ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়ারা কি নিজের দেশে মেডিক্যাল কোর্স কমপ্লিট করতে পারবে? ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের কারণে দেশটি থেকে ১২ লাখ মানুষ পালিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। শুক্রবার জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার জানিয়েছেন, এরমধ্যে অর্ধেক মানুষ শরণার্থী হিসেবে প্রতিবেশী পোল্যান্ডে আশ্রয় নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেন থেকে উদ্ধার করে আনা হয়েছে বহু ভারতীয় পড়ুয়াকে।
এখনও অনেকেই আটকে আছেন। ভারত থেকে ইউক্রেনে যাওয়া এই ছাত্রছাত্রীদের বেশিরভাগই ডাক্তারি পড়ছেন। কোর্সের মাঝপথে ফিরে আসতে হওয়ায় স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, এই পড়ুয়ারা নিজের দেশের মেডিক্যাল কলেজগুলোয় কোর্স কমপ্লিট করতে পারবে কি? পরিস্থিতি বলছে, এত সোজা নয়, বিষয়টায় অনেক জটিলতা রয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভিকে সিংয়ের ঘোষণা কিছুটা আশার সঞ্চার করেছে। তিনি জানিয়েছেন, উদ্ধার করা ছাত্রদের নিতে রাজি পোল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।
কিন্তু ইউক্রেনে যত সংখ্যক ভারতীয় পড়াশোনা করছিল, তাদের সবাইকে কি ভর্তি নেওয়া সম্ভব? নিশ্চয়ই না। আর ভারতের মেডিক্যাল শিক্ষায় এত পরিকাঠামো নেই যে সবাইকে জায়গা দিতে পারবে। ভিনিতসিয়া ন্যাশনাল মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির ছাত্রী শারিয়া শর্মা বলছেন, ‘অনেকেই পোল্যান্ড, আর্মেনিয়া এবং হাঙ্গেরি যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। ওই দেশগুলো শরণার্থীদের জন্য কর্মসূচি নিয়েছে যাতে কোর্স সম্পূর্ণ করতে পারে এই পড়ুয়ারা। আমার বিশ্ববিদ্যালয় এখন বন্ধ, আশা করি বোমার আঘাতে ধ্বংস হয়ে যাবে না সেটা।’
শারিয়া এও বললেন, ‘আমার মনে হয় না ভারত সরকার ২০ হাজার পড়ুয়াকে জায়গা দিতে পারবে। হলে তো ভালই। যুদ্ধের জন্য আমাদের পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমার এক বন্ধু আছে যে লুগানস্ক মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে পড়ে, যেটা বোমা বিস্ফোরণে ধ্বংস হয়ে গেছে। তার আর কোনও অস্তিত্ব নেই।’ ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিল আজ ঘোষণা করেছে, ইউক্রেনে গ্র্যাজুয়েট হওয়া পড়ুয়ারা ভারতে ইন্টার্নশিপ করতে পারবেন এবং তাঁরা স্টাইপেন্ড পাবেন। কিন্তু যাদের ডিগ্রি কোর্স এখনও সম্পূর্ণ হয়নি, তাদের কী হবে কিছুই বলা হয়নি।
আর ও পড়ুন মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকের রক্ত সংকট মিটছে না
আসরে নেমেছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে তারা দরবার করেছেন যাতে দেশের সরকারি এবং বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলোয় ২-৫ শতাংশ আসন বাড়ানো যায়। কিন্তু বলা যত সহজ কাজে করে দেখানো ততটাই কঠিন। এর জন্য এনএমসি আইনে সংশোধন আনতে হবে। সমস্ত প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল বলে জানিয়েছেন আইএমএ-এরই সাধারণ সচিব ড. জয়েশ লেলে।