পৌরকর্মীদের প্রতি চরম অবিচার ও বঞ্চনার প্রতিবাদে এবং ১৩ দফা দাবির সমর্থনে বিক্ষোভ সমাবেশের প্রস্তাব

পৌরকর্মীদের প্রতি চরম অবিচার ও বঞ্চনার প্রতিবাদে এবং ১৩ দফা দাবির সমর্থনে বিক্ষোভ সমাবেশের প্রস্তাব

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

পৌরকর্মীদের প্রতি চরম অবিচার ও বঞ্চনার প্রতিবাদে এবং ১৩ দফা দাবির সমর্থনে বিক্ষোভ সমাবেশের প্রস্তাব।পশ্চিমবঙ্গের পৌরকর্মী আন্দোলনের যৌথ মঞ্চ আছত এই সমাবেশ উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে, রাজ্যের মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন ও পৌরসভাগুলিতে কর্মরত স্থায়ী, অস্থায়ী, ঠিকা শ্রমিক কর্মচারী এবং পেনশনারদের নানা সমস্যা ও ন্যায়সঙ্গত কিছু দাবির মীমাংসার ক্ষেত্রে বাল সরকারের উদাসীনতা ও অসহযোগীতা। শ্রমিক-কর্মচারীদের চাকুরীগত সমস্যা ও দাবির বিষয়গুলি বারে বারে রাজ্য সরকারকে জানানো হলে আলোচনার মধ্য দিয়ে সম্মানজনক মীমাংসার উদ্দ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে শ্রমিক-কর্মচারী ও পেনশনাররা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

 

কর্পোরেশন ও পৌরসভাগুলিতে স্থায়ী কর্মীর সংখ্যা ক্রমাগত কমছে। অথচ শূন্য পদগুলিতে নিয়োগ করা হচ্ছে না। বিপরিতদিকে অস্থায়ী ও ঠিকা শ্রমিকরা স্থায়ী ধরনের যাবতীয় কাজ করে চলেছেন। রাজ্য সরকারের এবং পৌর কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে স্থায়ী/অস্থায়ী ও ঠিকা শ্রমিকরা নাগরিকদের কাছে যাবতীয় পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। অথচ শ্রমিক-কর্মচারীরা অবিচার ও বঞ্চনার শিকার। অস্থায়ী ও ঠিকা শ্রমিকদের কাজের সময়কাল ন্যূনতম ১০ বছর, ঊর্ধ্বে ২০ বছরের বেশি।

 

এই অংশের শ্রমিকরা শহর পরিচ্ছন্ন রাখা, হাইড্রেন পরিষ্কার রখ্য, পানীয় জল সরবরাহ, শহর আলোকিতকরণ, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, পৌর হাসপাতাল ও অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবার কাজ, নানা ধরনের গাড়ি চালানোর কাজ, অফিস ও গোডাউনের নিরাপত্তা রক্ষা, অফিসের পিয়োন, করণীক এমনকি কম্পিউটার অপারেটরের কাজ করে চলেছেন। এদের সামান্য বেতন ছাড়া অন্য কোনো সুবিধা নেই। এই অংশের শ্রমিকরা যখন ৬০ বছর বয়সে চাকরি থেকে অবসর নিচ্ছেন তখন তাদের খালি হাতে চোখের জল ফেলতে ফেলতে বাড়ি যেতে হচ্ছে। সে এক অমানবিক পরিস্থিতি।

 

খুবই উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার বিষয় যে, রাজ্যের অর্থদপ্তর অস্থায়ী, দৈনিক মজুরির ও ঠিকা শ্রমিকদের ক্ষেত্রে বেতন ও সুযোগ-সুবিধা বিষয়ক একের পর এক আদেশনামা প্রকাশ করেছে। সর্বশেষ আদেশনামা নং-1033-F(P2) dated 08/02/2019। কিন্তু পৌরদপ্তর থেকে ঐ আদেশনামা কার্যকরী করা হয়নি। ফলে রাজ্য অর্থ দপ্তরের ঘোষিত সুবিধাগুলি থেকে বঞ্চিত।

 

হাচ্ছেন অস্থায়ী, দৈনিক মজুরির ও ঠিকা শ্রমিকরা। কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির ফলে যখন জিনিসপত্রের মূলাবৃদ্ধি অবিরাম গতীতে হয়েই চলেছে, তখন মূল্যবৃদ্ধির ক্ষতিপুরণ হিসেবে মহার্ঘভাতা পাওয়ার ন্যায়সংগত অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শ্রমিক কর্মচারীরা ও প্রবীন নাগরিক পেনশনাররা। এই মুহূর্তে বকেয়া মহার্ঘভাতার পরিমান ৩১ শতাংশ। বামফ্রন্ট সরকারের সময়কালে বছরে দুবার মহার্ঘভাতা পেতেন শ্রমিক-কর্মচারীরা। রাজ্যের বর্তমান সরকার মহার্ঘভাতা না দেওয়ার থেকে। মনোভাবে প্রকাশ করেছে। বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট স্পষ্ট ভাষায় নির্দেশ দিয়েছে ৩ মাসের মধ্যে মহার্ঘভাতা মিটিয়ে দিতে হবে। বামফ্রন্ট সরকারের সময়কালে কর্মরত অবস্থায় মারা যাওয়া কর্মীর পরিবারের একজন সদস্যের চাকরি পাওয়ার সুযোগ চালু হয়েছিল। (Died in harness) যার ফলে শত শত পরিবার উপকৃত হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান রাজ্য সরকারের শ্রম দপ্তর এক আদেশনামার মাধ্যমে সেই অর্জিত।

 

অধিকার/সুযোগ বাতিল করেছে। ফলে এই সময়কালে মারা যাওয়া অনেক কর্মীর পরিবারের চাকরির আবেদন ডি এল বি অফিসে অমীমাংসিত

অবস্থায় আটকে আছে।

বিভিন্ন মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন এবং পৌরসভার শ্রমিক-কর্মচারীরা চাকরী থেকে অবসরগ্রহণের পর গ্র্যাচুইটি ও পেনশন পাবেন এটাই

আইনের নির্দেশিকা। কিন্তু কলকাতা কর্পোরেশন সহ বিভিন্ন পৌরসভার অবসরপ্রাপ্ত প্রবীন নাগরিকরা নির্দিষ্ট সময়ে গ্রাচুইটি ও পেনশন পাচ্ছেন না।

ফলে পেনশনাররা আর্থিক দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাছাড়া জরুরি বিভাগের কর্মীদের ছুটি বৃদ্ধি, সাফাই কর্মীদের জন্য যাবতীয় নিরাপত্তামূলক

ব্যবস্থা, সকলের জন্য মেডিক্রেন, শূন্য পদ পুরণ, সিনিয়রিটির ভিত্তিতে এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রমোশন, পৌর এলাকার উন্নয়নমূলক কাজের সঙ্গে

নাগরিকদের যুক্ত করা ইত্যাদি দাবিগুলি-সহ ১৩ দফা দাবি পৌর দপ্তরে পেশ করা হয়েছে।

 

আরও পড়ুন – টেক সাপোর্টের নাম করে জার্মানির বাসিন্দাদের, বিদেশি মুদ্রায় লক্ষাধিক টাকা প্রতারণা, গ্রেফতার ৪

 

এই সমাবেশ উল্লেখ করতে চায় যে, পৌরকর্মী আন্দোলনের যৌথ মঞ্চের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে দাবিগুলি নিয়ে এপ্রিল মাস থেকে বিগত তিন মাস রাজ্যের সব কর্পোরেশন ও পৌরসভাগুলির কর্তৃপক্ষের নিকট দাবিসনদ পেশ এবং আন্দোলনের পাশাপাশি ইউনিয়নগুলির পক্ষ থেকে পৌর দপ্তরে চিঠি পাঠিয়ে দাবিগুলির মীমাংসার আবেদন আনানো হয়েছে। পরবর্তী সময়ে জেলাশাসকদের কাছে ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষ ও জেলাশাসকের তরফ থেকে কি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা জানা যায়নি। পৌরকর্মীদের ন্যায়সংহত সাবিগুলির মীমাংসার ক্ষেত্রে পৌর কর্তৃপক্ষের অসহযোগীতা এবং রাজ্য সরকারের উদ্যোগহীনতায় রাজ্যের

পৌরকর্মীদের মধ্যে তাঁর ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। এই সমাবেশ থেকে আমরা দাবি জানাচ্ছি, অবিলম্বে ন্যায়সংগত দাবিগুলির সম্মানজনক

মীমাংসা করতে হবে। অন্যথায় রাজ্যের পৌরকর্মীরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে নামতে বাধ্য হবেন।

আন্দোলনের আগামী কর্মসূচির প্রস্তাব

(১) সমাবেশ থেকে গৃহীত প্রস্তাব পৌরমন্ত্রী ও মুখমন্ত্রীকে পাঠানো হবে।

 

 

(২) দাবিগুলির মীমাংসার জন্য জুলাই মাস জুড়ে কর্পোরেশন ও পৌরসভার শ্রমিক-কর্মচারীদের স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান সংগঠিত করা হবে। (৩) হাইকোর্টের নির্দেশের ভিত্তিতে অবিলম্বে বকেয়া মহার্ঘভাতা প্রধানের দাবি নিয়ে ৩০ জুন রাজ্যের সব কর্পোরেশন ও পৌরসভায় গেট তা করা হবে। (8)গস্ট মাসে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর নিকট এবং মহাকরণে পৌরমন্ত্রীর নিকট সংগৃহীত সাক্ষর-সহ পরিপত্র পেশ করা হবে। ঐ দিন শিয়ালদা

থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের মিছিল হবে।

পশ্চিমবঙ্গের পৌরকর্মী আন্দোলনের যৌথ মঞ্চ

 

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top