অফবিট -প্রাণীজগতের আয়ু নিয়ে রহস্যের শেষ নেই। বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর সবচেয়ে কম আয়ুস্কালের প্রাণী মেফ্লাই, যার জীবন মাত্র ৫ মিনিট থেকে সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টা। এই ক্ষুদ্র পতঙ্গের জীবনচক্র এতটাই সংক্ষিপ্ত যে জন্মের পরই তারা প্রজনন করে মারা যায়। বিজ্ঞানী ড. রাহুল সেন বলেন, “মেফ্লাইয়ের জীবনচক্র প্রকৃতির দ্রুততম।এটি প্রজননের জন্যই জন্মায় এবং লক্ষ্য পূরণের পর তাদের জীবনাবসান ঘটে।” মেফ্লাইয়ের পর তালিকায় রয়েছে গ্যাসট্রোট্রিচ, একটি মাইক্রোস্কোপিক সামুদ্রিক প্রাণী, যা বাঁচে মাত্র কয়েক দিন, এবং ড্রোন পিঁপড়ে, যার আয়ু কয়েক সপ্তাহ।
অন্যদিকে, প্রাণীজগতে দীর্ঘায়ু প্রাণীদের গল্পও বিস্ময়কর। গ্রিনল্যান্ড হাঙ্গর, যারা আর্কটিক ও উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে বাস করে, ২৭২ থেকে ৫১২ বছর বাঁচতে পারে। ধীর বিপাক এবং সম্ভাব্য জিনগত মেরামত ক্ষমতা তাদের এত দীর্ঘায়ু করে। রকফিশ, বিশেষত সেবাস্টেস অ্যালেউটিয়ানাস, ২০৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে রেকর্ড গড়েছে। বিজ্ঞানীরা বলেন, “ধীর বিপাক এবং সমুদ্রতলের নিরাপদ আবাস রকফিশের দীর্ঘায়ুর কারণ।” আরও আশ্চর্যজনক হলো বোহেড তিমি, যারা ২৬৮ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে এবং ২০০ টন ওজনের হয়।কিন্তু সবচেয়ে রহস্যময় প্রাণী হলো ‘অমর’ জেলিফিশ, টারিটোপসিস ডোরনি। এরা ‘ব্যাকওয়ার্ড এজিং’-এর মাধ্যমে বারবার তরুণ হয়ে ফিরে আসে। বিজ্ঞানী ড. মীনা রায় বলেন, “জেলিফিশের এই ক্ষমতা জীববিজ্ঞানের অজানা দ্বার উন্মোচন করছে।” মেফ্লাইয়ের ক্ষণস্থায়ী জীবন থেকে জেলিফিশের অমরত্ব-প্রকৃতির এই বৈচিত্র্য মানুষকে বিস্মিত করে। তবে, এই প্রাণীদের জীবনচক্র সম্পূর্ণভাবে বোঝা এখনো বিজ্ঞানীদের জন্য চ্যালেঞ্জ। প্রকৃতির এই রহস্য উন্মোচনে গবেষণা অব্যাহত রয়েছে।
