প্রতিবারের মতো এবারেও রামমন্দিরে রামের পায়ে পুজো দিয়ে মহাসমারোহে বর্ণাঢ্য মিছিল বের হল হাওড়াতে। রামনবমীর বিশেষ দিনটি প্রত্যেক হিন্দু ধর্মালম্বী মানুষের কাছে অন্যতম পুণ্য দিন। রবিবার গোটা রাজ্যজুড়েই পালিত হচ্ছে দিনটি। এই বছর হাওড়াতে মহা ধুমধাম করে রামনবমীর এই মিছিল চলছে। প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের পর থেকেই প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে রামনবমীর উৎসব পালন করা হচ্ছে হাওড়া শহর ও গ্রামীণ এলাকাতেও। পাঁচলতেও ধর্মীয় মিছিল ও প্রচুর সংখ্যায় জন সমাগম হয়। এই অনুষ্ঠানে হাজার হাজার শ্রদ্ধালু মানুষ মিছিলে অংশগ্রহণ করেন বলেই সংগঠকদের দাবি। হাওড়ার শিবপুর থানার অন্তর্গত অবনী মল এর কাছ থেকে হাওড়া থানা অন্তর্গত হাওড়া ময়দান পর্যন্ত এই বিরাট মিছিলটি শোভাযাত্রা সহ বের হয়। মিছিলে রয়েছে ঢাউস ট্যাবলো।
এই ট্যাবলো অযোধ্যার শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের প্রতিকৃতি অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে। এর পাশাপাশি ওই মিছিলেই রয়েছে ৮ ফুট উঁচু শ্রী রাম ঠাকুরের মূর্তি ও ৭ ফুট উঁচু হনুমান ঠাকুরের মূর্তি। মিছিলের আয়োজন নিয়ে অঞ্জনিপূত্রা ফাউন্ডার মেম্বার সুরেন্দ্র ভার্মা জানালেন, বিগত কয়েক বছর ধরে তারা পশ্চিম বাংলার বুকে প্রথম অঞ্জনিপুত্র সেনার তরফ থেকে মিছিল বের করা হয়। এখন গোটা পশ্চিমবাংলার বহু জায়গায় রামনবমীর মিছিল বের হয়। কিন্তু সবচেয়ে পুরনো ও বিশাল মিছিল বের করার রেকর্ড রয়েছে হাওড়ার অঞ্জনিপুত্র সেনার। বিগত দু বছরে রামনবমীর মিছিল বের না করে শুধুমাত্র পূজা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত করে শেষ করা হয়েছিল। কিন্তু এই বছর কেন্দ্র সরকার রাজ্য সরকারের তরফ থেকে করোনার সমস্ত রকম স্বাস্থ্যবিধি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে।
তাই এই দু’বছরের খামতি পূরণ করছে অঞ্জনিপুত্র সেনা। তারা এই বছর বিভিন্ন ধরনের ট্যাবলোর মাধ্যমে হাওড়া শহরবাসীকে দেখাতে চাইছেন সনাতনী ধর্মের ঐতিহ্য। অযোধ্যা রাম জন্মভূমি মন্দিরের আদলে নির্মাণ করা হয়েছে সেই মন্দিরের প্রতিকৃতি। যা আকারে ও আয়তনে আঠার থেকে কুড়ি ফুট বাই পনেরো ফুট ও উচ্চতা প্রায় ১০ ফুট।। রাম মন্দিরের আদলে তৈরি এই প্রতিকৃতি। প্রায় ৩৫ জন শ্রমিক মন্দির নির্মাণের কাজে হাত লাগিয়েছেন বলেই সংগঠনের পক্ষ থেকে জানা যাচ্ছে। এর পাশাপাশি তিনি জানান, এই মিছিলে এইবার নতুন করে প্রায় আট ফুট মাটির শ্রী রাম ঠাকুরের মূর্তি ও সাত ফুট হনুমান ঠাকুরের মূর্তি তৈরি করা হয়েছে।
আর ও পড়ুন মহিলাদের নিরাপত্তায় বসিরহাট উইনার্স বাহিনী
তিনি জানান, বিগত কয়েক বছর প্রায় কয়েক হাজার মানুষ এই মিছিলে যোগ দিয়েছেন। তিনি দাবি জানান, শুধু হাওড়া শহরে তাদের কয়েক হাজার সদস্য রয়েছেন। মিছিলে তারা আছেন। তবে মূল জমায়েত করেন হাওড়া শহর এলাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সনাতন ধর্মের উপর বিশ্বাসী সাধারণ মানুষ। তবে তার জন্য কাউকে আলাদা করে কোনো রকম আমন্ত্রণ জানানো হয় না। শুধু সংস্থার পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়া ও বিভিন্ন স্থানে ব্যানার পোস্টার লাগিয়ে প্রচার চালানো হয়। রামনবমীর আসার আগে থেকে প্রচারের মাধ্যমে বিপুল সংখ্যায় মানুষ মিছিলে যোগ দিতে আসেন দূর-দূরান্ত থেকে।
পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে অনুমতির নেওয়ার জন্য প্রায় একমাস আগেই প্রশাসনের কাছে দরখাস্ত জমা দেয়া হয়েছে। তাদের অনুমান, বিগত বছরগুলোর মতোই এই বছরও তারা অনুমতি পাবেন। অঞ্জনি পুত্র সেনার তরফ থেকে এই বিরাট মিছিল ও শোভাযাত্রাতে বহু সংখ্যক মানুষ যোগ দিয়েছেন। তাদের হাতে ওঁ লেখা ধর্মীয় পতাকা ও ব্যানার পোস্টার রয়েছে।