রাজ্য – নিউ আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগের পর এবার কড়া পদক্ষেপ নিল রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন। সোমবার জারি করা নতুন নির্দেশিকায় স্পষ্ট জানানো হয়েছে, কোনো রোগীর চিকিৎসার বিল বাকি থাকলেও মৃতদেহ আটকে রাখা যাবে না। এই নির্দেশিকা রাজ্যের সমস্ত বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমের জন্য প্রযোজ্য।
ঘটনার সূত্রপাত নিউ আলিপুরের একটি হাসপাতাল থেকে। মৃতের পরিবারের অভিযোগ ছিল, বিমা সংস্থা চিকিৎসার বিল মেটাতে দেরি করছে, এই অজুহাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রায় ১৫ ঘণ্টা ধরে মৃতদেহ আটকে রেখেছিল। এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরপরই রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন সক্রিয় হয়ে সোমবার কড়া নির্দেশিকা জারি করে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, রোগীর মৃত্যুর পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দিতে হবে। যদি কোনো কারণে বিলম্ব হয়, তবে তার সুস্পষ্ট কারণ লিখিতভাবে নথিভুক্ত করতে হবে। কেবলমাত্র যদি মৃতের পরিবারের কোনো সদস্য রাজ্যের বাইরে থাকেন এবং সময় চেয়ে অনুরোধ করেন, তবেই মৃতদেহ মর্গে রাখা যেতে পারে।
এছাড়া, কমিশনের নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, যদি কোনো বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোম বকেয়া বিলের কারণে মৃতদেহ আটকে রাখে, তবে সেই বিলের অর্থ আদায়ের দায়িত্ব নেবে কমিশন নিজেই। কোনোভাবেই মৃতদেহ আটকে রেখে পরিবারকে হয়রানি করা যাবে না। এই নিয়ম লঙ্ঘন করলে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল বা নার্সিংহোমের লাইসেন্স বাতিল হতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের চেয়ারম্যান ও প্রাক্তন বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “এ ধরনের অমানবিক ঘটনা কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।” তিনি আরও জানান, নিউ আলিপুরের ঘটনার পরপরই এই কড়া নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।
এই পদক্ষেপের ফলে আর্থিক বকেয়ার কারণে মৃতদেহ আটকে রেখে পরিবারের উপর চাপ সৃষ্টি করার মতো অমানবিক প্রথা বন্ধ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। রোগীর পরিবারের প্রতি সহানুভূতি ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিশ্চিত করতেই কমিশনের এই উদ্যোগ।
