পুজোর আবহে চিকিৎসকদের ছুটি নেই, স্বাস্থ্য দপ্তরের কড়া ১১ দফা নির্দেশিকা

পুজোর আবহে চিকিৎসকদের ছুটি নেই, স্বাস্থ্য দপ্তরের কড়া ১১ দফা নির্দেশিকা

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram



রাজ্য – পুজোর মরশুমে চিকিৎসকদের কোনও ছুটি মিলবে না। উৎসবের আবহেও প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতাল, জেলা থেকে শুরু করে শহর কলকাতা পর্যন্ত, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অনুপস্থিতি কোনও অবস্থাতেই বরদাস্ত করবে না রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর। বিশেষ করে প্রসূতি মা ও সদ্যোজাত শিশুদের কোনওরকম বড় দুর্ঘটনা বা মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে তা গুরুতরভাবে দেখা হবে। এমনই স্পষ্ট বার্তা দিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে শনিবার জারি করা হল কড়া নির্দেশিকা।

পুজোর মাত্র তিন সপ্তাহ আগে স্বাস্থ্য দপ্তর প্রকাশ করেছে ১১ দফা গাইডলাইন। এই নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, পুজোর সময়ে যদি হাসপাতালে চিকিৎসকদের অনুপস্থিতির কারণে কোনও প্রসূতি মা বা নবজাতকের মৃত্যু ঘটে অথবা চিকিৎসায় গাফিলতি প্রমাণিত হয়, তবে দোষী চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু চিকিৎসকরাই নয়, প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রধানদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল ও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের কাছে এই সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে। বিগত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েই এবার নতুন করে এই নির্দেশিকা জারি করেছে স্বাস্থ্য দপ্তর। বিশেষ করে পুজোর সময় হাসপাতালে শিশু ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য দপ্তরের ১১ দফা নির্দেশিকার মূল দিকগুলো:

১. মেডিক্যাল কলেজে সহকারী অধ্যাপক পদমর্যাদার একজন চিকিৎসককে ২৪ ঘণ্টা শারীরিক উপস্থিতি রাখতে হবে। জেলা হাসপাতালে উপস্থিত থাকতে হবে সিনিয়র স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞকে।
২. সিজার অপারেশনের সময় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। জেলা হাসপাতালগুলিতে মেডিক্যাল অফিসারেরও উপস্থিতি থাকতে হবে।
৩. স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ, শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ও অ্যানেসথেসিওলজিস্টদের নাম, মোবাইল নম্বর ও ডিউটি রোস্টার স্বাস্থ্য ভবনে আগাম দুই মাসের জন্য জমা দিতে হবে।
৪. হাসপাতালের পিপিপি মোডে চলা ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখতে হবে।
৫. জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকরা কন্ট্রোল রুম থেকে পুরো পরিস্থিতির উপর নিয়মিত নজর রাখবেন।
৬. শিশু রোগ বিশেষজ্ঞদের নিয়মিতভাবে এসএনসিইউ-তে নজরদারি করতে হবে।
৭. পুজোর সময়ে পর্যাপ্ত অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৮. ব্লাড ব্যাঙ্কগুলোও পুজোর সময় খোলা রাখতে হবে, যাতে জরুরি রক্তের সংকট না হয়।
৯. জীবনদায়ী ও অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের পর্যাপ্ত যোগান প্রতিদিন বজায় রাখতে হবে।
১০. প্রয়োজনে হাসপাতালের উপাধ্যক্ষরা হঠাৎ পরিদর্শন (সারপ্রাইজ ভিজিট) করতে পারেন।
১১. চিকিৎসকদের ‘অন কল রেসপন্স’ নিশ্চিত করতে হবে, প্রয়োজনে ১০ মিনিটের মধ্যে হাজিরা দিতে হবে। ঘোষিত ছুটি থাকলেও স্ত্রী ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ এবং অ্যানেসথেসিওলজিস্টরা নিজের এলাকা ছেড়ে বাইরে বা বিদেশ ভ্রমণে যেতে পারবেন না।

স্বাস্থ্য দপ্তর স্পষ্ট জানিয়েছে, নির্দেশিকা কার্যকর হওয়ার পরও যদি কোনও অনিয়ম বা গাফিলতি ধরা পড়ে, তবে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক এবং বিভাগীয় আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top