নয়াদিল্লি: ফের একবার নাগরিকত্ব বিতর্কে অস্বস্তিতে পড়লেন কংগ্রেস নেতা ও লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। তাঁর বিরুদ্ধে ‘ব্রিটিশ নাগরিকত্ব’-সংক্রান্ত পুরনো মামলাটি নতুন করে খোলার আবেদন জানালেন বিজেপি নেতা ভিগ্নেশ শিশির। এলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনউ বেঞ্চে তিনি জমা দিয়েছেন একটি রিভিউ পিটিশন, যেখানে নতুন তথ্যপ্রমাণের উল্লেখ করা হয়েছে।
ভিগ্নেশ শিশিরের দাবি, তাঁর হাতে এসেছে রাহুল গান্ধীর লন্ডন, ভিয়েতনাম এবং উজবেকিস্তানে কর্মকাণ্ড সংক্রান্ত বেশ কিছু ভিডিও ও নথি, যা আগে আদালতের সামনে ছিল না। তিনি বলেন, “এই নতুন তথ্য সামনে আসায় মামলাটি পুনরায় চালু করার প্রয়োজন রয়েছে।” পিটিশনের সঙ্গে সেইসব প্রমাণও আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, এর আগে রাহুল গান্ধীর নাগরিকত্ব নিয়ে একাধিকবার অভিযোগ উঠেছে। বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী অভিযোগ করেছিলেন, ২০০৫–০৬ সালে ব্রিটেনের একটি সংস্থা ‘Backops Limited’-এর বার্ষিক রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় রাহুল নিজেকে ব্রিটিশ নাগরিক হিসেবে উল্লেখ করেন। এছাড়াও, কিছু কোম্পানির নথিতেও রাহুলকে ইংল্যান্ডের নাগরিক বলে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে দাবি তাঁর।
ভিগ্নেশ শিশির আগেও কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই দ্বারা তদন্তের দাবি করেছিলেন এবং বলেন, “ভারতের আইনে দ্বৈত নাগরিকত্ব বেআইনি। কেন্দ্রের উচিত এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা।”
তবে আদালতে দীর্ঘদিন শুনানি চলার পরও কেন্দ্রের পক্ষ থেকে কোনও স্পষ্ট অবস্থান না জানানোয় মামলাটি শেষপর্যন্ত খারিজ করে দেন বিচারপতিরা। যদিও তাঁরা মন্তব্য করেন, আবেদনকারী চাইলে আইনের অন্য পথ অবলম্বন করতে পারেন। সেই ভিত্তিতেই শিশির এবার রিভিউ পিটিশন দাখিল করেন।
এখনও পর্যন্ত এই রিভিউ আবেদনটি আদালতের রেজিস্ট্রার শাখা শুনানির জন্য গৃহীত করেনি। যদি গৃহীত হয়, তখনই মামলাটি পুনরায় শুনানির জন্য বিবেচনা করা হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বিতর্ক এমন এক সময় সামনে এল, যখন সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু হতে চলেছে এবং বিরোধী ঐক্যের প্রশ্নে রাহুল গান্ধীর ভূমিকা ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। এই পরিস্থিতিতে নাগরিকত্ব বিতর্ক ফের চাঙ্গা হওয়া কংগ্রেসের পক্ষে রাজনৈতিকভাবে অস্বস্তিকর বলে মনে করা হচ্ছে।
