কৃষ্ণনগরের প্রাচীন ঐতিহ্য সাংয়ের দাবিতে পথ অবরোধ, অ্যাম্বুলেন্স মৃত শিশু, গ্রেপ্তার ৫ জন। রাস্তা অবরোধের ফলে অ্যাম্বুলেন্সেই মৃত্যু এক শিশুর। মুর্শিদাবাদ থেকে অ্যাম্বুলেন্সে কলকাতা যাওয়ার সময় কৃষ্ণনগরে পথ অবরোধের ফলে অ্যাম্বুলেন্সেই মৃত্যু এক শিশুর। ঘটনাস্থল থেকেই পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানার ঘটনা।
কৃষ্ণনগরে বহু প্রাচীন ঐতিহ্যের সাংয়ের দাবিতে পথ অবরোধ চলছে দীর্ঘক্ষণ। কোতোয়ালি থানার ঢিলছোড়া দূরত্বে পুরসভার মোড়ে, আসন্ন জগদ্ধাত্রী পুজোয় সাং বন্ধ রাখার প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়ে বিভিন্ন জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি এবং বারোয়ারির সদস্যরা।
প্রসঙ্গত সাং কথার অর্থ হল বাঁশের কাঠামো। আজ থেকে বহু বছর আগে বাঁশের কাঠামো করে বেয়ারার কাঁধে চড়ে ঠাকুর বিসর্জন দেওয়া হতো। সেই পৌরাণিক প্রথার নামই হলো সাং। মাত্র দু’দিন আগেই জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে বারোয়ারিগুলির সঙ্গে এক আলোচনাসভায় শোভাযাত্রাবিহীন পুজোর বিরুদ্ধে অনেকেই দ্বিমত পোষণ করেছিলেন।
কার্যত তাদের কথা মান্যতা না দিয়েই সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে মত বিক্ষুব্ধ বারোয়ারি সদস্যদের। ওই মিটিংয়ের পর ক্ষোভের আগুন ক্রমশ বাড়তে থাকে। দফায় দফায় চলে রাস্তা অবরোধ। গতকাল রাতেও চলছিল এই রাস্তা অবরোধ। পুলিশের অভিযোগ রাস্তা অবরোধ চলাকালীন অবরোধকারীদের মাঝখানে পরপর তিনটে অ্যাম্বুলেন্স আটকে পড়ে।
তার মধ্যে একটা অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে একটি শিশু ছিল, পথ অবরোধের কারণে সেই শিশুটি মারা গেছে। উল্টোদিকে অবরোধকারীরা পুলিশের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাদের দাবি অবরোধের সময় যত অ্যাম্বুলেন্স ছিল একধার থেকে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এক সেকেন্ডও তাড়া দেরি করে নি। প্রশাসন এটা মিথ্যা অভিযোগ করছে।
মৃত সফিকুল শেখের বাবার দাবি আমার ছেলে শফিকুল শেখ কে নিয়ে আমি মালদা থেকে কলকাতায় চিকিৎসার জন্য যাচ্ছিলাম। সেই সময় অবরোধ চলছিল। বহুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর আমার বাচ্চাটা মারা যায়। পরে বাচ্চাটাকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। এই মর্মে মৃতের পরিবারের তরফ থেকে কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ করা হয়।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে প্রশাসন 5 জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঘটনাস্থল থেকে। যা আজ অবরোধকারীদের কাছে দাবানল হয়ে ফিরে আসে। কৃষ্ণনগরের প্রধান রাস্তা রুদ্ধ করে দেওয়া হয়। পুরসভার মোড়ে প্রায় প্রত্যেক বারোয়ারির পক্ষ থেকে আগত সদস্যদের সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে জনরোষে পরিণত হয়। কোতোয়ালি থানার পুলিশ দীর্ঘ চেষ্টার পরেও অবরোধকারীদের বোঝাতে বা হটাতে পারেনি এখনও।
একদিকে বাড়ছে পুলিশ মোতায়েনের সংখ্যা, অন্যদিকে বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা বাড়ছে তার দ্বিগুণ। কার্যত রণক্ষেত্রর চেহারা নিয়েছে কৃষ্ণনগর। তাদের দাবি শান্তিপুরে কালী পুজোর বিসর্জন, উপনির্বাচন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচির সময় বহুবার উপেক্ষিত হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি। তাতেও প্রশাসন নির্বিকার। আর কৃষ্ণনগরের প্রতি দ্বিচারিতা করছে জেলা পুলিশ।
আর ও পড়ুন চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজোতেও বহাল থাকছে নাইট কারফিউ
এমনকি সাং বন্ধের জন্য হাইকোর্টের নির্দেশের কথা বলা হলেও তা এখনও দৃষ্টিগোচর হয়নি তাদের। গতবার অতিমারীর ভয়াবহতার কারণে বন্ধের সিদ্ধান্ত মেনে নিলেও এবছর তারা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। কোনওমতেই কৃষ্ণনগরের ঐতিহ্য তারা হারাতে দেবেন না। কার্যত তাদের কথা মান্যতা না দিয়েই সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে মত বিক্ষুব্ধ বারোয়ারি সদস্যদের।
পাশাপাশি বারোয়ারী গুলির আরও অভিযোগ তাদের অবরোধের কারণে গতকাল অ্যাম্বুলেন্সে বাচ্চা মারা যায়নি। পুলিশ সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ করে অবরোধকারীদের মনোবল ভেঙে দেওয়ার জন্য 5 জনকে গ্রেপ্তার করেছে। অবিলম্বে তাদেরকে ছেড়ে দিতে হবে।
এর পর ক্ষোভের আগুন ক্রমশ বাড়তে থাকে। যা আজ দাবানল হয়ে কৃষ্ণনগরের প্রধান রাস্তা রুদ্ধ করে দেয়। পুরসভার মোড়ে প্রায় প্রত্যেক বারোয়ারির পক্ষ থেকে আগত সদস্যদের সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে জনরোষে পরিণত হয়। কোতোয়ালি থানার পুলিশ দীর্ঘ চেষ্টায় বিপুল পরিমাণে অবরোধকারীদের বোঝাতে বা হটাতে পারেনি এখনও।👇🏻