প্রয়াত ছেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে মরণোত্তর দেহ ও অঙ্গদানের অঙ্গীকার। বিগত ২০১৯ সালের ১২ই অক্টোবর মাত্র ২১ বছর বয়সে, দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হয় সোমশুভ্র অধিকারী (ডাকনাম চার্লি)। বুধবার দুপুরে মধ্য মোহনবাটিতে সোমশুভ্রের বাসভবনের সামনে পালিত হল সোমশুভ্রের নামাঙ্কিত স্ট্রিট লাইব্রেরীর প্রথম বর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠান।
উত্তরবঙ্গের প্রথম এই স্ট্রিট লাইব্রেরীর এই বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সোমশুভ্রের বাবা সুব্রত অধিকারী, মা মধুমিতা অধিকারী, রায়গঞ্জের বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ পি. কে. মন্ডল, শিক্ষক তথা সাহিত্যিক প্রিয়রঞ্জন পাল, শিক্ষক দীপাঞ্জন ঘটক সহ সোমশুভ্রের পরিবারের অন্যান্যরা। অন্যতম উদ্যোক্তা অভিষেক রায় বলেন, ইংরেজি অনার্স নিয়ে পড়াশোনা করা সোমশুভ্র পড়াশোনার পাশাপাশি নানাবিধ সামাজিক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত ছিল। নিজের বন্ধুদের কাছে সে চার্লি নামেই পরিচিত ছিল। হাসিখুশি ও পরোপকারী চার্লি রায়গঞ্জের কুইজ খেলার সাথে জড়িত ছিল ছোট বয়স থেকেই।
আরও পড়ুন- পেনশন না পাওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ দেখালেন পেনশন প্রাপকরা
কিন্তু ২০১৯ সালের ১২ই অক্টোবর জীবন যুদ্ধে সে পরাজিত হয়। তাঁকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে আমরা দাদা, বন্ধু, ভাইয়েরা মিলিতভাবে এই স্ট্রিট লাইব্রেরীর ভাবনা নিয়ে আসি। অভিষেক বাবু বলেন, তাঁর নামাঙ্কিত এই স্ট্রিট লাইব্রেরির আজ বর্ষপূর্তি। তাই বিগত এক বছরের নিরিখে সেরা পাঠক নির্বাচিত করা হয়। এদিন তাদেরকে তাদের পছন্দ মত বই উপহার হিসেবে তুলে দেওয়া হয়। এছাড়াও এদিন, সোমশুভ্রের বাবা ও মা মৃত্যু পরবর্তী দেহ ও অঙ্গদানের অঙ্গীকার পত্রে সাক্ষর করেন।
বুধবার দুপুরে এই স্ট্রিট লাইব্রেরির প্রথম বর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠানে বিগত ১ বছরের সেরা পাঠক হিসেবে সংবর্ধিত করা হয়, সোমা দেবশর্মা ও অরিজিৎ আচার্যাকে। বই পড়ে যে পুরস্কৃত হওয়া যায়, সেবিষয়টি শুনে দারুণ খুশি ২ পাঠক। তাদের মধ্যে সোমা বলেন, মায়ের কাছ থেকে বই পড়ার অভ্যাস পেয়েছি। লকডাউনে প্রচুর বই পড়েছে বলে জানান রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের স্নাতক সোমা। প্রিয় লেখক বিভূতি ভূষন বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন সংবর্ধিত হয়ে খুশি দুজনেই। এছাড়াও এদিন ওই একই মঞ্চে উপস্থিত সকলের সামনে মৃত্যু পরবর্তী দেহ ও অঙ্গদানের অঙ্গীকারও করেন প্রয়াত সোমশুভ্রের বাবা সুব্রত অধিকারী এবং মা মধুমিতা অধিকারী। এরপর তারা বলেন, আমাদের বহুদিনের ইচ্ছে ছিল মৃত্যু পরবর্তী দেহ ও অঙ্গদানের অঙ্গীকার করব। তাই আজকের দিন টিকেই বেছে নিয়েছি।