পুলিশের স্টিকার লাগানো গাড়িতে অপহরণ, ডোমকলে গ্রেপ্তার সিভিক ভলান্টিয়ারসহ সাত জন

পুলিশের স্টিকার লাগানো গাড়িতে অপহরণ, ডোমকলে গ্রেপ্তার সিভিক ভলান্টিয়ারসহ সাত জন

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram




মুর্শিদাবাদ – পুলিশের স্টিকার লাগানো গাড়িতে করে এক ব্যক্তিকে অপহরণের অভিযোগে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল মুর্শিদাবাদের ডোমকলে। বুধবার গভীর রাতে ডোমকল থানার পুলিশই গ্রেপ্তার করেছে অভিযুক্ত সাত জনকে, যাদের মধ্যে রয়েছেন থানারই এক সিভিক ভলান্টিয়ার। বৃহস্পতিবার ধৃতদের বহরমপুর আদালতে তোলা হচ্ছে পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানিয়ে। অপহৃত লালন শেখকে উদ্ধার করা হয়েছে নদিয়ার চাপড়া থানা এলাকার এক গ্রাম থেকে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অপহৃত লালন শেখ ডোমকল থানার বাজিতপুর কর্মকারপাড়ার বাসিন্দা। পেশায় তিনি চাষবাস ও জমি কেনাবেচার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরেই এই অপহরণের ঘটনা। পুলিশ ইতিমধ্যে উদ্ধার করেছে অপহরণের জন্য ব্যবহৃত গাড়িটি, যা ডোমকল টাউন তৃণমূল কংগ্রেসের যুব সভাপতি সাজিবুল খান বাপনের নামে নথিভুক্ত।

তবে এক শীর্ষ পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, গাড়িটি সাজিবুলের হলেও ঘটনাস্থলে তিনি উপস্থিত ছিলেন না। তাঁর দাবি, বেড়াতে যাওয়ার নাম করে কয়েকজন ব্যক্তি গাড়িটি ভাড়ায় নিয়েছিল। বুধবার বিকেলে ডোমকলের কুঠির মাঠে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠান চলাকালীন ওই পুলিশ স্টিকার লাগানো গাড়িটি এলাকায় আসে। উপস্থিত লোকজনের চোখের সামনেই কয়েকজন ব্যক্তি লালন শেখকে জোর করে গাড়িতে তোলে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, গাড়িতে থাকা ব্যক্তিরা নিজেদের পুলিশ বলে পরিচয় দেয় এবং মুহূর্তের মধ্যে এলাকা ছেড়ে পালায়।

এরপরেই লালনের পরিবারের সদস্যরা থানায় গিয়ে খোঁজ নিলে পুলিশ জানায়, তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে ডোমকল থানার পুলিশ রাতেই তদন্তে নামে এবং মাঝরাতে চাপড়া থানা এলাকা থেকে লালনকে উদ্ধার করে। পাশাপাশি গ্রেপ্তার করা হয় ছয় দুষ্কৃতী-সহ থানার সিভিক ভলান্টিয়ার হুমায়ুন কবীরকে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হুমায়ুন কবীর হলেন ডোমকলের প্রয়াত তৃণমূল বিধায়ক জাফিকুল ইসলামের ভাইপো।

হুমায়ুনের বাবা রেজাউল শেখ বলেন, “লালনদের সঙ্গে আমাদের দূর সম্পর্ক আছে। পুলিশ আমার ছেলেকে হঠাৎ ধরে নিয়ে যায়। কিন্তু সে কীভাবে এই ঘটনায় জড়িয়ে পড়ল, আমি জানি না।” তবে পুলিশের অনুমান, লালনের প্রায় ৮ বিঘা জমি হাতানোর পরিকল্পনাই ছিল অপহরণের পেছনে মূল উদ্দেশ্য। জমি রেজিস্ট্রি করতে অস্বীকার করায় তাঁকে ভয় দেখাতে অপহরণ করা হয় বলে সন্দেহ।

ঘটনায় তৃণমূল যুব কংগ্রেসের নাম জড়িয়ে পড়ায় এলাকায় রাজনৈতিক চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। জেলা তৃণমূল যুব সভাপতি ভীষ্মদেব কর্মকার বলেন, “এই ঘটনায় দলের কোনও যোগ নেই। পুলিশ প্রশাসন নিজের মতো তদন্ত চালাচ্ছে।” ডোমকল ও আশপাশে এখন প্রশ্ন একটাই— পুলিশের গাড়ি ব্যবহার করে অপহরণ, এতে জড়িত কারা এবং এর পেছনে কতটা প্রভাব খাটানো হয়েছে?

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top