পৌষ মেলা নিয়ে শুরু হয়েছে আবার নতুন বিতর্ক। মাঝেমধ্যেই বিশ্বভারতী রূপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী তার বক্তব্যের মাধ্যমে প্রকাশ করার চেষ্টা করেন তিনি বড্ড মহান উপাচার্য এবং উদারনীতিতে বিশ্বাসী। কিন্তু যখনই বাংলার বাঙালিয়ানা কোন উৎসবের আয়োজনের সময় আসে তখনই তিনি বাঙালি বিদ্বেষী মনোভাব নিয়ে উৎসবকে বানচাল করার খেলায় মেতে উঠেন।
এমনই অভিযোগ উঠছে বিশ্বভারতীর অন্দরমহলে।উপাচার্যের শাস্তির ভয়ে প্রকাশ্যে চাইছে না কেউ। আসন্ন পৌষমেলা এবারেও জটিলতা তৈরি হয়েছে। দিন কয়েক আগে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট চিঠিতে বেশ কয়েকটি কারণ দেখিয়ে জানিয়ে দেয় তারা আয়োজন করতে অপারক। পাশাপাশি তারা জানায় পৌষ মেলা আয়োজন করুক রাজ্য সরকার।
এই মর্মে বোলপুর পৌরসভা কে শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের তরফে অনুরোধ করা হয়। পাশাপাশি বোলপুর পৌরসভা চাইছে পৌষ মেলা আয়োজিত হোক মেলার মাঠে। তাকে বোলপুর পৌরসভা সব রকমের সহযোগিতা করতে রাজি। বোলপুর পৌরসভার পুর প্রধান পর্ণা ঘোষ জানিয়েছেন , বৃহস্পতিবার বিশ্বভারতীকে পৌরসভা তরফে একটি চিঠি দিয়ে পৌষ মেলা আয়োজন করার জন্য অনুরোধ করা হবে। তারপর আমরা উপাচার্যের পৌষ মেলা নিয়ে সদর এর অপেক্ষায় থাকবো। যদি একান্তই বিশ্বভারতী পৌষ মেলা আয়োজন করতে ব্যর্থ হয় তবে আমরা ডাকবাংলা মাঠে গতবারের মতো বিকল্প পৌষ মেলা আয়োজন করব।
বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চের সভাপতি সামিরুল ইসলাম জানিয়েছেন , আমরা প্রত্যেকেই চাই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট কে সহযোগিতা করে পৌষমেলা আয়োজন করুক। যদি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পৌষমেলা আয়োজন করতে অনিহা দেখায় তবে আমরা পৌষমেলা করতে রাজি। বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সুনীল সিং এবং হস্তশিল্পী সমিতির পক্ষে আমিনুল হুদা প্রত্যেকেই দাবি করেছেন অতীতের মত মেলার মাঠেই পৌষমেলা আবার হোক। শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট যে সমস্যার কারণগুলো দেখিয়ে পৌষ মেলা না করতে চাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে তা সামান্য চেষ্টাতেই সমাধান করা যায়।
উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর অঙ্গুলি হেলনেই শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট মেলা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেই আশ্রমিকদের। মেলার দায় রাজ্য সরকারের উপরে ঠেলে দিয়ে নিজে দায়মুক্ত হতে চাইছে , এমনটাই দাবি প্রবীন আশ্রমিক সুবোধ মিত্রের , তিনি বলেন একটি বিষয়ে কলকাঠি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সমস্ত জিনিস পন্ড করে দেওয়ায় উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর প্রধান এবং একমাত্র লক্ষ্য।
এই গ্রামীণ মেলা আমাদের রাজ্যের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের আস্তানা। কারণ পৌষ মেলায় পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটক বেড়াতে আসেন। পশ্চিমবঙ্গের শিল্প , কৃষ্টি, সৃষ্টি কে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দেওয়াই গুরুদেব ঠাকুরের উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী আরএসএসের এজেন্ট হিসেবে বিশ্বভারতী কে রাজনৈতিক চর্চা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলেছে। যার বিরোধিতা করতে গিয়ে বিশ্বভারতীর বহু ছাত্র-ছাত্রী এবং অধ্যাপক অধ্যাপিকাদের শাস্তির কোপে পড়তে হয়েছে।
আরও পড়ুন – ৪ দফা দাবী নিয়ে ডেপুটেশন অল ইন্ডিয়া খেতমজদুর সংগঠনের
প্রত্যেকদিন কোন না কোন অধ্যাপকের উপর নেমে আসছে বরখাস্তের খাড়া। বৃহস্পতিবার বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের বলাকা গেটের সামনে পৌষমেলা পূর্ব নির্ধারিত মেলার মাঠে করার দাবিতে জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছে। বিশ্বভারতীর আলাপিনী মহিলা সমিতির সদস্য মনীষা মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন , আমরা মর্মাহত , গত দুবছর মহামারী করোনার জন্য বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ঝুঁকি নেয়নি মানুষের স্বার্থে , কিন্তু এবছর সেরকম কোন সমস্যা নেই।
পৃথিবীর সমস্ত কিছু স্বাভাবিক ছন্দে চলছে। তাহলে কেন মেলার মাঠে পৌষ মেলা আয়োজিত করতে পারবে না বিশ্বভারতী , এটা অত্যন্ত অন্যায় হচ্ছে বিশ্বভারতী কে যারা স্নেহ করে ভালবাসে তাদের সাথে। আমরা চাই উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর শুভবুদ্ধি উদয় হোক , এবং তিনি সুষ্ঠুভাবে পৌষমেলার মাঠে পৌষ মেলা আয়োজন করার অনুমতি দিক শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট কে। শুরু হয়েছে