দেশ- ‘মান্যবর প্রধানমন্ত্রী জি…।’ — বাক্য শেষ করার আগেই বক্তাকে থামিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। হাসিমুখে বললেন, “আমাকে ভাই বলে সম্বোধন করুন, সামনেই তো ভাইফোঁটা।” বক্তা ছিলেন বিহার বিজেপির এক বুথ স্তরের মহিলা কর্মী, যিনি বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে বক্তব্য রাখার সুযোগ পান। প্রধানমন্ত্রী মনোযোগ দিয়ে তাঁর কথা শোনেন এবং বলেন, এবারের ভাইফোঁটা (ভাই দুজ) যেন প্রতিটি বুথে আয়োজন করা হয়, যেখানে বিজেপির ‘বোনেরা’ বিশেষ সম্মান পান। বিহারে ভাইফোঁটা পালিত হবে ২৩ অক্টোবর, আর তার আগেই অনুষ্ঠিত হবে দু’দফায় বিধানসভা ভোট—৬ ও ১১ অক্টোবর। ফল ঘোষণা ১৪ অক্টোবর। মোদীর ভাষায়, “এরপর আমরা সবাই মিলে নতুন করে দীপাবলি পালন করব।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভাইফোঁটা শুধু প্রতীকী উৎসব নয়, এটি নারী-পুরুষের পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সংহতির প্রতীক। তাই বিজেপির পুরুষ কর্মীরা যেন বুথ স্তরে বোনেদের সম্মান জানিয়ে ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান করেন। মহিলা ভোটারদের কাছে পৌঁছনোর এটি এক মানবিক উদ্যোগ বলেই মত প্রধানমন্ত্রীর।
বুধবারের এই ভার্চুয়াল বৈঠকে মোদী আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের রণকৌশল নিয়েও দিকনির্দেশ দেন। দিল্লি থেকে বিজেপির কয়েক হাজার বুথ কর্মীর সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন তিনি। নির্বাচিত কয়েকজন কর্মীর বক্তব্য শোনার পর তাঁদের প্রশ্নের উত্তরও দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি বুথকে এনডিএ-র দুর্গে পরিণত করতে হবে। শুধু বিজেপি নয়, পুরো এনডিএ-র প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করাই হবে বুথ কর্মীদের মূল দায়িত্ব।
তিনি জোর দেন কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলির প্রচারের উপর। বিশেষভাবে উল্লেখ করেন দুটি প্রকল্পের — ‘ড্রোন দিদি’ ও ‘লাখপতি দিদি’। ‘ড্রোন দিদি’ প্রকল্পে কৃষক পরিবারের মহিলারা সরকারি সহায়তায় ড্রোন ব্যবহার করে ফসলের নজরদারি চালাতে পারবেন। অন্যদিকে ‘লাখপতি দিদি’ প্রকল্পের লক্ষ্য হলো স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের বছরে এক লক্ষ টাকার আয় নিশ্চিত করা।
বক্তৃতায় মোদী সতর্ক করেন বিহারবাসীকে — লালু প্রসাদ ও রাবড়ি দেবীর আমলের জঙ্গল রাজ যেন আর ফিরে না আসে। মাওবাদী ও উগ্র বাম রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যকলাপ সম্পর্কেও তিনি যুব সমাজকে সাবধান থাকতে বলেন। বিজেপি কর্মীদের নির্দেশ দেন, যাতে কোনোভাবেই এই শক্তিগুলি নির্বাচনে মাথা তুলতে না পারে।
পুরো বৈঠক জুড়ে প্রধানমন্ত্রী বার্তা দেন ঐক্যের, আত্মবিশ্বাসের ও নারীশক্তির। তাঁর ভাষায়, “আমাদের প্রতিটি বুথ হবে উন্নয়ন ও সামাজিক সৌহার্দ্যের প্রতীক।”
