হিসেবে নয়। দু’মাস আগেই তিনি কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন বলে সূত্রের দাবি।
রাহুল গান্ধী সম্প্রতি কর্নাটক, গুজরাটের নেতাদের যখন বৈঠক করেছেন, সেই সময়েও সুনীল হাজির ছিলেন। সুনীলকে টাস্ক ফোর্সে নিয়ে এসে ভবিষ্যতে পিকে-র কংগ্রেসের হয়ে কাজ করার সম্ভাবনাতেও সোনিয়া-রাহুল জল ঢেলে দিলেন বলে কংগ্রেস নেতাদের মত। টাস্ক ফোর্স গঠনের পরই চিদম্বরম, প্রিয়াঙ্কা, জয়রাম, কে সি বেণুগোপাল, সুরজেওয়ালারা ২৪ নম্বর আকবর রোডে কংগ্রেসের সদর দপ্তরে বৈঠকে বসেন। সুনীলরা ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন। বৈঠকের পর সুরজেওয়ালা জানান, দু’তিন দিন অন্তর এ টাস্ক ফোর্স বৈঠক করবে।
২০২৪-এর ভোটের জন্য নীল নকশা তৈরি হবে। টাস্ক ফোর্সের আট জনকে সংগঠন, জনসংযোগ, চাঁদা, নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্দিষ্ট দায়িত্ব দেয়া হবে। প্রত্যেকের সঙ্গে আলাদা দল তৈরি হবে। উদয়পুরের চিন্তন শিবিরের শেষে সোনিয়া ঘোষণা করেছিলেন, তাকে রাজনৈতিক বিষয়ে পরামর্শ দিতে একটি রাজনৈতিক বিষয়ক গোষ্ঠী তৈরি হবে। সোনিয়া সেই জোটও গঠন করেছেন। তাতে রাহুলের সঙ্গে মল্লিকার্জুন খড়্গ,ে অম্বিকা সোনি, বেণুগোপালের মতো গান্ধী পরিবারের আস্থাভাজনদের পাশাপাশি জি-২৩-র দুই সদস্য গুলাম নবি, আনন্দ শর্মাক রাখা হয়েছে।
অক্টোবর থেকে ‘ভারত জোড়ো’ আন্দোলনের পরিকল্পনা ও সমন্বয়ের জন্য একটি কমিটি গঠন হয়েছে। তাতেও জি-২৩-র শশী থারুর ও রাজস্থানের বিক্ষুব্ধ নেতা সচিন পাইলটের সঙ্গে জ্যোতি মণি, রভনীত সিংহ বিট্টুর মতো রাহুল ঘনিষ্ঠ নেতারা জায়গা পেয়েছেন। রাজনৈতিক পরামর্শদাতা জোট ও ‘ভারত জোড়ো’ আন্দোলনের জন্য তৈরি দুই কমিটিতেই নাম রয়েছে দিগ্বিজয় সিংয়ের, যা থেকে স্পষ্ট, গান্ধী পরিবার আবার দিগ্বিজয়কে জাতীয় রাজনীতিতে নিয়ে আসতে চাইছেন।