৮ ডিসেম্বর, আমাদের প্রায় সময় মাথা ধরে।আমরা মনে করি কাজের চাপে হয়ত মাথা ধরেছে বা কোনও চিন্তার কারণে। কিন্তু মাথাধরার নানান রকমভেদ আছে। যে মাথাধরাতে গা গোলায়, বমি হয় অথবা আলোর দিকে তাকাতে খুব অসুবিধা হয়, সেটি সামান্য মাথা ধরা নয়, তাকে মাইগ্রেন বলা হয়। তাই মাথা ধরলে বা তার সাথে শরীর খারাপ লাগলে ওটাকে সহজভাবে নেওয়া উচিত নয়। মাইগ্রেনে মাথা টন টন করে, অনেক সময় সেই টন টনে ব্যথাটা মাথার একদিকে হয়। মাইগ্রেন সাধারণত হঠাৎ করেই শুরু হয়। তবে সেটা কেউ কেউ আগে থেকেই টের পায় আবার কেউ কেউ পায় না।
মাইগ্রেন ছোট থেকে বড় সকলেরই দেখা দিতে পারে।তবে দেখা যায় মাইগ্রেন ছেলেদের থেকে মেয়েদের বেশী হয়।বংশ পরম্পরায় অনেক সময় এটি আসতে পারে।সাধারণ ভাবে দেখা যায় মাইগ্রেন শুরু হচ্ছে- মদ্যপানের পর, তীব্র আলো চোখে পড়লে, বিশেষ কোনও গন্ধ নাকে এলে, বিকট শব্দে, ধোঁয়ার গন্ধে, শারীরিক বা মানসিক উত্তেজনায়, ঘুমের ব্যাঘাতে।করোও করোও এটা বিশেষ বিশেষ খাবার খেলেও হতে পারে। যেমন- চকলেট, দুগ্ধজাত খাবার, যে সব খাবারে টাইরামাইন আছে, যেমন- লাল মদ, মেটে, ডুমুর ফল, ইত্যাদি।বাদাম, পেঁয়াজ এসব খেলেও অনেকসময় হতে পারে।
মাইগ্রেন আসার আগে অনেকগুলি সাময়িক সমস্যা দেখা দেয়, যেমন- ঝাপসা দেখা, চোখে ব্যথা হওয়া, চোখে নানা রকমের লাইন বা তারা ঘুরে বেড়াচ্ছে দেখা, সবার ক্ষেত্রে অবশ্য এটা ঘটে না।মস্তিষ্ক থেকেই এটা শুরু হয় পরে ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন স্নায়ু পথে ফলে রক্ত চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, শরীরচর্চার অভাব, গ্যাজেট নির্ভর জীবন, কম ঘুম, এসব আমাদের আধুনিক জীবনের অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এসব অভ্যাসের দরুন আমাদের জীবনে নেমে আসে গাঢ় অন্ধকার। তেমনই এক লাইফ স্টাইল ডিজিজ হল মাইগ্রেন।
মাইগ্রেন যেসমস্ত কারণে হতে পারে সেগুলি হল, যেমন- মেয়েদের শরীরে হরমোন সংক্রান্ত পরিবর্তন ঘটলে, হরমোনের ওষুধ খেলে, খুব উজ্জ্বল আলো বা সূর্যের আলোতে এলে, ঘুমের সময়ের বদল হলে, শারীরিক ক্লান্তি ঘটলে, আবহাওয়ার হঠাৎ পরিবর্তন হলে, খুব বেশি নুন জাতীয় খাবার খেলে, বা চিজ খেলে, অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় অথবা কফি বেশি পান করলে, কাজের চাপ থেকে হতে পারে আবার খুব তীব্র গন্ধ থেকেও হতে পারে।
আপনি যদি মাইগ্রেন থেকে মুক্ত হতে চান তাহলে প্রথমেই কোনো নেশা করার অভ্যাস থাকলে সেটি বন্ধ করুন।
কাজের ক্ষেত্রে বেশি চাপ নেবেন না, চিন্তা কম করুন, অত্যাধিক প্রত্যাশা রাখবেন না কোনও বিষয়ে।কাজের মধ্যেই বিরতি নিন, মন খারাপ থাকলে সেটা নিয়ে না ভেবে কোনো এমন কিছু দেখুন বা পড়ুন যা আপনার মন কে ভালো করে দেবে, আপনি চিন্তায় থাকলে আপনার প্রিয় খাবারটা খান কারণ অনেকসময় প্রিয় খাবার আপনাকে ফ্রেশ করতে পারে ও খুশি রাখতে পারে।আলো নিভিয়ে, পরিবেশ শান্ত রাখার চেষ্টা করতে পারেন। তীব্র গন্ধ এড়িয়ে চলুন, মোবাইল ফোন, কম্পিউটার থেকে মাঝেমাঝে দূরে যান, তাকেও রেস্ট দিন সাথে নিজের চোখকেও রেস্ট দিন। প্রয়োজনিয় ওষুধ সঙ্গে রাখুন সবসময়।পর্যাপ্ত জল সময় মতো পান করুন এবং স্বাস্থ্যকর খাবার সঙ্গে রাখুন।সারা দিনের খাদ্যে প্রোটিন, ফ্যাট ও সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখুন।