ঝাড়খণ্ড – প্রতিবেশীর মারে মৃত্যু হয়েছে ৩৯ বছরের বিজ্ঞানী অভিষেক স্বর্ণকারের। মোহালির এই ঘটনা এখন সংবাদ শিরোনামে। পার্কিং নিয়ে ঝামেলার জেরে তাঁকে রাস্তায় ধাক্কা মেরে ফেলে মারধর করেছিল মন্টি নামের এক প্রতিবেশী যুবক। তাতেই মৃত্যু হয়েছে অভিষেকের।
তাঁর কিডনির রোগ ছিল এবং ডায়েলিসিস চলছিল। স্বাভাবিকভাবেই ছেলের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ মা। ঘটনার রাতে কী হয়েছিল, তা জানালেন তিনি।
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে অভিষেকের মা মালতী দেবী জানিয়েছেন, বাইক রাখা নিয়ে রোজ ছেলের সঙ্গে ঝামেলা হত কারও না কারও। যেখানেই বাইক রাখা হত, সেখান থেকে সরাতে বলা হত। এদিনও তাই হয়। তাঁর কথায়, ”মন্টি বাইক দেখে বলেছিল সেটা জ্বালিয়ে দেবে। আমরা ব্যাপারটায় গুরুত্ব দিইনি। তবে অভিষেক তাঁকে বোঝাতে গেছিল যে, অন্য জায়গায় বাইক রাখলে বের করতে সমস্যা হয়। এরপরই তর্ক শুরু হয়।”
মালতী দেবী বলেন, অভিষেকের বাবাও ঘটনাস্থলে ছিলেন। বাকি আরও কয়েকজন ছিল। কিন্তু তর্কাতর্কি করতে গিয়ে হাতাহাতি হবে কেউ ভাবেননি। তিনি জানিয়েছেন, ”ছেলে অভিযোগ জানানো কথা বলেছিল। তাতেই আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে মন্টি। বলে, ‘তুই অভিযোগ করবি?’ এরপরই ছেলেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে মারে। আমরা সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে গেছিলাম অভিষেককে। কিন্তু কিছু করা যায়নি।” তাঁর অভিযোগ, ছেলে যেখানেই বাইক রাখুক, সমস্যা হত। প্রতিদিন তাঁদের কথা শোনানো হত।
ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশের হাতে এসেছে। তাতে দেখা গেছে, বাইক পার্কিং নিয়েই দুজনের মধ্যে ঝামেলা লেগেছিল। ঘটনাস্থলে আরও অনেকে ছিলেন যারা মন্টিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গেছে। অভিষেকের পরিবার মন্টির কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছে। ইতিমধ্যে থানায় এফআইআর-ও করা হয়েছে তাঁদের তরফে। কিন্তু মন্টি এখন পলাতক। তাঁর খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
জন্মসূত্রে ঝাড়খণ্ডের ধানবাদের বাসিন্দা ছিলেন অভিষেক। বিজ্ঞানী হিসেবে অনেক নামও করেছিলেন। একাধিক আন্তর্জাতিক জার্নালে তাঁর কাজে নমুনা প্রকাশ পেয়েছে। বহুদিন সুইৎজারল্যান্ডে ছিলেন। কয়েক মাস আগেই দেশে ফিরে যুক্ত হয়েছিলেন মোহালির ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড এডুকেশন রিসার্চ বা আইআইএসইআর-এ। এমন বিজ্ঞানীর এইভাবে মৃত্যু মানতে পারছেন না কেউই।
