পেইন ম্যানেজমেন্ট নিয়ে নতুন দিশা দেখাচ্ছে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। রাজ্য সরকারের উদ্যোগের কলকাতার পরে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এবার থেকে চালু হলো পিএম এন্ড আর বিভাগ। যার হাত ধরে মিলবে ফ্লুরোস্কোপি এবং পেইন ইন্টারভেনশনের মতো অত্যাধুনিক পরিষেবা। যা ক্যানসারের মতো দূরারোগ্য ব্যাধির যন্ত্রনা নিরাময়ের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নেবে।
স্ট্রোক, নার্ভের মতো দীর্ঘমেয়াদি জটিল সমস্যার ক্ষেত্রে পেইন ম্যানেজমেন্ট একটা বড় চ্যালেঞ্জ। রাজ্য সরকারের ২কোটি টাকা অর্থানুকুল্যে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মঙ্গলবার পিএম এন্ড আর বিভাগটি চালু করা হলো। রুগী পরিষেবার মান্নোয়নে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে অত্যাধুনিক সব যন্ত্রপাতি দিতে সাজিয়ে তোলা হয়েছে পুরো বিভাগটি। এদিন উত্তরবঙ্গ জনস্বাস্থ্য আধিকারিক সুশান্ত রায়, উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিৎ সাহা, সুপার সঞ্জয় মল্লিক, ডিন সন্দ্বীপ সেনগুপ্ত ও অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিন জগদীশ বিশ্বাস সহ ডেপুটি সুপার সহ বিভিন্ন বিভাগীয় চিকিৎসক অধ্যাপকেদের উপস্থিতিতে উদ্বোধন করা হয় বিভাগটি।
পিএমএন্ড আর বিভাগিয় প্রধান পি পি পান জানান প্রতিদিন ২০০-৩০০রুগীকে পরিসেবা প্রদান করা সম্ভব। তিনি বলেন শারীরিক অনুশীলন থেকে ইলেকট্র থেরাপির (ইউএসটি) এর সঙ্গে জটিল যন্ত্রনা প্রশমনে রুগীরা লেজার ট্রিটমেন্ট, ক্রিওথেরাপি মতো অত্যাধুনিক পরিষেবা এখানে পাবেন। যারজন্য আগে কলকাতা দৌঁড়তে হতো। আবার বেসরকারি হাসপাতালগুলি এই চিকিৎসায় লক্ষ লক্ষ্য টাকা আদায় করে। তবে এখন বিনামূল্যে মেডিকেলে পরিসেবা মিলবে রুগীদের। এছাড়া নার্ভের জটিল রোগ ও যন্ত্রণার চিকিৎসায় আধুনিক আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিনের ফ্লুরোস্কোপি, নার্ভ জেনারেটিং যন্ত্রের মাধ্যমে রুগীর শরীরের আভ্যন্তরীণ ক্ষতস্থানে ওষুধ প্রদান করা ও নিরাময় করে তোলা সম্ভব হবে। এতে যন্ত্রনাকাতর রুগীরা সহজেই যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পাবেন। তিনি স্ট্রোকের রুগীর ক্ষেত্রে একটি গভীর সমস্যার বিষয়ও সামনে তুলে ধরেন।
তিনি জানান উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্ট্রোক নিয়ে রুগী ভর্তি হলে প্রথম পর্যায়ের চিকিৎসার পর স্বাভাবিকভাবেই হাসপাতাল শয্যা ছেড়ে দিতে হয়। ডাঃ পান বলেন স্ট্রোকের রুগীর অবস্থা স্থিতিশীল করার পর কিছুটা সুস্থ হতে অনুশীলন ও বিভিন্ন যন্ত্রপাতির মাধ্যমে চিকিৎসা করে অনেকটা সময় লাগে। সেক্ষেত্রে একটি শয্যা এক থেকে দেড় মাস যাবৎ আটকে রাখা সম্ভব নয় তাতে অন্যান্য রুগীর সমস্যা হবে। বাড়িতে শয্যাশায়ী অবস্থায় রেখে পরবর্তীতে নানা কারণে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে এ ধরনের রুগীদের। তবে এখন এধরনের রুগীদের একমাস এখানে চিকিৎসা হলে তাদের অনেককেই হাঁটা পথে ফেরানো সম্ভব হবে।
জনস্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সুশান্ত রায় বলেন এই বিভাগটি চালু হলো। প্রচুর মানুষ এতে উপকৃত হবেন। তিনি আরও বলেন শুধু বহির্বিভাগের দিবা পরিষেবা নয় আগামীতে ইন্ডোর পরিষেবার পরিকল্পনা রয়েছে। তার জন্য হাসপাতাল চত্বরে ৪০০০স্কোয়ার ফিট জমির প্রয়োজন। তারসঙ্গে এই বিভাগের ইন্ডোর পরিসেবা চালু করতে হলে বেশ কিছু নার্সিং ও টেকনিক্যাল কর্মীনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।আগামীতে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় স্নাতকোত্তর পঠন পাঠন চালুর বিষয়েও ভাবনা চিন্তা করছে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। এদিকে মেডিকেল কর্তৃপক্ষ জানান নিঃসন্দেহে এটিকে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মুকুটে নয়া পালক জুড়ছে বলেই ধরা যায়। মেডিকেলের ক্যানসারের বিশিষ্ট চিকিৎসক তথা বিভাগীয় প্রধান জানান ক্যানসারের ক্ষেত্রে পেইন ম্যানেজমেন্ট খুব প্রয়োজন।ইন্টার ভেনশন পেইন এর ব্যবস্থা ছিলনা এতদিন তা এবারে চালু হলো।