নিজের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে চলন্ত ট্রেনের ইঞ্জিনে চাপা পড়া এক বৃদ্ধের প্রাণ বাঁচালেন কালিয়াগঞ্জ ট্রাফিক বিভাগের অফিসার খাদিমুল ইসলামের নেতৃত্বে সিভিক ভলান্টিয়ার টিম। মঙ্গলবার দুপুরে কালিয়াগঞ্জ স্টেশনে ঢোকার মুখে শ্রীমতি রেলসেতুর কাছে রাধিকাপুর-হাওড়া এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনে চাপা পড়েন এক বৃদ্ধ। কালিয়াগঞ্জ ষ্টেশনের অদুরে ঘটনাস্থল হওয়ায় ধীর গতিতে থাকা ট্রেন থামিয়ে দেন চালক।
এরপর এই বৃদ্ধকে জীবিত অবস্থায় ইঞ্জিনের তলা থেকে বেড় করে আনে ট্রাফিকে কর্ত্যরত পুলিশ কর্মীরা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় এই বৃদ্ধকে চিকিৎসার জন্য কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, কুলিক এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনে চাপা পড়া এই বৃদ্ধের নাম বিনয় ঢাকি (৬৭), বাড়ি কালিয়াগঞ্জের ধনকৈল বেলতলি এলাকায়।
মাধ্যমিক পরীক্ষার কারণে এদিন সিভিক ভল্যান্টিয়ার টিম সমেত সুকান্ত মোড় রেলগেটে যান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে ছিলেন ট্রাফিক বিভাগের এএসআই খাদিমুল ইসলাম। শ্রীমতি রেলসেতু পেড়িয়ে যখন কালিয়াগঞ্জ স্টেশনের দিকে এগিয়ে আসছিল কুলিক এক্সপ্রেস, হটাৎ সেই সময় এক বৃদ্ধকে রেললাইনের উপর উল্টে পড়ে যেতে দেখেন এই ট্রাফিক অফিসার। মৃত্যুর হাত থেকে এই বৃদ্ধকে বাঁচাতে চালকের উদ্দেশ্যে ট্রেন থামানোর ইশারা করে রেললাইন ধরে দৌড়ে বৃদ্ধের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন খাদিমুল। ট্রাফিক অফিসারের পেছনে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় সিভিক দিবাকর সাহা, প্রশান্ত ভৌমিক, যতন রায়, নবীন রায়, সন্তু কর্মকার এবং তাপস বর্মন। বৃদ্ধের রেললাইনে পড়ে যাবার ঘটনা চাক্ষুষ করে এবং পুলিশের ইশারা পেয়ে ট্রেন থামাতে ব্রেক কষেন চালক।
আর ও পড়ুন নন্দীগ্রাম দিবসে টুইটে ২০০৭-র ঘটনা স্মরণ করলেন মমতা
ট্রেন থামলেও রেললাইনে পড়ে যাওয়া বৃদ্ধের দেহ চলে যায় ইঞ্জিনের নিচে। সেই সময় সুকান্ত মোড় রেলগেটের দুপাশে আটকে থাকা বহু মানুষ বৃদ্ধের ট্রেনে চাপা পড়ার ঘটনা চাক্ষুষ করে ছুটে আসে। এই হইচই শুনে কালিয়াগঞ্জের ট্রাফিক ওসি সুপ্রিয় বসাক এবং এএসআই আশরাফ আলী ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। ঘটনাস্থলে আসে কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ। এসবের মাঝেই ট্রেন চালকের সহযোগিতায় ট্রাফিক অফিসার খাদিমুল ইসলামের নেতৃত্বে উপস্থিত সিভিক ভল্যান্টিয়াররা ইঞ্জিনের তলা থেকে জীবিত অবস্থায় বৃদ্ধকে টেনে হিঁচড়ে বের করে আনতে সফল হয়। এদিন চলন্ত ট্রেনের সামনে লাইনে পড়ে যাওয়া বৃদ্ধের প্রাণ রক্ষায় কালিয়াগঞ্জ ট্রাফিক বিভাগের এই মানবিক প্রয়াসকে কুর্ণিশ জানাচ্ছে সাধারণ মানুষ। বর্তমানে ওই বৃদ্ধ কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।